
ছবি: সংগৃহীত
চিকিৎসকদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করে ওষুধের প্রচার বা প্রমোশন করতে পারবেন না কোনো ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির প্রতিনিধি। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সরাসরি যোগাযোগ নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন। একইসঙ্গে, প্রেসক্রিপশনে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ নিরুৎসাহিত করতে চিকিৎসকদের জেনেরিক নাম ব্যবহারের বাধ্যবাধকতার প্রস্তাবও রয়েছে প্রতিবেদনে।
সোমবার সকাল ১১টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের হাতে কমিশন এই প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে দেশের সবচেয়ে দরিদ্র ২০ শতাংশ জনগণকে বিনামূল্যে সম্পূর্ণ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ সরকারি ও বাকি ১০ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা পাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এছাড়া ওষুধ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চিকিৎসকদের সম্পর্ক নির্দিষ্ট নীতির আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. সৈয়দ আকরাম হোসেন বলেন, চিকিৎসক ও ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির সম্পর্কের বিষয়ে কমিশনের সুপারিশ খুবই স্পষ্ট। কোনো ধরনের উপহার, ওষুধের নমুনা বা আর্থিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টাকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কোম্পানিগুলো চাইলে ডাক্তারদের ইমেইল অথবা ডাকযোগে তাদের ওষুধ সংক্রান্ত তথ্য পাঠাতে পারবে। তবে কোনো প্রকার দৈনন্দিন প্রোডাক্ট প্রমোশনের জন্য সরাসরি সাক্ষাতের অনুমতি থাকবে না।
কমিশনের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ হলো—অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা দুই বছর পরপর হালনাগাদ করা এবং এসব ওষুধ প্রাথমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে, আর অন্যান্য ক্ষেত্রে ভর্তুকি মূল্যে সরবরাহ নিশ্চিত করা।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস বলেন, যেসব সুপারিশ এখনই বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।
কমিশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবগুলোর একটি হলো—সংবিধান সংশোধন করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে নাগরিকদের একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে সংযুক্ত করা। এ লক্ষ্যে একটি পৃথক ‘প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা আইন’ প্রণয়নেরও প্রস্তাব করা হয়েছে, যা নাগরিকের অধিকার ও রাষ্ট্রের কর্তব্য নির্ধারণ করবে এবং স্বাস্থ্যখাতে দীর্ঘমেয়াদে ন্যায্যতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যবিশিষ্ট স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এসএফ