ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

ইন্টারনেটের জালে সামাজিক বন্ধন বিপন্ন

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ৯ মে ২০২৫

ইন্টারনেটের জালে সামাজিক বন্ধন বিপন্ন

বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। ইন্টারনেট আমাদের জীবনে এনেছে বিপুল পরিবর্তন তা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। জ্ঞান, যোগাযোগ, বিনোদন সবকিছু এখন হাতের মুঠোয়। তবে এই প্রযুক্তির দিক যে সবই উজ্জ্বল তা নয়। বরং দিনে দিনে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতিরিক্ত নির্ভরতা আমাদের বাস্তব সামাজিক বন্ধনকে ভেঙে দিচ্ছে। যেখানে এক সময় পারিবারিক আড্ডা, পাড়ার চায়ের দোকানে গল্প, বন্ধুদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে মনের কথা শেয়ার করাই ছিল সামাজিকতা, সেখানে এখন মেসেঞ্জারের ‘ভয়েস নোট’ বা ইমোজির মাধ্যমেই অনুভূতি প্রকাশ পাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, একই ছাদের নিচে বসবাস করেও পরিবারের সদস্যরা নিজেদের মোবাইল স্ক্রিনে এতটাই ডুবে থাকে যে একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানোর প্রয়োজনটাই যেন অনুভব করে না।বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট আসক্তি এক ধরনের সামাজিক বৈকল্য তৈরি করছে। ভার্চুয়াল বন্ধুতা বাস্তব সম্পর্ককে ছাপিয়ে যাচ্ছে। মানুষ এখন ‘অনলাইন’ থাকলেও ‘প্রকৃত বন্ধনে’ নেই। এ থেকে জন্ম নিচ্ছে একাকিত্ব, মানসিক অবসাদ এবং সম্পর্কের ভঙ্গুরতা। এমনকি শিশুদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে বাস্তব খেলাধুলার প্রতি অনীহা, যা তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। অতএব ইন্টারনেটের ইতিবাচক দিকগুলো গ্রহণের পাশাপাশি এর অপব্যবহার থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। পরিবার, সমাজ এবং শিক্ষাব্যবস্থায় ডিজিটাল সচেতনতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। ভার্চুয়াল জগৎ নয়, বাস্তব জগতের সম্পর্ক ও সংযোগই আমাদের প্রকৃত সামাজিক শক্তি এই উপলব্ধির সময় এখনই।

আনিকা ইসলাম
কুষ্টিয়া

প্যানেল

×