ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

সরকারি কর্মচারীরা ‘আন্দোলন’ করলেই বাধ্যতামূলক অবসর

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ২৪ জুলাই ২০২৫

সরকারি কর্মচারীরা ‘আন্দোলন’ করলেই বাধ্যতামূলক অবসর

ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনের পর দেশের দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে রাজপথে নামে অভ্যুত্থান-পরবর্তী ছাত্রনেতারা। তারা অভিযোগ তোলে, বহু আমলা এখনো আওয়ামী লীগের ‘চরম দোসর’ হিসেবে কাজ করছেন। আন্দোলনকারীরা এক ধাপ এগিয়ে সচিব পদমর্যাদার ৪৪ জন কর্মকর্তার নাম ও ছবি প্রকাশ করে তাদের অপসারণ দাবি করেন। তবে সরকার যখন ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ নেয়, তখন সচিবালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরে শুরু হয় পাল্টা প্রতিক্রিয়া ও বিক্ষোভ, ফলে সরকারি কার্যক্রমে দেখা দেয় স্থবিরতা।

 

 

 

শুধু সচিবালয় নয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। আন্দোলনের নামে এনবিআরের কর্মকর্তারা বিভিন্ন দাবি-দাওয়ায় অফিস কার্যক্রম বন্ধ রাখেন। এর ফলে নাগরিক সেবায় দীর্ঘ ছেদ পড়ে, সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে স্থবির হয়ে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক কার্যক্রম।

এই প্রেক্ষাপটে সরকার সরকারি কর্মচারীদের লাগাম টানতে নতুন একটি অর্ধ-অর্ডিন্যান্স জারি করেছে। বুধবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরীর স্বাক্ষরে এই অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়।

সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর দ্বিতীয় সংশোধিত অর্ধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী যদি আইনসংগত কারণ ছাড়া সরকারের আদেশ, পরিপত্র বা নির্দেশ অমান্য করেন কিংবা বাস্তবায়নে বাধা দেন, অথবা অন্য কাউকে তা করতে উৎসাহিত করেন, তাহলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে চাকরি থেকে বরখাস্ত।

এছাড়া আদেশে আরও বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির এই আদেশের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে কোনো আপিল করা যাবে না। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি আদেশ পাওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে পূর্ণবিচার আবেদন করতে পারবেন।

 

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক সময় সরকারি কর্মচারীরা নিজেরা আন্দোলনে নামেন এবং একইসঙ্গে সহকর্মীদের কাজ থেকে বিরত থাকতে চাপ সৃষ্টি করেন। ফলে দপ্তরগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এই নতুন আইনি পদক্ষেপে এমন প্রবণতা বন্ধ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সরকারি চাকরির নতুন এই অর্ধ্যাদেশ কার্যকর হলে কর্মস্থলে অনুপস্থিতি ও কর্মবিরতির নামে আন্দোলনের পথ বন্ধ হবে। একইসঙ্গে দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবে এবং প্রশাসনিক জটিলতা এড়িয়ে কার্যকর সংস্কার বাস্তবায়ন সহজ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

 

 

সূত্র:https://youtu.be/FEsncJ_Iv8s?si=C1GDlJL-RUZke-0T

ছামিয়া

×