ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

ভারতের স্থায়ী নাগরিক হতে চাওয়া বাংলাদেশের নায়ক-নায়িকাদের তালিকা ফাঁস!

প্রকাশিত: ১৪:২৪, ৯ মে ২০২৫

ভারতের স্থায়ী নাগরিক হতে চাওয়া বাংলাদেশের নায়ক-নায়িকাদের তালিকা ফাঁস!

সাম্প্রতিক সময়ে কলকাতার কাজ করা প্রসঙ্গে দেশের কয়েকজন শিল্পীকে নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে সমালোচনা। এর কারণ, কলকাতায় তারা আগে কাজ করলেও, বর্তমানে সেখানেই স্থায়ী আবাস গড়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন।

গেল বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে এসব শিল্পী সমালোচনার মুখে পড়েছেন। আওয়ামী ঘনিষ্ঠ শিল্পী হওয়ায় ইন্ডাস্ট্রিতেও কাজের ব্যস্ততা নেই তাদের। বলা যায়, নিজেদের কর্মফল তাদের কোণঠাসা করে দিয়েছে। 

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময় থেকেই তাদের অনেকেই আড়ালে রয়েছেন। সুযোগ সন্ধানী এসব শিল্পী পেটের তাগিদে কাজের জন্য কলকাতাকেই এখন নিরাপদ ভাবছেন। তাই কাজের সুযোগের পাশাপাশি সেখানে স্থায়ী আবাস গড়ার চিন্তাও করছেন তারা। তাদের মধ্যে রয়েছেন চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ, চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া, অভিনেত্রী ও মডেল সোহানা সাবা।   

গত বছর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে আড়ালে চলে যান আরিফিন শুভ। ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে এক টাকা পারিশ্রমিকে অভিনয় করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিলেন তিনি। অবশ্য সেজন্য পতিত শেখ হাসিনা খুশী হয়ে পুরষ্কার হিসাবে পূর্বাচলে প্লটও উপহার দিয়েছিলেন। আওয়ামী সুবিধাভোগী এ নায়ক তাই ছাত্র আন্দোলনেও ছিলেন নীরব ভূমিকায়। বরং ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করতে সেসময় প্রকাশ্যে এনেছিলেন নিজের বিবাহ বিচ্ছেদের খবর। ৫ আগস্টের পর থেকে কোনো কাজ তো দুরের কথা, কখনো মিডিয়ার সামনেও আসেননি এ অভিনেতা। 

তবে আন্দোলন পরবর্তী গোপনে ভারত গিয়ে একটি ওয়েব সিরিজের শুটিং করেন তিনি। কলকাতায় সৌমিক সেনের পরিচালনায় ‘জ্যাজ সিটি’ নামের সিরিজটির শুটিং করতে গিয়েই সেখানে স্থায়ী হবার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। বর্তমানে এ অভিনেতা কলকাতায় রয়েছেন। সেখানের একটি সংবাদ মাধ্যমে তিনি নিজেই স্থায়ী হবার বিষয়টি স্বীকার করেন। 

এসময়  নিজেকে একজন অরাজনৈতিক মানুষ হিসাবে দাবি করে শুভ বলেন, ‘সচেতনভাবেই আমি একজন অরাজনৈতিক মানুষ। অভিনয় ছাড়া কিছু করি না। কোনো ব্যবসা নেই, ব্যাকআপ নেই। যদি সত্যি সত্যি সমস্যায় পড়তাম, তাহলে কলকাতার বসে সাক্ষাৎকার দিতে পারতাম না।’ এদিকে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে এ অভিনেতার  ‘নীলচক্র’, ‘নূর’, ‘ঠিকানা বাংলাদেশ’, ‘লহু’ নামের সিনেমাগুলো। 

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই দলটির সমর্থক শিল্পীরা চাপের মধ্যে রয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম আরও এক অভিনেত্রী সোহানা সাবা। তিনি আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী। দলের হয়ে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, বহুল সমাালোচিত ‘আলো আসবেই’ নামের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্য ছিলেন তিনি। ছাত্র আন্দোলন দমাতে আওয়ামী সুবিধাভোগি শিল্পীদের নিয়েই ভার্চুয়াল এ গ্রুপটি খোলা হয়েছিল। যেখানে ছাত্রদের গায়ে গরম পানি ঢেলে দেয়ার মত ভয়াবহ পরিকল্পনাও করা হয়। পট পরিবর্তনের পর এ অভিনেত্রীও রয়েছেন বিপাকে। এরইমধ্যে তার নামে হয়েছে হত্যা চেষ্টার মামলা। 

তবে এখনোও আড়ালো থাকা এ শিল্পী সামাজিক মাধ্যমে সরব। তিনিও সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন দেশ ছাড়ার। স্থায়ী হতে চাচ্ছেন কলকাতায়। সেখানেই কাজের সুযোগও খুঁজছেন তিনি। কলকাতার নির্মাতাদের দৃষ্টি কাড়তে তাদের প্রশংসা করে কিছুদিন আগেই গণমাধ্যমে সাবা জানান, তিনি কলকাতার সিনেমার অন্ধ ভক্ত। সেখানে কাজের সুযোগ চান। কাজ পেলে সেখানেই স্থায়ী হবেন। 

অন্যদিকে ঢাকার চেয়ে কলকাতা ইন্ডাস্ট্রিতেই বেশি ব্যস্ত নুসরাত ফারিয়া। এ অভিনেত্রীও ছাত্রআন্দোলন পরবর্তী সময় থেকে বেশ চাপে রয়েছেন। সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ‘মুজিব’ সিনেমার শেখ হাসিনার চরিত্রে রূপদানকারী এ অভিনেত্রীকে। ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন তিনি দেশ ত্যাগ করেন। আন্দোলনকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করতে বিদেশে বসে সামাজিক মাধ্যমে উত্তাপ ছড়িয়েছিলেন তার স্বল্পবসনা ছবি দিয়ে। দলের সুবিধা ভোগ করা এ শিল্পীও গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে গোপনে দেশে ফেরেন। এরপর প্রায় কয়েকমাস ছিলেন ঘরবন্দী ও মিডিয়ার আড়ালে। তবে গত ঈদুল ফিতরে তার অভিনীত একটি সিনেমা দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলেও, সমালোচিত এ নায়িকার কারণে সে সিনেমার কপালেও জোটে ফ্লপ তকমা। 

এদিকে আর কোনো কাজেও তিনি যুক্ত হতে পারছেন না। স্বাভাবিকভাবেই তার নজরও এখন কলকাতার দিকেই। কাজের ব্যস্ততা বাড়লে সেখানেই হতে পারেন স্থায়ী। এক সাক্ষাৎকারে দেশীয় নির্মাতার দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে জানান, দেশের নির্মাতারা তাকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারেননি। সে তুলনায় কলকাতার নির্মাতাদের এগিয়ে রেখেছেন এ অভিনেত্রী।

ফুয়াদ

×