
ছবি: সংগৃহীত।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে মাওলানা ভাসানী অন্যতম জাতির পিতা। তিনি শুধু একজন রাজনীতিবিদই ছিলেন না, ছিলেন গণমানুষের নেতা ও রাজনৈতিক দার্শনিক।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুর দেড়টায় টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে জুলাই পদযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা মাওলানা ভাসানীকে বাংলাদেশের অন্যতম ফাউন্ডিং ফাদার হিসেবে দেখি। তিনি এমন একজন রাজনৈতিক নেতা, যিনি ১৯৭১ সালের আগে স্পষ্টভাবে পাকিস্তানি আধিপত্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন এবং কাগমারী সম্মেলনের মাধ্যমে পাকিস্তানের বিদায় ঘোষণা করেছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতার পর ভাসানী বলেছিলেন-আমরা পিন্ডির জিঞ্জির ভেঙেছি দিল্লির গোলামী করতে নয়। এ বক্তব্য আজও প্রাসঙ্গিক। ভাসানী ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা, পাকিস্তানি আধিপত্য এবং ভারতীয় আধিপত্য-তিনটির বিরুদ্ধেই সংগ্রাম করেছেন।”
মাওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক জীবনের সূচনার কথা উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, “ভাসানীর রাজনীতি শুরু হয় আসামে। সেখানে বাঙালি মুসলমান কৃষকদের ভূমির অধিকারের জন্য তিনি লড়াই করেছিলেন। আজও সেই আন্দোলনের প্রেক্ষাপট আসামে বিদ্যমান, যেখানে বাঙালিদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানিয়ে রাখা হয়েছে।”
আওয়ামী লীগের ইতিহাস প্রসঙ্গে এনসিপি নেতা বলেন, “ভাসানীরা না থাকলে শেখ মুজিব তৈরি হতে পারতেন না। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম কারিগর ছিলেন মাওলানা ভাসানী। অথচ ইতিহাসে তাকে সেভাবে স্মরণ করা হয় না। গত ৫৪ বছর ধরে কেবল একজন নেতাকেই জাতির পিতা হিসেবে পূজা করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “মাওলানা ভাসানী আমাদের ফারাক্কা লং মার্চে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। নদীর পানির অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে তার ভূমিকা অবিস্মরণীয়।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির লক্ষ্য ও আদর্শ নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা মাওলানা ভাসানীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি নতুন সমাজ, নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। ভাসানীর মতো আমরাও কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করতে চাই। ভাসানী শুধু রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন আমাদের প্রাণ, প্রকৃতি ও সমাজ নিয়ে ভাবা একজন রাজনৈতিক দার্শনিক।”
বক্তব্যের শেষাংশে নাহিদ ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের জাতির পিতা একজন নন, অনেকেই। তাদের অন্যতম হলেন মাওলানা ভাসানী।”
মিরাজ খান