ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

নক্ষত্র গিলে খেল কৃষ্ণগহ্বর, নাসার ক্যামেরায় ধরা পড়ল দৃশ্য

প্রকাশিত: ০২:৪৫, ১০ মে ২০২৫

নক্ষত্র গিলে খেল কৃষ্ণগহ্বর, নাসার ক্যামেরায় ধরা পড়ল দৃশ্য

ছবি: সংগৃহীত

নাসা সম্প্রতি একটি মহাকাশীয় বিস্ময়কর ঘটনার ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা গেছে একটি কৃষ্ণগহ্বর (Black Hole) কীভাবে একটি তারাকে গ্রাস করেছে এবং এর ফলে মহাশূন্যে সৃষ্ট হয়েছে একটি বিশাল শক্তির বিস্ফোরণ।

ঘটনাটি ঘটেছিল প্রায় ৬০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের এক ছায়াপথে। তবে সেই সময়ের বিস্ফোরণের বিকিরণ এখন আমাদের কাছে পৌঁছেছে, যা হাবল স্পেস টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে উজ্জ্বল একটি বিন্দুর মতো।

নাসা জানিয়েছে, এই ঘটনা এক ধরনের টাইডাল ডিসরাপশন ইভেন্ট (TDE) — যা ঘটে যখন একটি নক্ষত্র অতিরিক্ত কাছে চলে আসে একটি কৃষ্ণগহ্বরের, এবং তার প্রবল মহাকর্ষের টানে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।

নাসা টুইটারে প্রকাশিত ছবির ক্যাপশনে লিখেছে:
"৬০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূর থেকে এক কৃষ্ণগহ্বর নিজের অস্তিত্ব প্রকাশ করল যখন সে একটি নক্ষত্রকে ছিন্নভিন্ন করে গিলে ফেলল। এর ফলে সৃষ্ট বিকিরণ হাবল স্পেস টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে একটি উজ্জ্বল বিন্দুর মতো।"

এই আবিষ্কার নিয়ে গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্কলে ক্যাম্পাসের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইউহান ইয়াও বলেন,
"AT2024tvd" নামের এই ঘটনা হচ্ছে প্রথম কোনো অফসেট টাইডাল ডিসরাপশন ইভেন্ট, যা দৃশ্যমান আলোকমন্ডল স্কাই সার্ভে'র মাধ্যমে ধরা পড়েছে। এটি ভবিষ্যতে 'ভ্রাম্যমাণ কৃষ্ণগহ্বর' শনাক্তের ক্ষেত্রে নতুন পথ খুলে দিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, "এই ধরনের ঘটনা নিয়ে তেমন গবেষণা হয়নি। আশা করছি, আমাদের এই আবিষ্কার ভবিষ্যতের গবেষণাকে অনুপ্রাণিত করবে।"

টাইডাল ডিসরাপশন ইভেন্ট কীভাবে ঘটে?
যখন একটি তারা কৃষ্ণগহ্বরের অত্যন্ত নিকটে চলে আসে, তখন কৃষ্ণগহ্বরের অতিপ্রবল মহাকর্ষ তাকে "স্প্যাঘেটিফিকেশন" নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ করে টেনে ছিঁড়ে ফেলে। এই ছিন্নবিচ্ছিন্ন বস্তু কৃষ্ণগহ্বরকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে এবং অতিরিক্ত তাপ উৎপন্ন করে। তখন সেই আলোক ও শক্তির বিকিরণ আমাদের টেলিস্কোপে দৃশ্যমান হয়।

এই গবেষণা দলের একজন সদস্য ও বার্কলেতে ইউসি’র সহযোগী অধ্যাপক রায়ান চর্নক বলেন,
"এই ধরনের ঘটনা আমাদের অদৃশ্য থাকা বিশাল কৃষ্ণগহ্বরগুলোর অস্তিত্ব সম্পর্কে জানার সুযোগ দেয়।"

এই অনন্য আবিষ্কার বিশ্বজুড়ে জ্যোতির্বিদ ও গবেষকদের আগ্রহ বাড়িয়ে তুলেছে।

এসএফ

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

×