ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

ঘুমের উপকারিতা...

বিবিসি

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ৫ মে ২০২৫

ঘুমের উপকারিতা...

ঘুমের উপকারিতা

রোগব্যাধি নিয়ে মানুষের ওপর যত রকমের গবেষণা হয়েছে, সেখান থেকে একটা বিষয় খুব স্পষ্ট। কেউ যত কম ঘুমাবেন, তার আয়ু তত কমবে। কাজেই বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত যদি বাঁচতে চান, শরীর সুস্থ রাখুন এবং রাতে ভালো করে ঘুমান। ঘুম খুবই সর্বজনীন। এটা একেবারে বিনামূল্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য এতটাই ভালো যে, চিকিৎসকরা প্রেসক্রিপশনে রোগীদের ঘুমের পরামর্শ দেন।
ঘুমের উপকারিতার সীমা নেই। ঘুম না হলে শরীর আর মনের ওপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়ে। তবে ঘুমের উপকারিতা পেতে হলে সেটি হতে হবে স্বাভাবিক ঘুম- স্লিপিং পিল খেয়ে ঘুমালে হবে না। কারণ, স্লিপিং পিল আবার ক্যান্সার, ইনফেকশন বা অন্য রকমের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। যখন আমরা ঘুমাই না, বা কম ঘুমাই, তখন শরীর এবং মনের ওপর তার কী প্রভাব পড়ে?
উন্নত বিশ্বে যত রকমের রোগ-ব্যাধিতে মানুষের মৃত্যু ঘটছে, তার অনেকটার সঙ্গেই অনিদ্রার বেশ গুরুতর বা মোটামুটি রকমের সম্পর্ক আছে। যেমন- আলঝেইমার, ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, ডিপ্রেশন, দুশ্চিন্তা বা এমনকি আত্মহত্যা।
আপনার শরীরের ভেতর যত ধরনের তন্ত্র আছে, বা আপনার মস্তিস্কে যত রকমের নেটওয়ার্ক বা কাজ-কর্ম চলে, তার সবই কিন্তু ঘুমের সময় বিশ্রাম পায়। যখন আপনি যথেষ্ট পরিমাণে ঘুমাতে পারেন না, তখন এগুলোর কাজ-কর্ম ব্যাহত হয়।
রাতে ঘুমাতে হবে সাত হতে নয় ঘণ্টা। আপনার ঘুম যদি সাত ঘণ্টার কম হয়, তখন আপনার মস্তিষ্ক এবং শরীরের ওপর এর কী প্রভাব পড়ছে তা মাপতে পারেন। আপনার শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং আপনার দেহের জোর হ্রাস পেতে থাকে। যদি আপনি একটানা ২০ ঘণ্টা সজাগ থাকেন, অতিরিক্ত মদ পান করে মাতাল হলে যে অবস্থায় হয়, আপনার অবস্থাটা দাঁড়াবে সে রকম। অনিদ্রা বা কম ঘুমের বেলায় যেটা সমস্যা তা হলো, আমরা আসলে বুঝতে পারি না যে, এটি আপনার ওপর কতটা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।
সাধারণভাবে বলতে গেলে, এখন আমরা অনেক দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছি, আর কাজে যাওয়ার জন্য রাস্তায়ও থাকছি অনেক দীর্ঘ সময় ধরে। কাজে যাওয়ার জন্য আমরা ঘর থেকে বের হই অনেক আগে, আর কাজ শেষে সন্ধ্যায় বাড়িতেও ফিরি অনেক দেরিতে। আমরা আমাদের সামাজিক এবং পারিবারিক জীবনকেও বাদ দিতে চাই না।

কাজেই পরিবারের সদস্যদের সময় দেওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে ঘোরাঘুরি, টেলিভিশন দেখা.. এসবের  পেছনেই কিন্তু সারাটা দিন চলে যায়। আর এত সময় দিতে গিয়ে যখন সময়ের টানাটানি পড়ে, তখন আমরা ঘুমের সময়টার ওপরই ভাগ বসাই।
ঘুমের একটা ভাবমূর্তির সংকটও আছে। যদি আপনি কাউকে বলেন যে, আপনি রাতে নয় ঘণ্টা ঘুমান, তারা আপনার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলবে, সত্যিই তাই! তাদের মাথায় হয়তো তাৎক্ষণিক এই চিন্তাটাই আসবে, লোকটা এতটা অলস!
কাজেই বেশি ঘুমানোকে এখন খারাপ চোখে দেখা হয়। লোকজন এখন কত কম ঘুমায়, সেটা নিয়ে বড়াই করে বেড়ায়। কিন্তু বিষয়টা সব সময় এরকম ছিল না। যখন একটি শিশু ঘুমায়, কেউ কিন্তু বলবে না, বাচ্চাটা কি অলস। কারণ, আমরা জানি যে একজন শিশুর জন্য ঘুমটা কত জরুরি। কিন্তু শৈশবের সঙ্গে আপনার প্রাপ্তবয়স্ক জীবনটা যদি মিলিয়ে দেখেন, তাহলে বুঝবেন কোথাও একটা বিরাট তফাৎ ঘটে গেছে।- বিবিসি

আরো পড়ুন  

×