ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

অস্বাভাবিক জোয়ারের জলোচ্ছ্বাসে লন্ডভন্ড কুয়াকাটা ভাঙনরোধে স্থায়ী প্রটেকশনের দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৮:৪৫, ২৬ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৮:৪৫, ২৬ জুলাই ২০২৫

অস্বাভাবিক জোয়ারের জলোচ্ছ্বাসে লন্ডভন্ড কুয়াকাটা ভাঙনরোধে স্থায়ী প্রটেকশনের দাবিতে মানববন্ধন

ছবিঃ সংগৃহীত

সাগরের অব্যাহত ভাঙনে লন্ডভন্ড কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরক্ষা প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে আজ শনিবার বেলা ১১টায় কুয়াকাটা সৈকতে মানববন্ধন সমাবেশ করা হয়েছে।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে কুয়াকাটা পৌর বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুয়াকাটা পৌরশাখা, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক), কুয়াকাটা ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশন, কুয়াকাটা বয়েজ ক্লাব, কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন, পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

প্রসঙ্গত, নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে শুক্রবার কুয়াকাটা সৈকত লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। উত্তাল ঢেউ দীর্ঘ সময় ধরে সৈকত লাগোয়া শোরলাইনে ধ্বংসের তাণ্ডব চালায়।

আগেই অনেকটা বিধ্বস্ত অবস্থায় থাকা নির্মাণাধীন ১৩০০ মিটার দীর্ঘ সড়কটির ফুটপাত তছনছ হয়ে যায়। সৈকতের শূন্য পয়েন্ট থেকে দুইদিকের প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে এখন শুধু ধ্বংসের চিহ্ন। কংক্রিটের ভগ্নাংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সৈকত লাগোয়া দোকানিরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

ভাঙনের তাণ্ডব দেখে কুয়াকাটার ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারীসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

সৈকত লাগোয়া মসজিদ, মন্দির, ট্যুরিজম পার্কসহ ছোট-বড় স্থাপনার মালিকরাও আজকের সাগরের উন্মাদনায় চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

একদিকে কুয়াকাটা সৈকতের ভাঙন রোধে এই বছর জরুরি কোনো প্রটেকশন দেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। অন্যদিকে ভাঙন রোধে সৈকত রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরক্ষা প্রকল্প দীর্ঘ দুই যুগ ধরে ঝুলে আছে অনিশ্চয়তায়।

ফলে এখানকার বিনিয়োগকারীরা চরম উদ্বিগ্ন। এই প্রেক্ষাপটে আজ ২৬ জুলাই শনিবার কুয়াকাটার ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মানববন্ধন সমাবেশ করেন।

পর্যটন ও পরিবেশ উন্নয়ন কর্মী কেএম বাচ্চু বলেন, “আজকের কুয়াকাটার ভাঙন দেখে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা সরকারের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সভাপতি ও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক)-এর সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, “এই মুহূর্তে দেশের স্বার্থে, জাতীয় স্বার্থে তথা কুয়াকাটার স্বার্থে জরুরি প্রটেকশনসহ স্থায়ী প্রতিরক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। এটি দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবি আমাদের।”

পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়াস্থ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহআলম বলেন, “অস্বাভাবিক জোয়ারের ঢেউয়ে কুয়াকাটা সৈকতের শোরলাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানানো হয়েছে। আজ পরিদর্শন করে ট্যুরিজম পার্ক থেকে শূন্য পয়েন্ট পর্যন্ত জিওব্যাগ, জিওটিউব দিয়ে প্রটেকশনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে।”

কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক, কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ইয়াসীন সাদেক জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে পৌরসভার পক্ষ থেকেও কিছু ফান্ডিং করে যৌথভাবে দ্রুততম সময়ে অন্তত ট্যুরিজম পার্ক (ডিসি পার্ক) থেকে শূন্য পয়েন্ট পর্যন্ত জরুরি প্রটেকশনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
 

 
 

মারিয়া

×