ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২

মেহেদী হাসান পলাশ

বাংলাদেশে আজকে যত পতন, এর সূচনা করেছিলেন এই প্রধান বিচারপতি

প্রকাশিত: ১১:৫২, ২৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১২:০৫, ২৪ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশে আজকে যত পতন, এর সূচনা করেছিলেন এই প্রধান বিচারপতি

ছবি: সংগৃহীত

পার্বত্য নিউজ এর সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশ বলেছেন, বাংলাদেশে আজকে যত পতন, এর সূচনা করেছিলেন এই সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। এর জন্য অবশ্য বিএনপিরও দায় রয়েছে। কেননা বিএনপিই তাকে প্রধান বিচারপতি বানিয়েছিল। মানুষ বাছাই এর ব্যাপারে বিএনপি সবসময়ই ভুল করে। সেটা তাদের আমলে সেনাপ্রধানের নিয়োগ ও তাদের পরবর্তী কর্মকাণ্ড বিচার করলে সহজেই বোঝা যায়। 

আজ ২৪ জুলাই (বৃহস্পতিবার) নিজের ফেসবুক পেজের একটি পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো লিখেন, ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের সুবাদে ম্যাডামকে ম্যানেজ করে খায়রুল হককে প্রধান বিচারপতি বানিয়েছিলেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, বাংলাদেশে বিএনপির রাজনীতির আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতেই মুন সিনেমা হলের মালিকানা সংক্রান্ত মামলায় খাইরুল হক পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে দিয়েছিলেন। এরপর দেড় বছর বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল। অথচ এ বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগী হয়নি তারা। এটাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে মওদুদ আহমেদ এর বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে বিবেচনা করি। 

মেহেদী হাসান পলাশ বলেছেন, আইন-আদালত সম্পর্কে ব্যক্তিগত অপছন্দের কারণে আমি এই অঙ্গনে খুব কম হেঁটেছি। তবে সংবিধান সম্পর্কে পড়াশোনার কারণে পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হলে দেশে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে, সেটা বাতিলের রায় বিশ্লেষণ করে আমি একটি দীর্ঘ লেখা লিখেছিলাম। লেখাটি দৈনিক ইনকিলাবের আদিগন্ত পাতায় পরপর দুইদিন পুরো পাতা জুড়ে প্রকাশিত হয়েছিল। ইনকিলাবে সম্ভবত আর কোন লেখা কখনো এভাবে পুরো পাতা জুড়ে পরপর দুইদিন প্রকাশিত হয়নি। এর এক পাতা রঙিন প্রকাশিত হয়েছিল। আদিগন্ত বিভাগে সেটাও একমাত্র উদাহরণ। এটা সম্ভব হয়েছিল সম্পাদকের বিশেষ আগ্রহের কারণে। 

তিনি লিখেন, তার কাছে শুনেছি, এই লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর শ্রদ্ধেয় ব্যারিস্টার রফিকুল হক সহ আইন অঙ্গনের অনেক সিনিয়র ব্যক্তিবর্গ ওনাকে ফোন করে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন বিষয়টি সামনে আনার জন্য। এমনকি মওদুদ আহমেদ নিজেও। লেখার মেরিটের প্রশংসা করলেও আমি ওই লেখাতে তার তীব্র সমালোচনা করেছিলাম, তাতে কিছুটা আপত্তি ছিল তার। এছাড়াও সে সময়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের একটা বড় অংশ এই আড়ালে থাকা বিষয়টি সামনে আনার জন্য সম্পাদক মহোদয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে ছিলেন।

তিনি আরো লিখেন, পরবর্তীকালে এই বিষয়টি নিয়ে ঢাকা শহরে ব্যাপকভাবে পোস্টারিং হয় এবং সভা সেমিনার হয়। কিন্তু তখন আর কিছু করার ছিল না। কেননা বিএনপি ততদিনে ক্ষমতার বাইরে। তখন থেকেই এই ভদ্রলোককে আমি প্রবলভাবে অপছন্দ ও সমালোচনা করে এসেছি। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর এই ভদ্রলোক বাংলাদেশের সম্মুখের রাস্তা কে আইনিভাবে ১৮০° ঘুরিয়ে দিয়েছেন। এবং প্রধান বিচারপতির চেয়ার ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন প্রতিষ্ঠার আইনি ভিত্তি তিনিই তৈরি করেছিলেন। পুরস্কার স্বরূপ অবসরের পর শেখ হাসিনা তাকে আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ দিয়ে সম্মানিত করেন। এদেশের বিচার তাকে কতটুকু আটকাতে পারবে আমি জানিনা। তবে তার শাস্তি প্রাপ্য হওয়া উচিত।

ফারুক

×