
ছবি: সংগৃহীত
ডার্ক চকলেট শুধু স্বাদের জন্যই নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও এক অনন্য উপকারী মিষ্টান্ন। এতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্ল্যাভোনয়েড ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান যা হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক ও ত্বকের যত্নে সহায়তা করে। পরিমিত পরিমাণে ডার্ক চকলেট খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
দুধ চকলেটের তুলনায় ডার্ক চকলেটে কোকো’র পরিমাণ বেশি ও চিনি কম থাকে। এতে উচ্চ রক্তচাপ কমে, রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকে এবং ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ে। এটি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়, মানসিক চাপ কমায় এবং মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।
নিচে দেওয়া হলো ১০টি কারণ, কেন ডার্ক চকলেট হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ মিষ্টি খাবার:
১. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর ডার্ক চকলেটে ফ্ল্যাভোনয়েড ও পলিফেনলের মতো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং বয়সজনিত ও দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
২. হৃদ্যন্ত্রের সুস্থতায় সহায়ক এর ফ্ল্যাভোনয়েড রক্তচাপ কমায়, রক্ত চলাচল উন্নত করে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়। নিয়মিত ও পরিমিত গ্রহণে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
৩. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায় ডার্ক চকলেট রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে মস্তিষ্ককে বেশি সক্রিয় করে তোলে। এতে থাকা ক্যাফেইন ও থিওব্রোমিন মনোযোগ ও সজাগতা বাড়ায়।
৪. মেজাজ ভালো করে এটি খেলে শরীরে এন্ডরফিন ও সেরোটোনিন নামক ‘হ্যাপি হরমোন’ উৎপন্ন হয়, যা মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ফেনাইলইথাইলামিন হতাশা ও মানসিক চাপ দূর করতেও ভূমিকা রাখে।
৫. ত্বকের যত্নে সহায়ক ডার্ক চকলেটের ফ্ল্যাভোনয়েড সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে, রক্ত চলাচল উন্নত করে এবং ত্বকে আর্দ্রতা ও উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
৬. দেহে প্রদাহ কমায় এতে থাকা উপাদানগুলো শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের মতো জটিল রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
৭. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে উচ্চ কোকোযুক্ত ডার্ক চকলেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, ফলে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য এটি তুলনামূলক নিরাপদ মিষ্টি বিকল্প হতে পারে।
৮. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ডার্ক চকলেট খেলে পেট ভরা মনে হয় ও অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। তাই এটি স্বাস্থ্যকর ডায়েটের অংশ হতে পারে।
৯. পাচন প্রক্রিয়া ও অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এতে থাকা ফাইবার উপকারী ব্যাকটেরিয়ার খাবার হিসেবে কাজ করে, ফলে হজমশক্তি, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও মনের স্থিতি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
১০. গুরুত্বপূর্ণ খনিজের উৎস ডার্ক চকলেট আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, কপার ও জিঙ্কের মতো খনিজ সরবরাহ করে, যা রক্তের অক্সিজেন পরিবহন, পেশির কার্যকারিতা ও হাড়ের স্বাস্থ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তবে মনে রাখতে হবে, ৭০% বা তার বেশি কোকোযুক্ত ডার্ক চকলেট বেছে নিতে হবে এবং অতিরিক্ত চিনি বা ক্ষতিকর চর্বি যুক্ত চকলেট এড়িয়ে চলতে হবে। সঠিক মাত্রায় খেলে ডার্ক চকলেট হতে পারে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত মিষ্টি বিকল্প।
সূত্র: এনডিটিভি
এম.কে.