
ডেঙ্গুর প্রতিরোধ ঔষধ
ডেঙ্গু কোন প্রাণঘাতী রোগ নয়। ডেঙ্গু হচ্ছে পীড়াদায়ক রোগ। স্বল্পক্ষেত্রে রোগটি প্রাণঘাতী ডেঙ্গু হেমোর্যাজিক ফিভারে পরিণত হয়। বিশ্রাম ও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চললে ডেঙ্গু থেকে পুরোপুরি মুক্ত হওয়া সম্ভব। ডেঙ্গু জ¦রের উৎপত্তি ডেঙ্গু ভাইরাসের মাধ্যমে ভাইরাসবাহিত এডিস ইজিপ্টাই মশার কামড়ে হয়ে থাকে। সংক্রমণের তিন থেকে চৌদ্দ দিনের মধ্যে (কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৪ থেকে ৬ দিনের মধ্যে) সচরাচর জ¦রের উপসর্গগুলো দেখা যায়।
যেমন : জ¦র, মাথাব্যথা, পেশি ও গাঁটে ব্যথা, র্যাশ বেরোনো, মেরুদ- ও কোমরে ব্যথা হওয়া, কোন কোন ক্ষেত্রে রক্তপাত হয়। রক্তের অনুচক্রিকা মাত্রা কমে যায় ও রক্ত প্লাজমার নিঃসরণ ঘটে। ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাসায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে হবে। ডেঙ্গুর উচ্চমাত্রার জ¦র কমানোর জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা, প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করা, ওরস্যালাইন, স্যুপ, ডাবের পানি, শরবত, দুধ, ভাতের মাড় ইত্যাদি খাওয়া।
ডেঙ্গু প্রতিকারের প্রস্তুতি যথাযথ কর্তৃপক্ষের যথেষ্ট পরিমাণ নেই। তাই আমাদের সতর্ক থাকা উচিত। ডেঙ্গুর প্রভাব যেহেতু জুলাই থেকে অক্টোবর মাসে (গরম ও বর্ষার সময়টাতেই ডেঙ্গুর প্রকোপ) বেশি থাকে তাই আমাদের নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা। মূলত এডিস মশার কামড় এড়িয়ে চলাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায়। তাই মশার আবাসস্থল ধ্বংস করে মশার বংশবিস্তারের উপযোগী বিভিন্ন আধারে যেমন- কাপ, টব, টায়ার, ডাবের খোলস, গর্ত, ছাদ ফুলের টব ইত্যাদিতে আটকে থাকা পানি অপসারণ করতে হবে। এডিস মশা মূলত দিনের বেলা, সকাল ও সন্ধ্যায় কামড়ায়।
তবে রাত্রে উজ্জ্বল আলোতেও এডিস মশা কামড়াতে পারে। মশার কামড় থেকে বাঁচতে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করতে হবে। সম্ভব হলে ঘরের দরজা ও জানালায় নেট লাগানো যেতে পারে। প্রয়োজনে মসকুইটো রিপেলন্ট স্প্রে, লোশন, ক্রিম, কয়েল ম্যাট ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই অপ্রয়োজনীয় সবকিছু বাড়ির চারদিক থেকে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে যাতে এডিস মশা ডিম না পাড়তে পারে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি জানালায় নেট লাগানো যায়। তাহলে মশা ঘরের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে না।
গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত অপচনশীল বর্জ্য অনেকেই বাড়ির পাশেই ফেলে রাখেন দিনের পর দিন। এরকম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশই ডেঙ্গু মশার উৎপত্তিস্থল। তাই বাড়ির চারদিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। রাজধানীসহ দেশের সবখানে মশানিধন ও পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। আসুন আমরা সতর্ক থাকি, চারপাশ ও বাড়ি ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধ গড়ে তুলি ও আমরা সচেতন হই।
হোমনা, কুমিল্লা থেকে