
ছবি: সংগৃহীত
জীবনের লক্ষ্য, আগ্রহ ও জীবনধারার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি চাকরি পাওয়া সহজ নয়। তবে এটি অসম্ভবও নয়—যদি থাকে সঠিক পরিকল্পনা, কিছু গবেষণা এবং ধৈর্য। আজকের প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে নিজের জন্য উপযোগী পেশা খুঁজে পেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করাই সবচেয়ে কার্যকর।
প্রথমেই আপনাকে নিজেকে বোঝা জরুরি—আপনি কী চাইছেন, কেন চাকরি খুঁজছেন। আপনি কি একই ধরণের কাজ অন্য কোথাও করতে চান, নাকি একেবারেই নতুন কোনো পেশায় প্রবেশ করতে চান? এটি কি আপনার প্রথম চাকরি, নাকি বিরতির পর আবার কর্মজীবনে ফিরছেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি আপনি নিজেই জানেন, তাহলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়ে যাবে।
এরপর আসুন চাকরির ধরন ও দায়িত্ব সম্পর্কে। বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন পদের নাম ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বগুলো নিয়ে পড়াশোনা করুন। এতে আপনি নিজের দক্ষতার সাথে কোন কোন পদ মানিয়ে যায়, সেটা বুঝতে পারবেন। একইসঙ্গে বোঝা যাবে, কোথায় কোথায় আপনাকে আরও দক্ষতা বাড়াতে হবে।
যে কোনো চাকরি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বেতন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যে পদের জন্য আগ্রহী, তার গড় বেতন কাঠামো—বিশেষ করে আপনার শহর বা অঞ্চলে—তা সম্পর্কে ধারণা রাখা দরকার। এতে করে আপনি বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা নিয়ে চাকরির জন্য প্রস্তুত হতে পারবেন।
এরপর অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে। কিছু বিষয় হয়তো আপনার কাছে অত্যন্ত জরুরি—যেমন: চাকরির সেক্টর, সর্বনিম্ন বেতন, স্বাস্থ্যসেবা বা অফিসের অবস্থান। অন্যদিকে, কিছু বিষয়ে নমনীয়তা দেখানো যায়—যেমন: পদের নাম, অফিসের আকার, বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ বা ভ্রমণসংক্রান্ত প্রয়োজন। এই বিষয়গুলো তালিকা করে নিলে অপ্রয়োজনীয় চাকরিগুলো আপনি সহজেই বাদ দিতে পারবেন।
চাকরি খোঁজার সময় শব্দচয়নে সচেতন হতে হবে। শুরুতে সাধারণ শব্দ ব্যবহার করে সার্চ করুন, যেমন: “কাস্টমার সাপোর্ট”। এরপর ধীরে ধীরে নির্দিষ্ট করুন—যেমন: “সিনিয়র কাস্টমার সাপোর্ট অফিসার”। এতে করে সার্চ রেজাল্ট কম আসবে, তবে তা হবে বেশি প্রাসঙ্গিক ও মানানসই।
চাকরি খোঁজার বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ফিল্টার ব্যবহার করুন। যেমন: বেতন, অবস্থান, প্রতিষ্ঠানের নাম, অভিজ্ঞতা প্রভৃতি দিয়ে আপনি ফলাফল ছোট করে নিতে পারেন। প্রয়োজনে “অয়ান-ক্লিক এপ্লাই” বা “সেভড রেজ্যুমে” অপশন ব্যবহার করুন, যাতে আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। আবেদন করার আগে প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিবেশ সম্পর্কে কর্মীদের রেটিং ও মতামত পড়ে নেওয়াও ভালো অভ্যাস।
সবশেষে বলতেই হয়—ধৈর্যই সাফল্যের চাবিকাঠি। হয়তো আপনি একদিনে উপযুক্ত চাকরি পাবেন না। কিন্তু প্রতিদিন নিয়মিত একটু একটু করে চেষ্টা করলে, প্রস্তুতি নিলে এবং পরিকল্পিতভাবে এগোলে কাঙ্ক্ষিত চাকরিটি আপনার হাতেই ধরা দেবে।
আবির