ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

ঢাকার দনিরাত

মারুফ রায়হান

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ২০ নভেম্বর ২০২৩

ঢাকার দনিরাত

এবারের হরতালে সহিংসতার নতুন মাত্রা দেখা গেছে

এবারের হরতালে সহিংসতার নতুন মাত্রা দেখা গেছে। ঢাকার গাজীপুরের একটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে আগুন দেয়া হয়। অন্যদিকে জামালপুরে ট্রেনের বগিতে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। গত মাসের ২৮ তারিখের পর বিএনপির দ্বিতীয় দফা হরতালের আগের রাতে অর্থাৎ গত শনিবার ১০ গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রবিবার থেকে দ্বিতীয় দফায় টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন করে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। ভোর ৬টায় হরতাল শুরুর আগেই শনিবার থেকে ১০টির মতো পরিবহনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

রবিবার (১৯ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম। তিনি বলেন, ১০টি যানবাহনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা সিটিতে ৪টি, রাজশাহী বিভাগের নাটোর, বগুড়া, জয়পুরহাটে ৩টি, চট্টগ্রাম বিভাগের  ফেনী, কুমিল্লায় ২টি, ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুরে ১টি ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ৬টি বাস, ১টি কাভার্ডভ্যান, ১টি ট্রাক, ১টি পিকআপ ও ১টি ট্রেনের তিনটি বগি পুড়ে যায়। এছাড়া হরতাল শুরুর পর রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায় কাজী আলাউদ্দিন রোডে ওয়ানস্টার হোটেলের সামনে একটি সিএনজিতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আগুন লাগায় দুর্বৃত্তরা। 

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া
বিশ^কাপে ভারতের মাঠে অপরাজিত ভারতীয় ক্রিকেট দলের বিপক্ষে গ্যালারির ১ লাখ ৩০ হাজার ভারত-ভক্তের গর্জন থামিয়ে অস্ট্রেলিয়াদের বিজয় উল্লাস অপ্রত্যাশিত না হলেও যথেষ্ট কঠিনই ছিল। ঢাকায় এবার বিশ^কাপের খেলা খোলা মাঠে বড় পর্দায় প্রদর্শনের খবর খুব বেশি চোখে পড়েনি। টাইগারদের করুণ বিদায়ের পর ঢাকার ক্রিকেটপ্রেমীরা বরং কিছুটা নীরবই ছিল। তবে ফাইনালে তারা সরব হয়ে ওঠে ফেসবুকে। ভারতের পক্ষে-বিপক্ষে দারুণ বাক্যবাণ চলতে থাকে। ভারত দলের বাংলাদেশি সমর্থকদের অদ্ভুত যুক্তি হলো, আপনারা ক্রিকেটে ভারতের পরাজয় চান, তাহলে নানা প্রয়োজনে ভারতে যান কেন! ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ-টেয়াজ খান কেন? হাস্যকর সব ছেলেমানুষি কায়কারবার।

খেলার মধ্যে আবার ধর্মীয় সম্প্রদায়গত পরিচয়ও যুক্তিহীনেরা তুলে ধরেন নগ্নভাবে। আসলে খেলা তো খেলাই। কে কোন দল সাপোর্ট করবে, সেই পছন্দের দলের খেলা থাকলে বিপক্ষ দলের পরাজয় কামনা করবে, এটি যে কোনো দর্শকেরই ব্যক্তিগত বিষয়, ব্যক্তিস্বাধীনতা। ফেসবুকে ভারতীয় দলের পক্ষে-বিপক্ষে দর্শকদের সংখ্যায় কারা এগিয়ে সেটি নিখুঁতভাবে বলা যাবে না। তবে যারা ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে চ্যাম্পিয়ন দেখতে চেয়েছেন তারা বেশি আক্রমণের শিকার হয়েছেন বলেই মনে হলো। যেমন আমি নিজেই ভারত-অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল ম্যাচের প্রথম ঘণ্টায় থ্রি ডাউন দেখে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম।

তারপর মধ্যবিরতিতে আবার লিখেছিলাম- মাত্র ২৪০ রানে যারা অলআউট হয়, তারা অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংকে পরাস্ত করে আজ জিতে যাবে বলে কি আপনি মনে করেন? সত্যিই কি তারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্ট্যান্ডার্ড!’ এরপর ইনবক্সে ও টাইমলাইনে প্রচুর কটুবাক্য শুনতে হয়েছে। অবশ্য ভারতের পরাজয়ের পর তারা সবাই আবার নিশ্চুপ।

যাইহোক, ভারতের ইনিংসে দুটি ভাগ। প্রথম ১০ ওভারে রোহিত শর্মার আক্রমণাত্মক ইনিংসে তারা তুলেছিল ৮০ রান। পরপর ২ ওভারে রোহিত ও শ্রেয়াস ফেরার পর খোলসবন্দি হয়ে যায় ভারত। মাঝে কোহলি ও রাহুল জুটি গড়েছেন, ফিফটিও পেরিয়েছেন দুজনই। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি কেউ। শেষে এসেও কোনো ঝড় ওঠেনি।  আহমেদাবাদের ধীরগতির উইকেটে অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা ছিলেন দুর্দান্ত। সেøায়ার, কাটার, গতির বৈচিত্র্য, বাউন্সের  বৈচিত্র্যের সঙ্গে রিভার্স সুইংয়ে ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে মোটেও গতি পেতে দেননি তাঁরা।

ব্যাটিংয়ের শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়ারও তিনখানা উইকেট পড়ে যায় অল্প সময়ের মধ্যে। তবে দর্শকদের মাথায় ছিল ম্যাক্সওয়েলের ঐতিহাসিক ডবল সেঞ্চুরির স্মৃতি। তাই অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকরা আশায় বসতি গড়েছিলেন। তবে ম্যাক্সওয়েলকে লাগেনি, একা ট্রাভিস হেডই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ভারতের কর্ম সেরে দিয়েছেন। উপভোগ্যই হয়েছে ফাইনাল।

নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিক্রি
উৎসবমুখর পরিবেশে রবিবার দ্বিতীয় দিনের মতো দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়। চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বেলা ১১টার দিকে এক প্রতিবেদক সরেজমিন দেখে এসে লেখেন: মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আসছেন। তাঁদের অনেকেই স্লোগান দিচ্ছেন। কোনো কোনো মনোনয়নপ্রত্যাশীর কর্মী-সমর্থকরা ঢোল-বাদ্য বাজাতে বাজাতে আসছেন। শনিবারের মতো আজও দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতা-কর্মীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা শত শত নেতা-কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আসছেন। তবে কার্যালয়ের সামনে আসার পর কেবল মনোনয়নপ্রত্যাশী অথবা তাঁর প্রতিনিধি কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে পারছেন।
প্রথম দিনে ১ হাজার ৭৪টি ফরম বিক্রি করেছে দলটি। এদিন দলটির আয় হয়েছে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।

ফুটপাতে নবজাতকের মরদেহ
রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় ফুটপাত থেকে এক নবজাতকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকাল ১০টার দিকে ওই নবজাতকের লাশ উদ্ধার করা হয়। শাহবাগ থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) বজলুর রহমান বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪ নম্বর গেটের ফুটপাতে এক দিনের নবজাতকের মরদেহ দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ফুটপাত থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এসআই বজলুর রহমান। তিনি বলেন, নবজাতককে কে বা কারা ফেলে রেখে গেছেন, সেটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ উদ্ধার করে তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মাঝেমধ্যে এমন জীবিত বা মৃত নবজাতককে উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। আমার চোখ এড়িয়ে না গেলে সেই সংবাদটি তুলে রাখার চেষ্টা করি এই কলামে। মানুষের প্রতি মানুষের জন্য সংবেদনশীলতা জাগাতেই এই প্রয়াস। কাজের কাজ কিছু হোক না হোক, আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে। 

টিসিবির পণ্যের ব্যাপক চাহিদা
রাজধানীতে আবারও ট্রাকে পণ্য বিক্রি করতে শুরু করেছে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। স্বল্প আয়ের মানুষকে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য দিতে এই উদ্যোগ। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে ঢাকার ১৩ লাখ পরিবার কার্ডধারী মানুষের পাশাপাশি আরও ২ লাখ মানুষ ভর্তুকি মূল্যের পণ্য পাবেন, এমনটিই বলেছেন টিসিবির চেয়ারম্যান। প্রথম দিনে (গত মঙ্গলবার) ঢাকার ৩০টি স্থানে পণ্য বিক্রি করেছে টিসিবি। পণ্যগুলো পেতে মানুষের বেশ ভিড় ছিল। ফলে পণ্য বিক্রি হয়েছে দ্রুত। একেকটি ট্রাকে থাকা ৩০০ জনের পণ্য বিক্রিতে সর্বোচ্চ সময় লেগেছে ৩ ঘণ্টা।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট ও মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড ঘুরে এবং আরও ৭ জন ডিলারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে জেনে এক গণমাধ্যমকর্মী জানান, টিসিবির মালামাল নিয়ে ট্রাকগুলো সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছায়। এরপর পণ্য বিক্রি শেষ হতে ঘণ্টা তিনেক লাগে। কোথাও কোথাও মাত্র দেড় ঘণ্টায় পণ্য বিক্রি শেষ হয়েছে।
এতেই বোঝা যাচ্ছে স্ফীতকায় মূল্যস্ফীতি এবং চড়া দ্রব্যমূলের দিনগুলোতে ন্যায্যমূল্যে পণ্য পেতে স্বল্প আয়ের মানুষেরা যথেষ্ট মরিয়া। এসব পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ ব্যবস্থাও বাড়ুক, এমনটিই প্রত্যাশা। 

ফিরে দেখা মধ্য নভেম্বর ২০২০ দিনভর আগুন সন্ত্রাস
এ কলামে যা লিখছি কখনো কখনো সেদিকে ফিরে তাকানোরও প্রয়োজন মনে করি। এতে আমাদের অর্বাচীন অমানবিক কর্মকা-ের ধারাবাহিকতারও এটা পরিচয় মেলে। তাই বিগত তিন সপ্তাহ ধরে অগ্নিসন্ত্রাসের সময়টাতে খুব বেশি দূরের নয়, মাত্র তিন বছর আগের এই মধ্য নভেম্বরের দিকেই ফিরে তাকানোর প্রয়াস। নিচে তার কিয়দংশ তুলে দিচ্ছি।
বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ১১টি চলন্ত বাসে আগুন লাগানোর ঘটনার ভেতর দিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির যে অপতৎপরতা চলেছে, সেটির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে দেশবাসী। মানুষের  স্মৃতিতে এখনো জাজ্বল্যমান যে দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশব্যাপী আগুন সন্ত্রাস করেছিল, যা ছিল দেশের জন্য এক নতুন ধরনের ভয়ঙ্কর মানবতাবিরোধী কর্মকা-। দেশের মানুষের কল্যাণের জন্যই রাজনীতি, তাদের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার জন্য নয়। আগুন সন্ত্রাসীদের দোসর জামায়াতের নীলনক্সার বিষযটি উন্মোচিত হয়েছে অল্প ক’দিন আগেই আমাদের জনকণ্ঠ পত্রিকাতেই।

অপরদিকে রাজধানীতে বাস পোড়ানোর ঘটনা সরকারি এজেন্টদের ‘নাশকতা’ বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই সরকারের কিছু কিছু অংশ যারা বিভিন্নভাবে কাজ করে, তারা স্যাবোটেজ করার জন্য এই ধরনের ঘটনা ঘটায়। এর আগেও এভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বিএনপি এই রাজনীতি করে না। আমরা মনে করি যে, সরকারের কিছু এজেন্ট থাকে, তারা এই ধরনের ঘটনা ঘটায়। আমরা এই ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।’ দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীর প্রকাশিত অডিও সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাই, এই সমস্ত অডিও-ভিডিও যেসব ফাঁস হয়Ñ এটা বরং তারা ভালো বলতে পারবেন, যারা এগুলো নিয়ে ডিল করে। আমি এটা শুনিওনি, জানিও না। এগুলোর পেছনে সরকারের হাত সব সময় থাকে যারা এটাকে মেনিপুলেটেড করে।  
ফখরুল সাহেব বিএনপির আর দশটা নেতার মতো নন। তাই তার বক্তব্যকে গুরুত্বহীন ভাবা হয় না। কিন্তু এবার তার কথা এলোমেলো মনে হলো। তারা যখন সরকারে ছিলেন তখন সরকারি এজেন্টদের দিয়ে এ জাতীয় ‘নাশকতা’ করিয়েছিলেন কিনা সেই প্রশ্নটি কিন্তু সামনে চলে আসে। মানুষ পাঁচ-ছয় বছর আগে পেট্রোল বোমার মাধ্যমে ধারাবাহিক আগুন সন্ত্রাসের কথা কিন্তু অনেকটা ভুলে গিয়েছিল। গত সপ্তাহে ঢাকায় একসঙ্গে ১১টি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় মানুষ যে আবারও উৎকণ্ঠিত ও শঙ্কিত হয়ে উঠেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

ওই রাজনৈতিক নেতার বক্তব্য ভয়ঙ্কর ঘটনাটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ভেতর বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে, তেমনি আবার যথাযথ তদন্তেও এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা যোগ করতে পারে। ঢাকাবাসী তথা দেশের মানুষ চায় সত্য উদঘাটিত হোক। করোনার দুঃসময়ের মধ্যে একের পর এক বাস পোড়ানোর ভেতর দিয়ে যে নির্মম-নিষ্ঠুরতার নজির স্থাপন করা হলো, তার পুনরাবৃত্তি রোধে এটা অত্যন্ত জরুরি। আধুনিক প্রযুক্তির বদৌলতে আদালতে যদি প্রমাণ হয় যে ওই অপকর্ম বিএনপি কর্মীরাই করেছে সেক্ষেত্রে বড় গলার নেতাটি কি দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার জন্য ক্ষমা চাইবেন? দায়িত্বশীল পদে থাকলে বক্তব্যে ও আচরণে দায়িত্বশীলতার প্রকাশ ঘটাতে হয়। বক্তব্যের পেছনে যুক্তি-প্রমাণ না থাকলে মানুষ একসময় বক্তব্য প্রদানকারী ব্যক্তিকে যে বর্জন করবে, তাতে কোনো সন্দেহ রাখি না।    

ঢাকায় বর্ণালী সাহা
ভিন্নধর্মী এপ্রোচ ও আঙ্গিকে গল্প-নভেলা লিখে ইতিমধ্যে পাঠকপ্রিয় হয়েছেন বর্ণালী সাহা। তিনি থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। এবার ঢাকায় কিছুকাল থেকে গেলেন। দেশের বনেদি প্রকাশনা সংস্থা ইউপিএল থেকে গত বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে লেখকের ঢাউশ গল্পগ্রন্থ জবরখাকি। গ্রন্থটিকে কেন্দ্রে রেখে লেখকের সঙ্গে আলাপচারিতার একটি আয়োজন করেছিল ইউপিএল গত শুক্রবার গ্রীনরোডে তাদের প্রধান কার্যালয়ে। ভার্চুয়াল আমন্ত্রণপত্রে প্রকাশকের পক্ষ থেকে লেখা হয়েছিল: ‘ মানুষকে তার ভেতর ও বাইরে থেকে কী, কে এবং কেন প্রতিদিন অংশে-অংশে উদরস্থ করছে, ‘জবরখাকি’র আটটি গল্প পাঠককে সে প্রশ্নের সামনে দাঁড় করাবে এবং একটা উদ্দীপক-অনুসন্ধানী যাত্রার মধ্য দিয়ে নিয়ে যাবে।

গল্পগুলোর দুনিয়াতে আছে গণহিস্টিরিয়া, সন্ত্রাস, মারি, মাতৃত্ব, বন্ধুত্ব, অপত্য ও বৈকল্য। বর্ণালী সাহার গদ্য শক্তিশালী ভাষা, সাংগীতিক পরিমিতি আর চিত্রকল্পে ঋদ্ধ। ভাষা, কল্পনা ও নন্দনের পথ দিয়ে কালের সঙ্গে বোঝাপড়ায় পৌঁছানোর রসদ রয়েছে এতে।’
লেখক বর্ণালী সাহার সঙ্গে আলাপচারিতায় ছিলেন আরেক লেখক সুহান রিজওয়ান। উভয় সাহিত্যিকেরই সাহিত্যচর্চায় তাঁদের পথচলা ও নানা অভিজ্ঞতার নির্যাস উঠে এসেছিল ওই আয়োজনে। বর্ণালীর জন্য আনন্দময় উপলক্ষ ছিল এটি। নিজের লেখা থেকে পড়ে শুনিয়েছেন। পিতার উপস্থিতিতে অটোগ্রাফসহ জবরখাকি বইটি তুলে দিয়েছেন বন্ধু-অনুরাগী ক্রেতাদের, সেলফি-মজায়ও যোগ দিয়েছেন। সব মিলিয়ে বর্ষণমুখর বর্ণিল দিনটি নিশ্চয়ই তাঁর ভালো গেছে। লেখকের জন্য শুভকামনা।

১৯ নভেম্বর, ২০২৩

[email protected]

×