বাংলাদেশ-জাপানের উন্নয়ন
(গতকালের পর)
ফুকুসাকি শহরের একটি বিশেষ স্থানে নিয়ে গেলেন। যেটি আসলে জাপানের কুনিও ইয়ানাগিদা নামক একজন লোকসাহিত্যিক-এথনোগ্রাফারের স্মৃতিবিজড়িত এলাকা। সেখানে উঁচুতে উঠলে দেখা যায় সুবিস্তৃত গ্রাম, যেখানে নদী, ধানখেত, পাহাড় সবই দেখা যায়। জাপানিদের কাছে গ্রাম বলতে এই মডেলটাই প্রতিফলিত হয়। অধ্যাপক মিয়াহারার মতে, আগেকার এথনোগ্রাফারগণ তাদের মানস কাঠামোয় ঠাঁই পাওয়া মডেল দিয়েই সমাজ গবেষণা করতেন
২০ মার্চ ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সেমিনার ছিল। মূল বিষয়বস্তুতে প্রাধান্য ছিল বাংলাদেশ সম্পর্কিত বিষয়াবলি- নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে রোহিঙ্গা শরণার্থী সম্পর্কিত। একটি উপস্থাপন করলাম আমি, আরেকটি উপস্থাপন করলেন জাপানের হিরোশিমার শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিনিও তাকাদা। তিনি কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের নানা বিষয়ের ওপর গবেষণা করেছেন- রোহিঙ্গা, রিকশা ইত্যাদি। তিনিও অধ্যাপক মিজোকামির মতো অনর্গল বাংলায় কথা বলেন।
জাপানিরা যে দেশে গবেষণা করেন সাধারণত সেই দেশের ভাষা, সংস্কৃতি ইত্যাদি রপ্ত করেন। আলাপকালে জানতে পারলাম, তিনি এখনো নিয়মিত বাংলাদেশের খোঁজ-খবর রাখেন। দৈনিক প্রথম আলো, জনকণ্ঠ, আজাদী, পূর্বকোণ ইত্যাদি খবরের কাগজ তিনি নিয়মিত পাঠ করেন- যাতে কোনো খবর অজানা না থাকে কিংবা তার গবেষণার বিষয় সম্পর্কিত তথ্যের ঘাটতি যেন না ঘটে। তিনি চট্টগ্রামে অনেকদিন থেকেছেন। সামনে এলে যোগাযোগ করবেন।
সেমিনারের বিষয়ে একটু বলতে হয়। এশিয়া-প্যাসিফিক অধ্যয়ন আয়োজিত সেমিনারে আমার প্রবন্ধের বিষয় ছিল রোহিঙ্গাদের কাছে ‘জীবনের অর্থ’। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বর্তমানে ক্যাম্পে তারা দিনের পর দিন যেভাবে বসবাস করছে, এখানে তারা জীবনের কি অর্থ খুঁজে পায়? জীবনের অর্থ জীবনাভিজ্ঞতার তারতম্যে একেকজনের কাছে একেক রকম। যেমন- ৫০ বছর বয়সী পুরুষ রোহিঙ্গার কাছে এক রকম, মহিলার কাছে আরেক রকম, ১৫ বছরের ছেলেমেয়েদের কাছে ভিন্ন রকম।
আবার যাদের জন্ম বাংলাদেশে তাদের কাছে জীবন মানে কী তারা নিজেরাও জানে না। জাপানি অধ্যাপক তাকাদার প্রবন্ধে স্থান পেয়েছে রোহিঙ্গাদের বিক্ষিপ্ত অবস্থান। তারা ১৯৭০-এর দশক থেকে অদ্যাবধি দেশের, বিশেষ করে চট্টগ্রামের নানা স্থানে কিভাবে আবাস গড়েছিল, দলগত কিংবা এককভাবে, বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল এথনোগ্রাফিক গবেষণার মাধ্যমে তা তুলে ধরেছেন।
অধ্যাপক কাজুত ইকেডে বাংলাদেশ ভ্রমণ করে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের ঐতিহাসিক অবস্থান তুলে ধরেছেন। অধ্যাপক গিও মিয়াহারা (আমার পিএইচডি তত্ত্বাবধায়ক) রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের যেমনটা দেখেছেন, তা তুলে ধরেছেন বিশেষ করে তাদের বসবাস, বেঁচে থাকার কৌশল এবং তাদের সংস্কৃতি। নিজের অভিজ্ঞতার সঙ্গে বিদেশীরা রোহিঙ্গা সমস্যাটিকে কিভাবে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখেন, তা আমার জন্য অনেক তথ্যসমৃদ্ধ।
শোতা ওকানাও ও তাইহেই কিকুচি বাংলাদেশে ভ্রমণে এসে যা কিছু দেখেছিলেন কক্সবাজার, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও রাঙামাটিতে তার একটা তুলনামূলক আলোচনা করলেন। তারা কক্সবাজার, টেকনাফ ও রাঙামাটির বিভিন্ন জাতিগত ও সাংস্কৃতিক চিত্র তুলে ধরেছেন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের ঐতিহাসিক সম্পর্কের নানা দিক আলোচনা করেছেন। তারা বেশি অবাক ও আনন্দ পেয়েছেন টেকনাফে নাফ নদী দেখে। নদীর একদিকে মিয়ানমার, অন্যদিকে বাংলাদেশ।
দুজনের মধ্যে ওকানাও সম্প্রতি কোবে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন। কিকুচি পেয়েছেন কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষক হিসেবে। অন্যদিকে আমার সতীর্থ ফান চিহ-ইং , ক্রিস সুমমো, ও আও মেংলিং এ বছর তাদের পিএইচডি সম্পন্ন করবেন। আমি তাদের কাছে সেনপাই-সিনিয়র বা বড়ভাই।
উল্লিখিত সেমিনারের পর রাতের জন্য যে আয়োজন তার উল্লেখ না করলেই নয়। নানা পদের সুস্বাদু সুশিসহ অসংখ্য খাবারের আয়োজন করা হয়েছে ডিনারে। ডিনারটি প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী ছিল (সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১০:৩০)। ডিনারে সাধারণত তারা গাম্ভীর্য ফেলে হাসিখুশি থাকেন, খাবার ও গল্প উপভোগ করেন। জাপানে খাবারের বিল কিন্তু সবাই আলাদা আলাদা করে দেন। এবারকার ডিনারে উপস্থিত প্রত্যেকে পাঁচ হাজার জাপানিজ ইয়েন করে জমা দিলেন। আমাকে দিতে হয়নি আমার একটি প্রবন্ধ থাকায়।
সেমিনারে যারা যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের সবার সঙ্গে আলাপ-পরিচয় হয়। কে কোথায় কাজ করেন, করতেন জানা যায়। একজনের সঙ্গে আলাপ হলো। তিনি ভারতের কাশ্মীরে কাজ করেন। একজন উত্তর-পূর্ব ভারতে কাজ করেন। আরও কয়েকজন জাপানি অধ্যাপকের সঙ্গে পরিচয় হলো, যারা পাঁচ-সাত বছর আগেই ওসাকা বিশ্বিবদ্যালয় থেকে অবসর নিয়েছেন। তারপরেও তারা সুযোগ পেলে সেমিনার ও আলাপ-আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
তাদের অভিজ্ঞতা নতুনদের সঙ্গে শেয়ার করেন। নিজেরাও নাকি সমৃদ্ধ হন। জাপানে অবসর নিলেও অধ্যাপকবৃন্দ চাইলে কোনো-না-কোনোভাবে বিশ্বিবিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন।
অধ্যাপক মিজোকামির মতো আরেকজনের কথা উল্লেখ না করলেই নয়। তিনি ডাক্তার কাজুতো মাৎসুমতো। তার সঙ্গে ২০০৮ সাল থেকে পরিচয়। গত ডিসেম্বরে তার সঙ্গে যখন দেখা, পরেরবার ওসাকা আবার কখন যাব তা লিখে রেখেছিলেন তার নোটবুকে। যেদিন পৌঁছলাম ১২ মার্চ, সেদিনই তিনি স্থানীয় অধ্যাপক মিয়াহারাকে মোবাইলে টেক্সট পাঠালেন, আমার সঙ্গে ১৬ তারিখ শনিবার ডিনার করতে চান।
আমিও সম্মতি দিলাম। গাড়িতে করে এসে আমাকে নিয়ে গেলেন। একটা রেস্টুরেন্টে সুস্বাদু উদং খেলাম। ২০ তারিখ আবার এলেন। সেমিনারে আমাকে গাড়িতে করে পৌঁছে দিলেন, একটু থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন। আমাকে আবার সেমিনারস্থল থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে, আমি নিষেধ করি। কারণ, ডিনার শেষ হতে হতে অনেক রাত হয়ে যাবে। এভাবে বাংলাদেশ যেমনি উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে জাপানকে সবসময় পাশে পেয়েছে সহায়ক ভূমিকায়, আমিও অনেক জাপানিকে পাশে পেয়েছি অকৃত্রিম ভালোবাসায়।
মনোরেল চড়েছি, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চড়েছি, তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনের অপেক্ষায়। বিমানবন্দরমুখী দুই ঘণ্টার যাত্রা ৩০ মিনিটে সম্পন্ন করা যায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কল্যাণে। এসব উন্নয়ন আমাদের জন্য বেশ আশা জাগানিয়া। তবে এসব উন্নয়ন যেন মানুষ ও প্রকৃতির বিরুদ্ধে না যায়, সেটি বিবেচনায় রাখা আবশ্যক।
চট্টগ্রামে নির্মীয়মান এক্সপ্রেসওয়ের জন্য র্যাম্প বসানোর জন্য রেলওয়ে এলাকার শতবর্ষীসহ যে ৪৩টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা কোনোভাবেই মানা যায় না। গাছ কাটাকে কোনোভাবেই উন্নয়নের স্বার্থে বলা যায় না, বরং উন্নয়নবিমুখ কর্মকা- বলেই অবিহিত করা যায়। আশা করি, সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের মতো হঠকারী সিদ্ধান্তের মতো এই প্রকৃতিবিনাশী সিদ্ধান্ত থেকেও কর্তৃপক্ষ ফিরে আসবে। জাপানে অন্তত এ রকম প্রকৃতিবিনাশী ও গণবিরোধী উন্নয়নের নজির নেই।
ঢাকায় প্রথম ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছিল। তারপর চট্টগ্রামেও হয়েছে। চট্টগ্রামবাসী সুবিধাও পাচ্ছেন। চট্টগ্রামে যেমনি ঢাকার মতো এলেভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দরকার, হচ্ছেও। তেমনি দরকার মনোরেল। এক রাস্তার এই শহরে আর স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করা যায় না। যানজট সবসময় লেগেই থাকে। হালকা বৃষ্টি হলেও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। এর ফলে অনেক শ্রমঘণ্টা নষ্ট হয়। জনগণের চরম ভোগান্তি হয়।
তাই ট্রাফিক জ্যাম নিরসনে চট্টগ্রামে মনোরেল প্রয়োজন। এর কোনো গত্যন্তর নেই। একেবারে শহর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিধায় প্রতিনিয়ত সমস্যার মধ্যে নিমজ্জিত, বিশেষত পরিবহন ব্যবস্থার কারণে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যেভাবে প্রতিদিন কষ্ট করেন, বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করেন জ্যামের মধ্যে, কর্মশক্তি খুব একটা অবশিষ্ট থাকে না। তাই শহরের জ্যাম নিরসন ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সুবিধা লাভের জন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে মনোরেল হতে পারে সবচেয়ে সুন্দর প্রকৃতিবান্ধব সমাধান।
আজকের পর্ব শেষ করা দরকার। জাপান থেকে ফেরার দুদিন আগে অধ্যাপক মিয়াহারা আমাকে নিয়ে গেলেন দূরের একটি গ্রাম দেখাতে। ফুকুশিমা ওসাকা থেকে অনেক দূরের পথ। যেতে যেতে দেখলাম বৃষ্টি হচ্ছে। একটু পর দেখলাম তুষার পড়ছে। যখন গ্রামের দিকে পৌঁছলাম, দেখলাম শহর থেকে গ্রামের ভিন্নচিত্র। যদিও জাপানের গ্রাম বাংলাদেশের শহর অপেক্ষা অনেক স্বয়ংসমৃদ্ধ। সব সুযোগ-সুবিধাই গ্রামে বিদ্যমান। সাকুরাও দেখলাম।
সাধারণত সাকুরা পুরোদমে না ফুটলেও কোনো কোনো ভ্যারিয়েন্ট আগে ফোটে। সৌভাগ্যক্রমে সময়ের প্রায় ৮-১০ দিন আগেই ফুকুশিমার বদৌলতে আমিও তাই দেখে ফেললাম। ফুকুসাকি শহরের একটি বিশেষ স্থানে নিয়ে গেলেন। যেটি আসলে জাপানের কুনিও ইয়ানাগিদা নামক একজন লোকসাহিত্যিক-এথনোগ্রাফারের স্মৃতি বিজড়িত এলাকা। সেখানে উঁচুতে উঠলে দেখা যায় সুবিস্তৃত গ্রাম- যেখানে নদী, ধানখেত, পাহাড় সবই দেখা যায়।
জাপানিদের কাছে গ্রাম বলতে এই মডেলটাই প্রতিফলিত হয়। অধ্যাপক মিয়াহারার মতে, আগেকার এথনোগ্রাফারগণ তাদের মানস কাঠামোয় ঠাঁই পাওয়া মডেল দিয়েই সমাজ গবেষণা করতেন। এই মডেলে ভর করেই অসংখ্য লোকসাহিত্য সংগ্রহ করেছেন। জাপানি নৃবিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নৃবিজ্ঞানীগণ নিজ সমাজের মডেল নিয়ে নয়, গবেষণাকৃত সমাজ কাঠামোকেই প্রাধান্য দেন।
জাপানিদের কাছে ব্যক্তিগত বিষয় কতটা সংবেদনশীল, তার একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। এর সঙ্গে সম্পর্কিত করে জাপানি মডেল আর বাংলাদেশী মডেলের স্বাতন্ত্র্য অবস্থান থেকে উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরব। ২০০৮ সাল থেকে আমার পরিবারের সঙ্গে এক জাপানি পরিবারের সম্পর্ক। আমি ২০২২ এ জাপান গেলে ভদ্রলোকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু তিনি ব্যস্ত থাকায় দেখা করতে পারেননি। তার চার-পাঁচ মাস পর সপরিবারে যখন জাপান গেলাম, তার বাসায় দেখা করতে গেলাম আমার স্থানীয় অধ্যাপকসহ। তিনি খুব খুশি হলেন।
জানালেন, এর আগেরবার তার অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে ভীষণ ব্যস্ত ছিলেন বলে দেখা করতে পারেননি। তার স্ত্রীর ক্যান্সার হয়েছে। ডাক্তার বলে আর এক বছর বাঁচবে। তিনি পরে আরেকদিন দেখা করতে এলেন এবং আমাদের তার দুই দরজার ফ্যাশনেবল মার্সেডিজ বেঞ্জে করে ঘুরালেন (উল্লেখ্য, তাঁর বয়স এখন ৮৩), ওসাকার উঁচু একটা রেস্টুরেন্টে (ওয়াশিংটন হোটেল) লাঞ্চ করালেন হোটেলের ১১ তলায়, যেখান থেকে ওসাকার সুন্দর ভিউ দেখা যায়। আমার মেয়েদের পার্কে নিয়ে গেলেন, ঘুরালেন, গিফট দিলেন।
তার চার মাস পর যখন গেলাম, ফোন করে জানতে পারলাম তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত, দেখা করতে পারবেন না। যাই হোক, এবার মার্চে যখন গেলাম ভাবলাম আর কখন আসি-না আসি ঠিক নেই। ফোন করতে চাইলে আমার স্থানীয় অধ্যাপক নিরুৎসাহিত করলেন। বললেন, এই সময় ফোন না করাই ভালো। ‘তিনি আপনার সঙ্গে দেখা করতে পারলে খুশি হতেন, কিন্তু তার এই সময়ে খোঁজ-খবর না নিয়ে তাঁকে তাঁর মতো একা থাকতে দেওয়াই ভালো।’
এক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান কিন্তু ভিন্ন। এইরকম সময়ে নিকটাত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব খবর নেবে এটাই স্বাভাবিক। বরং খবর না নিলে আমরা মন খারাপ করি। অর্থাৎ জাপানের মতো উন্নত হতে চাইলেও সবটাতে জাপানি মডেল আমাদের ক্ষেত্রে কাজ করবে না। আমাদের এগোতে হবে আমাদের নিজস্ব মডেল নিয়ে। যেখানে মডেলে আমাদের সমাজ, সংকৃতি ও ঐতিহ্য প্রতিফলিত হবে।
বাংলাদেশ একদিন জাপান হবে সেটি আমাদের চাওয়া নয়, সম্ভবও নয়। বাংলাদেশ বাংলাদেশের সমাজ, সংস্কৃতি, প্রকৃতি, মানবিকতা, আবেগ, ভালোবাসা তথা বাংলাদেশী মডেল নিয়ে উন্নয়নের পথে অগ্রসর হবে, সামনের দিকে এগিয়ে যাবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। (সমাপ্ত)
লেখক : অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়