পুরস্কার হাতে মিতিয়া ওসমান।
পাবলিশহার এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ অর্জন করেছেন বাংলাদেশের প্রকাশক মিতিয়া ওসমান। প্রকাশনা শিল্পের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি অন্য নারীদের পথ দেখানো এবং অনুপ্রাণিত করার স্বীকৃতি স্বরূপ আন্তর্জাতিক এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয় তাকে।
সারাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা নারী প্রকাশকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘পাবলিশার’ এই অ্যাওয়ার্ডের প্রবর্তক। প্রতি বছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রকাশকদের মধ্যে পাবলিশহার এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
বর্তমানে ইতালিতে চলছে বিশ্বের শিশুতোষ বইয়ের সবচেয়ে বড় এবং প্রাচীনতম মেলা বোলোনিয়া চিলড্রেনস বুক ফেয়ার। ৬১তম আসরের প্রথম দিনে সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ময়ূরপঙ্খির প্রকাশক এবং আগামী প্রকাশনীর নির্বাহী পরিচালক মিতিয়া ওসমানের হাতে পাবলিশহার এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়। এই পুরস্কারকে বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
পাবলিশহার-এর ওয়েব সাইট থেকে জানা যায়, মেলা শুরুর আগে ৩০ দেশের ১১৩ জন প্রকাশককে প্রাথমিকভাবে পুরস্কারের জন্য মনোনিত করা হয়। পরে নানা বিচার বিশ্লেষণ শেষে ৯ বিভাগে তিনজন করে ফাইনালিস্টের নাম ঘোষণা করেন আয়োজকরা। তখন ‘এমার্র্জিং লিডার’ বিভাগের শর্টলিস্টে ওঠে আসে মিতিয়া ওসমানের নাম। অন্য দুই দেশ থেকে একই বিভাগে মনোনয়ন পান প্রকাশক ফ্যারনান্দ ফেরেইরা এবং ক্যাসাই রক্স। ছবি ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতিসহ তিন ফাইনালিস্টের নাম গত কিছুদিন ধরে প্রচার করে আসছিলেন আয়োজকরা। ফলে শেষতক কে হবেন এমার্জিং লিডার তা নিয়ে বাড়ছিল কৌতুহল। অবশেষে সোমবার রাতে চূড়ান্ত বিজয়ী হিসেবে মিতিয়া ওসমানের নাম ঘোষণা করা হয়।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি ইতালির বোলোনিয়া শহর থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। তখন দেখা যায়, বেশ জাঁকজমকপূর্ণ একটি আয়োজন। বিপুল সংখ্যক প্রকাশক পরিদর্শকের উপস্থিতিতে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়। পুরস্কারের মঞ্চ থেকে মিতিয়া ওসমানের নাম ঘোষণা হতেই উপস্থিত প্রকাশকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে থাকেন। দর্শক সারিতে বসে উল্লাস ধ্বনি এবং করতালির মাধ্যমে মিতিয়া ওসমানকে অভিনন্দিত করেন তারা।
এর আগে সকালে মেলার একটি সেমিনারে বিশেষ বক্তৃতা করেন মিতিয়া ওসমান। ‘দি পাওয়ার অব কোলাবরেশন \ ওমেন ইন পাবলিশিং নেটওয়ার্কস’ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তিনি।
পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়ে অনুভূতি জানতে ঢাকা থেকে মিতিয়া ওসমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বাবা দেশের আরেক খ্যাতিমান প্রকাশক ওসমান গনি জনকণ্ঠকে পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মেয়ের সাফল্যে আমি বাবা হিসেবে অত্যন্ত গর্বিত। এই আনন্দের সীমা নেই। শুধু আমার জন্য নয়, বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পের জন্যও খবরটি আনন্দের। এতে করে বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্প আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মর্যাদার আসন লাভ করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মিতিয়া ওসমান অমর একুশে বইমেলায় সর্বাধিক সংখ্যক মান সম্পন্ন শিশতোষ বই প্রকাশের জন্য একাধিকবার বাংলা একাডেমি কর্তৃক পুরস্কৃত হয়েছেন। ফ্র্যাংকফুর্ট বইমেলাসহ পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য অনেক বইমেলায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় এসেছে নতুন এই সাফল্য।
এম হাসান