ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

কোন দেশ বেশি শক্তিশালী, থাইল্যান্ড না কম্বোডিয়া?

প্রকাশিত: ২২:৩৬, ২৫ জুলাই ২০২৫

কোন দেশ বেশি শক্তিশালী, থাইল্যান্ড না কম্বোডিয়া?

ছবি: সংগৃহীত

 এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনার নাম থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে সীমান্ত ঘিরে তৈরি হওয়া সংঘাতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। স্বাভাবিকভাবেই এই উত্তেজনার জেরে দু’দেশের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্লেষণ। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থাগুলোর তথ্য বলছে, সামরিক শক্তিতে যোজন যোজন এগিয়ে রয়েছে থাইল্যান্ড।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার র‍্যাংকিং-২০২৪ অনুযায়ী, সামরিক শক্তিতে থাইল্যান্ডের অবস্থান বিশ্বে ২৫তম, যেখানে কম্বোডিয়ার অবস্থান ৯৫তম। দুই দেশের সামরিক সামর্থ্য পর্যালোচনায় উঠে এসেছে বিস্তর বৈষম্য।

প্রতিরক্ষা ব্যয় ও জনবল
লন্ডনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা International Institute for Strategic Studies (IISS) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে থাইল্যান্ড সামরিক খাতে ব্যয় করেছে ৫৭৩ কোটি ডলার, যা কম্বোডিয়ার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। কম্বোডিয়ার সামরিক বাজেট ছিল মাত্র ১৩০ কোটি ডলার।

সামরিক বাহিনীর সদস্যসংখ্যার দিক থেকেও এগিয়ে থাইল্যান্ড। কম্বোডিয়ার সক্রিয় সেনা সদস্য সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার, অন্যদিকে থাইল্যান্ডের সেনাসদস্য প্রায় আড়াই লাখ।

স্থল সেনাবাহিনী: ট্যাঙ্ক ও কামানে বিশাল ফারাক
থাইল্যান্ডের স্থল বাহিনী আধুনিক ট্যাঙ্ক, সজ্জিত আর্টিলারি ও আর্মার ডিভিশনে এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী।
তাদের ভাণ্ডারে রয়েছে:

৪০০টি ট্যাঙ্ক

২০০টি স্বয়ংক্রিয় সাজোয়া কামান (Self-propelled Artillery)

২৬০০টি বিভিন্ন ধরনের কামান

বিপরীতে, কম্বোডিয়ার ট্যাঙ্ক সংখ্যা মাত্র ২০০টি, আর কামান সংখ্যা এর দ্বিগুণ হলেও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও ব্যাবহারের দিক থেকে পিছিয়ে আছে অনেকখানি।

বিমান বাহিনী: ফাইটার জেট বনাম পরিবহন বিমান
এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী বিমান বাহিনী হল থাইল্যান্ডের।
তাদের কাছে রয়েছে:

২৮টি এফ-৬ যুদ্ধবিমান

১১টি সুইডিশ ‘গ্রিপেন’ ফাইটার জেট

শতাধিক সামরিক বিমান ও হেলিকপ্টার

অন্যদিকে, কম্বোডিয়ার বিমান বাহিনীর অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল।
তাদের কাছে নেই কোনো যুদ্ধবিমান। শুধু রয়েছে:

হাতে গোনা কিছু সামরিক পরিবহন বিমান

সীমিত সংখ্যক সামরিক হেলিকপ্টার

নৌবাহিনী: বিমানবাহী রণতরীর দখলে থাইল্যান্ড
সামরিক শক্তির তৃতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো নৌবাহিনী। এ ক্ষেত্রেও থাইল্যান্ড কম্বোডিয়ার চেয়ে অনেক এগিয়ে।
থাইল্যান্ডের কাছে রয়েছে:

১টি বিমানবাহী রণতরী

৭টি ফ্রিগেট

৬৮টি টহল জাহাজ

অন্যদিকে, কম্বোডিয়ার নৌবাহিনী অত্যন্ত সীমিত।
তাদের কাছে মাত্র:

১৩টি টহল জাহাজ

বিশ্লেষণ ও উদ্বেগ
উত্তেজনার এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের আশঙ্কা— যদি সীমান্ত সংঘর্ষ প্রকৃত যুদ্ধাবস্থায় গড়ায়, তবে কম্বোডিয়া প্রায় অসম প্রতিপক্ষ হবে থাইল্যান্ডের কাছে। তবে, কম্বোডিয়া বরাবরই কূটনৈতিকভাবে সংঘাত এড়াতে সচেষ্ট থেকেছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি ও রণকৌশল অনেকটা আক্রমণাত্মক।

এখন দেখার বিষয়— এই উত্তেজনা কী সংঘাতে রূপ নেবে, নাকি কূটনীতির টেবিলে কোনো সমাধানে পৌঁছাবে।

শেখ ফরিদ 

×