একবার যদি আপনি অরণ্যে ঢুকে পড়েন যদি সিংহের মুখ থেকে বাঁচেন তবে বাঘের মুখে পড়বেন, যদি বাঘের মুখে থেকে কোন রকমের বেঁচে যান আপনি নেকরের মুখে পড়বেন, যদি সেখান থেকে কোন রকমে বেঁচে যান আপনি অজগর কিন্তু পাইথনের সামনে পড়বেন কিংবা রাসেল ভাইপার এরপর বিচ্ছু পোকামাকড়, বিষাক্ত পিঁপড়ে রয়েছে, খুব নিরাপদ ভেবে কোন উদ্ভিদের কাছে আশ্রয় নিতে গেলেও কার্নিভোরাস আপনাকে ছাড়বে না।
এরপরেও যদি সকল প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে আপনি টিকে যান দেখবেন আপনার মধ্যেও এক ধরনের বন্যতা জন্ম নিয়েছে। এরপর যখনই আপনি কোন প্রতিকূলতায় পড়বেন আপনি যতক্ষণ লড়াই করতে পারবেন আপনি ততক্ষণ টিকে থাকবেন।
এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে ফিরতে হবে সভ্যতায়। কিন্তু সভ্যতায় এসে যদি আপনি বন্য আচরণ করেন তাহলে সভ্যতাও বিনষ্ট হবে।
শৈশব থেকেই আমরা একটা ধমকের মধ্যে বড় হয়েছি। পরিবার, সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ রাষ্ট্র প্রতিটা স্তরে যেখানে গেছি সেখানেই আমাদের উপরে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে শক্তির বিপরীতে যাদের সামর্থ্য কম আমরা সেটাই মেনে নিয়েছি। যেটাকে রাজনৈতিক ভাষায় বলে স্বৈরতন্ত্র ।
এই স্বৈরতন্ত্রের মধ্যে থাকতে থাকতে আমাদের প্রতিটা মানুষের ভেতরেই এক ধরনের স্বৈরাচারী মনোভাব জন্ম নিয়েছে এবং আমারা প্রত্যেকেই আমাদের যেখানে সামর্থ্য আছে সেখানে আমরা শক্তি প্রয়োগ করি। সামর্থ্যের বিপরীতে শক্তি মেনে নিতে নিতে আমরা প্রতিটা মানুষ দাশে পরিণত হয়েছি।
এবং দাসত্ব মেনে নিতে নিতে আমরা হারিয়েছি আমাদের চিন্তার সকিয়তা, আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, আমাদের আত্মপরিচয়, সর্বশেষ আত্মমর্যাদা বোধ। যে কারণে একজনের বিপরীতে দুইজন দেখলেই আমরা যে কোন অন্যায়কে মেনে নিতে কুণ্ঠা বোধ করি না। এর থেকে মুক্তির উপায়
১। শিক্ষা ২। মুক্তচিন্তা ৩। আত্মনিয়ন্ত্রণ ৪। নিজেকে নিজের চেনা, পার্থক্যটা উপলব্ধি করা আমি কি নিজের চিন্তায় নিয়ন্ত্রিত হচ্ছি, নাকি কেউ আমাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এটা বোঝার পরে আত্মশুদ্ধি করা এবং নিবেদিত প্রাণে প্রার্থনা করা।
তাই অপরকে উপর দায় না চাপিয়ে আগে নিজেকে নিজের চিনতে হবে। ভালো কিছু প্রত্যাশা করলে আগে নিজেকে সংশোধন করতে হবে। অথবা ভালোর মুখোশ পরে আপনি সবাইকে প্রতারিত করবেন। মুখোশের আড়ালে হয়তো আপনি দুনিয়াকে জয় করে নিলেন। সেটা সম্ভব, কিন্তু আপনার আখিরাতের কি হবে?
বরিশাল থেকে