
ছবি: সংগৃহীত
জুলাই আন্দোলনের পর আমাদের মাঝে বিভেদ বা ডিভিশন কেন হলো: আমাদের মনে আছে রংপুরে যেদিন আবু সাঈদ মারা যায় ওই একই দিনে চট্টগ্রামে ছাত্রদলের একজন নেতা ওয়াসিম মারা গেলেন। এতদিন আমরা যারা ইতিহাসের চর্চা করলাম আমরা ক‘জন সেই ওয়াসিমের কথা মনে রেখেছি। কখনো কি তার নামটাও এনেছি। এমনকি গত কয়েকদিন আগে পহেলা বৈশাখের সরকারিভাবে যে স্লাইড প্রদর্শনী হলো সেখানেও তাকে বাদ দেওয়া হলো। আপনি একজন শহীদ কে ট্রিট করছেন তার পলিটিক্যাল আইডেন্টিটি দিয়ে। যখন আপনি একজন শহীদকে তার রাজনৈতিক পরিচয়ে বিভক্ত করবেন, তার স্থান উঁচু করবেন অথবা তাকে নিচে নামাবেন, তখন তার যারা অনুসারী আছে তারা আপনাকে ভালো চোখে দেখবে না।
জুলাই আন্দোলনের পর আমাদের মাঝে বিভেদ কেন হলো বিষয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশন টকশোতে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি শরিফুজ্জামান শরীফ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আসলে আমাদের বিভাজনের জায়গাটা প্রত্যাশিত ছিল না কিন্তু আমাদের এখানে, আমরা বহুভাগে বিভক্ত। আপনি সোশ্যাল মিডিয়াতে আজ থেকে দশ মাস আগে যে ধরনের উন্মাদনা দেখেছেন, আমরা আমাদের আচরণের মাঝে কি কোন পরিবর্তন করেছি! আমাদের পরিবর্তনটা সোশ্যাল মিডিয়া দেখলেই বুঝতে পারবেন। আমরা রাষ্ট্রীয় পরিবর্তন চাই রাজনৈতিক দলের চরিত্র পরিবর্তন চাই কিন্তু নিজেদের পরিবর্তন চাই না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারবে না, এমনটা তো আমরা চাইনি। এই পরিবর্তন তো সেই পরিবর্তন ছিল না। ইতিহাস রচনা করে প্রান্তিক, গরিব মানুষ কিন্তু ইতিহাস লেখে ধনী মানুষ। সুতরাং ধনীদের হাতে যেহেতু কলম থাকে তারা তাদের মত করে ইতিহাস রচনা করে। আপনি আমাদের ইতিহাসের মধ্যে কোথাও পাবেন না প্রেসক্লাবের সামনে যে রিকশাওয়ালা রিকশায় দাঁড়িয়ে স্যালুট দিয়ে ভাইরাল হয়েছিলো তাকে ইতিহাসে আমরা জায়গা দিয়েছি? আমাদের ইতিহাসে যে মা তার এক বছর বয়সী শিশু কাঁধের উপর ঘুমন্ত রেখে একটা পানির বোতল নিয়ে শহীদ মিনারে গিয়েছিল ওই মাকে আমরা এখানে স্বীকৃতি দেইনি। আমার কাছে মনে হয় আমরা পুরো ইতিহাসটা বা পুরো ঘটনাটা আমার হাত থেকেই আমার মত করে তৈরি করেছি।’
আন্দোলনে অনেকগুলো টেকনিক থাকে, কৌশল থাকে, সেটিকে প্রয়োগ করার পাশাপাশি আন্দোলনে যার যতটুকু ভূমিক তাকে ততটুকু স্বীকৃতি দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
আবুবকর