
ছবি: প্রতীকী
গরমের তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এয়ারকন্ডিশনার (এসি) ব্যবহার বাড়ে। তবে এটির অতিরিক্ত ব্যবহার ও অব্যবস্থাপনা উচ্চ বিদ্যুৎ বিল, সাথে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই স্মার্ট ও দক্ষ ব্যবহারে কম খরচে শীতল থাকা, এসির আয়ুষ্কাল বাড়ানো এবং ঘরের বাতাসকে স্বাস্থ্যকর রাখা সম্ভব। চলুন জেনে নিই কীভাবে সহজ কিছু টিপস মেনে এসির ব্যয় কমানো এবং আয়ুষ্কাল বাড়ানো সম্ভব।
বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায়
১. সঠিক তাপমাত্রা সেট করুন
২৪ থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে এসির তাপমাত্রা রাখুন। এতে পর্যাপ্ত শীতলতা বজায় থাকবে এবং কম্প্রেসর অতিরিক্ত কাজ করবে না, ফলে বিদ্যুৎ খরচ কমবে। বেশি ঠাণ্ডা রাখলে বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায় কিন্তু তাপমাত্রার পার্থক্য খুব সামান্য।
২. এসির সাথে সিলিং ফ্যান ব্যবহার করুন
এসির সঙ্গে সিলিং ফ্যান চালালে ঠান্ডা বাতাস ঘরের মধ্যে ভালোভাবে ছড়ায়। এতে আপনি এসির তাপমাত্রা একটু বাড়িয়ে রাখতে পারবেন আর কম বিদ্যুৎ খরচ হবে।
৩. ফাঁক ফোকর সিল করুন ও ভালভাবে ইনসুলেশন করুন
দরজা, জানালা বা দেয়ালে ফাঁক থেকে ঠান্ডা বাতাস বাইরে বেরিয়ে যায়। ওয়েদার স্ট্রিপিং, সিল্যান্ট বা মোড়ক ব্যবহার করে ফাঁক গুলো বন্ধ করুন। এতে এসির কাজের চাপ কমবে ও বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।
৪. ব্যবহার না করলে এসি বন্ধ রাখুন
কেউ বাড়িতে না থাকলে এসি চালিয়ে রাখাটা অত্যন্ত অপচয়। টাইমার বা স্মার্ট প্লাগ ব্যবহার করে এসি অপ্রয়োজনীয় সময়ে বন্ধ রাখুন।
৫. নিয়মিত ফিল্টার পরিষ্কার করুন
ময়লা জমে গেলে ফিল্টার ব্লক হয়ে এসি কাজ করতে বেশি বিদ্যুৎ নেয়। প্রতি ২-৪ সপ্তাহে ফিল্টার পরিষ্কার বা বদলানো উচিত।
এসির আয়ুষ্কাল বাড়ানোর উপায়
মাসিক ফিল্টার পরিষ্কার: পরিষ্কার ফিল্টার এসির পারফরমেন্স ভালো রাখে ও যন্ত্রের ক্ষতি কমায়।
প্রফেশনাল সার্ভিসিং: বছরে একবার প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে এসির সার্ভিস করানো জরুরি। এতে শীতলকরণের দক্ষতা বাড়ে ও যন্ত্রের জীবন বাড়ে।
অতিরিক্ত ব্যবহার এড়ান: এসি দীর্ঘক্ষণ চালালে কম্প্রেসর ও অন্যান্য অংশের ক্ষতি হয়। ফ্যান বা প্রাকৃতিক বায়ুর সাথে মিলিয়ে ব্যবহার করুন।
আউটডোর ইউনিট পরিষ্কার রাখুন: বাইরে থাকা ইউনিট থেকে ধুলো, পাতা সরিয়ে রাখুন এবং সম্ভব হলে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখুন।
ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করুন: বিদ্যুৎ ফ্লাকচুয়েশন থেকে এসি রক্ষা করতে স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করুন।
সুস্থ থাকার জন্য এসি ব্যবহারের টিপস
পরিষ্কার ফিল্টার বজায় রাখুন: ধুলো ও অ্যালার্জেন কমাবে, বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট রোগীদের জন্য উপকারী।
মোল্ড গঠনের প্রতিরোধ: এসির ডাক্ট ও কয়েলে সঠিক পরিচর্যা না করলে ছত্রাক জন্মায়, যা স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ।
হঠাৎ ঠাণ্ডা পরিবর্তন এড়ান: খুব কম তাপমাত্রায় এসি চালালে ঠান্ডা লেগে শ্বাসকষ্ট বা সর্দি হতে পারে। ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হওয়ার চেষ্টা করুন।
ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করুন: মাঝে মাঝে জানালা খুলুন বা এক্সহাস্ট ফ্যান চালিয়ে তাজা বাতাস প্রবাহিত করুন।
ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার: উচ্চ আর্দ্রতা থাকলে মোল্ড এবং এলার্জি বেড়ে যায়। প্রয়োজনে আলাদা ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন।
এই সহজ কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই এই গরমে কম বিদ্যুৎ খরচে, সুস্থ ও আরামদায়ক থাকতে পারবেন। আপনার এসির সঠিক ব্যবহারে পরিবেশও রক্ষিত হবে এবং খরচও কমবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
রাকিব