ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৬ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

লঞ্চে অস্বাস্থ্যকর খাবার, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

হাসান মাহমুদ শুভ, ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজীপুর

প্রকাশিত: ০০:২৯, ২৬ মে ২০২৫

লঞ্চে অস্বাস্থ্যকর খাবার, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

নদীমাতৃক বাংলাদেশের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম নৌপথ। ক্ষেত্রবিশেষ যাত্রীরা বাস, ট্রেনের  তুলনায় লঞ্চ যাতায়াতে একটু বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এই স্বাচ্ছন্দ্যবোধের পাশাপাশি রয়েছে বেশ কিছু অনিয়ম ও জটিলতা।
কম দূরত্বের যাত্রা পথে অনিয়ম ও জটিলতা কম হলেও বরিশাল, ভোলার লঞ্চ যাত্রীদের পোহাতে হয় ভোগান্তি।

দীর্ঘ সময়ের যাত্রায় যাত্রীদের লঞ্চের ভিতরের দোকান ও ক্যান্টিন থেকে খাবার গ্রহণ করতে হয়। এসময় ঘটে বিপত্তি। বেশিরভাগ লঞ্চের ক্যান্টিনে পরিবেশন করা হয় অস্বাস্থ্যকর খাবার। যার ফলস্বরূপ হয় ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েড, আলসার, হৃদরোগ, হেপাটাইটিসসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগ। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ যাত্রীদের মাঝ নদীতে পড়তে হয় মহা ঝামেলায়। ক্যান্টিনের পাশাপাশি দোকানগুলোতে থাকে মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার! আমি নিজেই লঞ্চের মধ্যের অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি। লঞ্চের মধ্যে দোকান থেকে বিস্কুট নিয়ে কেবিনে এসে দেখি বিস্কুটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে ৬ মাস আগে! এভাবে হরহামেশাই বিক্রি হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর ও মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার।

সাধারণ যাত্রীরা প্রতিবাদ করতে গেলে পড়তে হয় সিন্ডিকেটের রোষানলে। অথচ নাগরিকের পাঁচটি মৌলিক অধিকারের একটি হলো খাদ্যের অধিকার। নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা এর মধ্যেই পড়ে। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য জরুরি হলেও তার চেয়ে বেশি জরুরি নিরাপদ খাদ্য, কেননা খাদ্য ও স্বাস্থ্য একটি আরেকটির পরিপূরক। টেকসই জীবন ও সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প নেই। অনিরাপদ খাদ্য স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম কারণ। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ৬০ কোটি মানুষ দূষিত খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়। প্রতি বছর মারা যায় প্রায় চার লাখ ৪২ হাজার মানুষ। এছাড়া পাঁচ বছরের চেয়ে কম বয়সি শিশুদের ৪৩ শতাংশ অনিরাপদ খাবারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়, যার মধ্যে প্রতিবছর মারা যায় এক লাখ ২৫ হাজার শিশু। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও নিয়মিত মনিটরিং এবং যাত্রীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত বলে মনে করি।

মুমু

×