ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

আচরণবিধি লঙ্ঘন

প্রকাশিত: ২০:২৯, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

আচরণবিধি লঙ্ঘন

সম্পাদকীয়

আচরণবিধি ভেঙে শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশন থেকে। এমন কাজ সংসদ সদস্যরা যেমন করছেন, তেমনি অন্য প্রার্থীরাও করছেন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের কাজ এমন প্রার্থীও করছেন, যিনি প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এটি নিঃসন্দেহে অগ্রহণযোগ্য। দুঃখজনক হলো, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের তালিকায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন পর্যন্ত ২৪ প্রার্থীকে শোকজ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠিত নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। 
নিয়ম অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আচরণবিধির আওতায় পড়ে যান সবাই। বাস্তবে নির্বাচনের প্রচার শুরুর দিন না আসা পর্যন্ত এখন যেভাবে পোস্টার-ব্যানার লাগানো হচ্ছে বা শোডাউন-মিছিল করে যাচ্ছেন প্রার্থীরা, এর সবই অবৈধ। দেশে সবচেয়ে বেশি আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়ে থাকে শোডাউন-মিছিল ও পোস্টার লাগানোর ক্ষেত্রে। সংসদীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এবং এর সংশোধনী (২০১৩) অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তির কোনো ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌ-যান, ট্রেন কিংবা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন নিয়ে মিছিল করা যাবে না।

কোনো শোডাউন করা যাবে না; মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়ও মিছিল কিংবা শোডাউন করা যাবে না। অপরদিকে সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকায় অবস্থিত দালান, বিল্ডিং, গাছ, বেড়া, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটিতে বা যানবাহনে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগানো যাবে না। তবে দেশের যে কোনো স্থানে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল রশিতে ঝুলিয়ে টাঙানো যাবে। শুধু মিছিল বা শোডাউন নয়Ñ মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে নির্বাচনী প্রচার করা যাবে না। মাইকে নির্বাচনী প্রচার দুপুর ২টা হতে রাত ৮টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। নির্বাচনী প্রচারের জন্য প্রার্থীর ছবি বা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারমূলক কোনো বক্তব্য বা কোনো টি-শার্ট, জ্যাকেট, ফতুয়া ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী ক্যাম্পে কোনো কোমল পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন বা কোনো উপঢৌকন প্রদান করাও যাবে না।

বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহৃত পোস্টার ও ব্যানার সাদাকালো হতে হবে। পোস্টারের সাইজ অনধিক ষাট বাই পঁয়তাল্লিশ সেন্টিমিটার এবং ব্যানার অনধিক তিন বাই এক মিটার হতে হবে। পোস্টার বা ব্যানারে প্রার্থীর নিজের প্রতীক ও ছবি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির ছবি বা প্রতীক প্রকাশ করা যাবে না। তবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য শুধু নোটিশ প্রদানই যথেষ্ট নয়, প্রমাণসাপেক্ষে বিধি লঙ্ঘনের দায়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণই কাম্য। এতে একদিকে নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটারদের আস্থা যেমন বাড়বে, তেমনি প্রার্থীরাও আইন মেনে চলতে বাধ্য হবেন। সর্বাঙ্গীণ সুন্দর একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।

×