ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৮ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

নকল ওষুধ চেনার ৪টি চমকে দেওয়া কৌশল যা আপনার জীবন বাঁচাতে পারে!

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ৭ আগস্ট ২০২৫

নকল ওষুধ চেনার ৪টি চমকে দেওয়া কৌশল যা আপনার জীবন বাঁচাতে পারে!

ছবি: সংগৃহীত

জাল ও নকল ওষুধ বিশ্বব্যাপী একটি গুরুতর সমস্যা, বিশেষ করে নিম্নআয়ের দেশগুলোতে, যেখানে ১০–৩০ শতাংশ ওষুধই নকল হতে পারে বলে জানিয়েছে CDC (সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন)। তুলনামূলকভাবে ধনী দেশগুলো—যেমন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরাষ্ট্রগুলোতে—এই হার মাত্র ১ শতাংশের মতো। এসব নকল ওষুধ শুধু অকার্যকরই নয়, বরং এতে ক্ষতিকর উপাদানও থাকতে পারে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।

এই বিপজ্জনক জাল ওষুধ ঠেকাতে বিজ্ঞানী ও গোয়েন্দারা একসঙ্গে কাজ করছেন—প্রয়োগ করছেন সহজ পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি।

প্রথম ধাপ: সহজ উপায়ে চিহ্নিত করা
প্রাথমিকভাবে, তদন্তকারীরা ওষুধের মোড়কে বানান ভুল, ভুল রঙ অথবা পুরোনো ডিজাইনের মতো বিষয় খুঁজে দেখেন। এসব স্পষ্ট ত্রুটি অনেক সময় নকল পণ্য শনাক্ত করার প্রধান সূত্র হয়ে দাঁড়ায়।

দ্বিতীয় ধাপ: ভিডিওমিটার স্ক্যানিং
‘ভিডিওমিটার’ নামের একটি যন্ত্র আল্ট্রাভায়োলেট ও ইনফ্রারেড আলো ব্যবহার করে মোড়কের সূক্ষ্ম রঙের পার্থক্য চিহ্নিত করে। এটি Pfizer-এর গবেষণাগারে ব্যবহৃত হয় এবং আলো ঝলকানো কাজের কারণে একে মজা করে ‘ডিস্কো বল’ নামে ডাকা হয়। একই রকম রঙের প্যাটার্ন দেখে অনেক সময় এক উৎস থেকে আসা একাধিক নকল ওষুধ শনাক্ত করা যায়।

তৃতীয় ধাপ: র‍্যামান স্পেকট্রমিটার
এটি একটি হাতে ধরার মতো ছোট যন্ত্র, যা সরাসরি ওষুধের রাসায়নিক গঠন পরীক্ষা করে। Pfizer-এর আসল ওষুধের ডেটাবেসের সঙ্গে এটি স্যাম্পলের মিল খুঁজে দেখে। লাল ‘X’ মানে নকল, আর সবুজ টিকচিহ্ন মানে আসল। এটি দ্রুত ফল দেয়, সহজে বহনযোগ্য এবং নমুনাটি নষ্ট করে না।

চতুর্থ ধাপ: আরও গভীর পরীক্ষাগারে বিশ্লেষণ
যদি আরও পরীক্ষা দরকার হয়, তাহলে ‘ইনফ্রারেড স্পেকট্রোস্কপি’ ও ‘পাউডার এক্স-রে ডিফ্র্যাকশন’-এর মতো প্রযুক্তি দিয়ে ওষুধের উপাদান বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করা হয়। অনেক সময় এতে ‘ক্রাশ করা ড্রাইওয়াল’-এর মতো অদ্ভুত ফিলার পাওয়া যায়, যা নকল ওষুধে ব্যবহৃত হয়।

মূল পার্থক্য: গুণগত মানের অনুপস্থিতি
নকল ওষুধ দেখতে আসলের মতো হলেও এতে গুণগত মান বজায় থাকে না। আসল ওষুধ প্রতিবার একই মান বজায় রেখে তৈরি হয়, কিন্তু নকল ওষুধের প্রতিটি ব্যাচে গঠন আলাদা হতে পারে।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তি অপরিহার্য হলেও, ঐতিহ্যবাহী গোয়েন্দা কাজ—যেমন প্যাকেজিং বিশ্লেষণ, উৎস শনাক্তকরণ ইত্যাদি—জাল ওষুধ চিহ্নিত ও নির্মূলে এখনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আবির

×