
সংগৃহীত প্রতীকী ছবি
সুখ, যা মানুষ জীবনভর খুঁজে ফেরে, তা কি সত্যিই অধরা? বিশ্বখ্যাত মার্কিন সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমস-এর অনলাইন সংস্করণে সুস্থতা বিষয়ে লেখালেখি করা জ্যানসি ডুন বশ বহু বছর ধরে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানসিক বিশেষজ্ঞ, মনোবিদ ও মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শদাতাদের সঙ্গে কথা বলে তিনি সুখী হওয়ার সেরা পাঁচটি উপায় বাতলে দিয়েছেন, যা কেবল ক্যারিয়ার বা অর্থসম্পদের মধ্যে নয়, বরং জীবনের গভীরতর দিকের মধ্যেই লুকিয়ে আছে।
১. আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষ কারা? তাঁদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন? জ্যানসি ডুন বশ মনে করেন, প্রকৃত সুখের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে আপনার আপনজনদের সঙ্গে আপনার সম্পর্কের গভীরতায়। ক্যারিয়ার, সফলতা বা অর্থসম্পদ মানুষকে সাময়িক তৃপ্তি দিলেও, দীর্ঘস্থায়ী সুখের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনার জীবনের প্রিয় মানুষগুলোর সঙ্গে আপনার সম্পর্কের মান। বন্ধুত্ব, সামাজিক বলয় এবং নতুন সম্পর্ক স্থাপনও মানুষকে সুখী করে তোলে।
২. আপনি আজ কেন কৃতজ্ঞ? প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে দিনের কোন কোন বিষয়ের জন্য আপনি কৃতজ্ঞ, তা মনে করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ছোট ছোট ইতিবাচক ঘটনাগুলো টুকে রাখুন এবং সেগুলোর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। এই চর্চা আপনাকে সুখী হতে সাহায্য করবে। মনে রাখবেন, একটি ছোট্ট 'ধন্যবাদ' বলার অসীম ক্ষমতা রয়েছে যা আপনার মনকে সতেজ করে তোলে।
৩. আপনার জীবনে কি শৃঙ্খলার অভাব? সুখী জীবনের জন্য শৃঙ্খলাবদ্ধতার কোনো বিকল্প নেই। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠা অত্যন্ত জরুরি। দৈনন্দিন, সাপ্তাহিক, মাসিক, ষান্মাসিক এবং বার্ষিক লক্ষ্য নির্ধারণ ও তা পূরণের চেষ্টা করুন। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার যেন একটি সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকে, তা নিশ্চিত করুন। এই শৃঙ্খলা আপনার জীবনকে আরও অর্থবহ করে তুলবে।
৪. প্রতিদিন এমন কিছু করুন... প্রতিদিন এমন কিছু কাজে নিজেকে নিয়োজিত করুন যা আপনি ভালোবাসেন এবং যা আপনাকে সুখী করে। এটি বই পড়া, মানুষের সঙ্গে গল্প করা, গাছের যত্ন নেওয়া, ঘুরে বেড়ানো, হাঁটা, ব্যায়াম করা, রান্না করা, ছবি আঁকা, সৃজনশীল কাজ করা, নতুন কোনো ভাষা বা কোর্স শেখা, অথবা প্রকৃতি, পোষা প্রাণী বা শিশুদের সঙ্গে সময় কাটানো—যেকোনো কিছুই হতে পারে। নিজের পছন্দের কাজ করা মনকে ফুরফুরে রাখে।
৫. দয়ালু হোন: প্রতিদিন অন্যের জন্য কিছু করার চেষ্টা করুন। সহনশীল হন এবং ক্ষমা করতে শিখুন। কোনো পরিস্থিতিতে হুট করে প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে বরং নিজেকে সংযত করুন। ইতিবাচক কথা বলা এবং চিন্তা করার চর্চা করুন। নিজের প্রতি, অন্যের প্রতি, যেকোনো প্রাণ ও প্রকৃতির প্রতি যতটা সম্ভব দয়ালু আচরণ করুন। অন্যের জন্য করা ছোট একটি ভালো কাজ আপনার নিজের মনেও শান্তি এনে দেবে।
জ্যানসি ডুন বশের এই পরামর্শগুলো মূলত আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ছোট ছোট পরিবর্তন এনে বৃহত্তর সুখ অর্জনের পথ দেখায়।
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস
সাব্বির