ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

দুঃখও এক অতিথি—জীবনকে বুঝতে শেখায় রুমির ‘অতিথিশালা’

শেখ ফরিদ

প্রকাশিত: ১৭:৫৭, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

দুঃখও এক অতিথি—জীবনকে বুঝতে শেখায় রুমির ‘অতিথিশালা’

ছবি সংগৃহীত

অতিথিশালা
— জালালউদ্দিন রুমি 
এই মানুষজীবন এক অতিথিশালা,
প্রতিটি সকালেই ঘটে নতুন আগমন।
একটি আনন্দ, একটি বিষাদ, একটুখানি কঠোরতা,
হঠাৎ জেগে ওঠা কোনো ক্ষণিক অনুভব—
এসে পড়ে এক এক করে, অচেনা অতিথির মতো।
তাদের সবাইকে স্বাগত জানাও,
সম্মানে করো আপ্যায়ন।
যদি আসে দুঃখের দল,
তারা যদি তোমার ঘর খালি করে
সব আসবাবপত্রসহ—
তবুও তাদের মর্যাদার আসন দাও।
হয়তো সে করছে প্রস্তুতি
নতুন কোনো আনন্দের জন্য।
অন্ধকার ভাবনা, লজ্জা, কিংবা বিষ,
তাদেরও হাসিমুখে দরজায় গিয়ে বলো— এসো।
ভেতরে এসে বসো কিছুক্ষণ।
যেই আসুক না কেন, কৃতজ্ঞ থাকো তার প্রতি,
কারণ প্রত্যেকেই এসেছে
অপর পার থেকে প্রেরিত এক পথপ্রদর্শক হয়ে।

 

জীবন কি শুধুই সুখের গল্প? না, জীবন আসলে এক বিশাল অতিথিশালা—এই ভাবনাটিই চিরকালীন সুফি সাধক মাওলানা জালালউদ্দিন রুমি তার কবিতায় তুলে ধরেছেন।

প্রতিটি সকাল, প্রতিটি দিন আমাদের জীবনে এনে দেয় নতুন নতুন অতিথি—আনন্দ, দুঃখ, লজ্জা, ক্রোধ, কিংবা এক অজানা উদ্বেগ। আমরা অনেকেই চাই, জীবনে যেন শুধু ভালো জিনিসগুলো আসুক—ভালোবাসা, প্রশংসা, স্বস্তি। কিন্তু রুমি বলেন, “যেই আসুক না কেন, কৃতজ্ঞ থাকো তার প্রতি।” কারণ, প্রত্যেক অনুভূতি এসেছে আমাদের ভেতরের ঘরকে পরিষ্কার করতে, নতুন কিছু শেখাতে।

এই কবিতা আমাদের শেখায় "অস্বস্তিকেও গ্রহণ করার সাহস"। যেসব দুঃখ বা অন্ধকার ভাবনা আমাদের এলোমেলো করে দেয়, তারাও হয়তো ভেতরে কোনো আলো জ্বালিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাদের দায়িত্ব শুধু একটাই—প্রতিটি অনুভূতিকে স্বাগত জানানো, এবং তার সম্মান করা।
 

এসএফ

×