
ছবি: সংগৃহীত
মানবদেহে কিডনি একটি নিঃশব্দ শ্রমিকের মতো কাজ করে। রক্ত পরিশোধন, শরীরের তরল ও খনিজের ভারসাম্য রক্ষা। এইসব কাজ নীরবে করে চলে আমাদের বুকের নিচে দুই মুঠোর সমান অঙ্গ দুটি। হার্ট বা পেটের মতো কিডনি সহজে সমস্যার ইঙ্গিত দেয় না।
তবে মজার বিষয় হলো, সুস্থ কিডনি নিজস্ব কিছু 'নিরব সংকেত'-এর মাধ্যমে সুখবর জানায়। অনেক সময় রক্ত পরীক্ষা ছাড়াও কিছু ছোটখাটো লক্ষণ দেখে বোঝা যায় কিডনি ভালো কাজ করছে। নিচে এমন ৫টি লক্ষণ তুলে ধরা হলো—
১. সকালে নিঃশ্বাস থাকে সতেজ ও বিশুদ্ধ: সাধারণত খারাপ নিঃশ্বাস আসে মুখের স্বাস্থ্য বা হজমজনিত সমস্যার কারণে। তবে কিডনি যদি রক্তে থাকা বর্জ্য যেমন ইউরিয়া পরিষ্কার করতে না পারে, তাহলে টক্সিন জমে গিয়ে নিঃশ্বাসে মাছের মতো বা অ্যামোনিয়া ধরনের গন্ধ হয়, বিশেষত সকালে। যদি সকালে মুখ শুকনো বা অদ্ভুত স্বাদ না থাকে এবং ব্রাশ করার আগেই নিঃশ্বাস স্বাভাবিক থাকে, তবে এটি কিডনি ভালো কাজ করছে। এমন এক নীরব সংকেত।
২. সারাদিন স্থিতিশীল শক্তি থাকে: শুধু ঘুম না হওয়াই ক্লান্তির কারণ নয়। সুস্থ কিডনি ‘এরিথ্রোপয়েটিন’ নামের এক হরমোন নিঃসরণ করে, যা লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। এই কোষগুলো শরীরের প্রতিটি কোণে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। সারাদিন ধরে শক্তি স্থির থাকলে, দুপুরে ঘুমঘুম ভাব বা সন্ধ্যায় অবসাদ না এলে, বুঝতে হবে কিডনি শরীরকে সঠিকভাবে শক্তি দিচ্ছে।
৩. ত্বক ময়েশ্চারাইজড থাকে অতিরিক্ত যত্ন ছাড়াই: ত্বক যদি সবসময় শুকনো থাকে, তবে তা কেবল আবহাওয়ার কারণে নয়, শরীরের অভ্যন্তরীণ পানির ভারসাম্যও এর সঙ্গে জড়িত। সুস্থ কিডনি সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মতো খনিজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ত্বককে ভিতর থেকে আর্দ্র রাখে। যদি হাত-পা বা শরীরের নিচের অংশে ত্বক টানটান বা ফাটা না থাকে, তবে এটি কিডনির সঠিক জল নিয়ন্ত্রণের প্রমাণ।
৪. সকালে মুখে ফোলা থাকে না: অনেকেই ভাবেন মুখ ফোলা মানেই রাতে ঘুম কম হয়েছে বা লবণ বেশি খাওয়া হয়েছে। আসলে কিডনি অতিরিক্ত সোডিয়াম ও তরল বের করে দেয়। তাই সকালে চোখ বা মুখ ফোলা থাকলে সেটা কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। সকালে মুখ স্বাভাবিক ও ফোলাভাবহীন থাকলে বোঝা যায় কিডনি সঠিকভাবে কাজ করছে।
৫. পেশি থাকে আরামদায়ক, খিঁচুনি বা ঝাঁকুনি ছাড়াই: খেলাধুলা বা ভুল ভঙ্গিমায় ঘুমানোর কারণে অনেক সময় পেশিতে খিঁচুনি হয়। তবে কিডনি ইলেকট্রোলাইট যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য রক্ষা করে। যদি ঘুমের সময় বা ব্যায়ামের পর পেশি আরামদায়ক থাকে, তবে ধরে নেওয়া যায় কিডনির খনিজ নিয়ন্ত্রণে কোনো সমস্যা নেই।
শহীদ