
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও এক ধাপ বাড়িয়ে তামা ও ওষুধ আমদানির ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। নতুন ঘোষণার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ট্রাম্প সরকার ঘোষণা দিয়েছে, তামার আমদানিতে ৫০% শুল্ক আরোপ করা হবে চলতি জুলাইয়ের শেষ নাগাদ বা ১ আগস্ট থেকে।
ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যে ২০% শুল্ক এখনই কার্যকর হবে এবং এক বছরের মধ্যে এটি ২০০% পর্যন্ত বাড়ানো হবে।
এই ঘোষণাগুলিকে যুক্তরাষ্ট্রের "উৎপাদন ফিরিয়ে আনার কৌশলের" অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লাটনিক।
ট্রাম্প বলেন, “আমরা তামা ঘরে আনবো, ওষুধ ঘরে আনবো।” তার মতে, দেশীয় উৎপাদন বাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে "শিল্প খাতে আত্মনির্ভরশীল" করা জরুরি।
তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই শুল্কে যেমন কিছু খাত লাভবান হবে, তেমনি চাপ বাড়বে সাধারণ জনগণের ওপর, বিশেষত ওষুধের দাম বেড়ে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প বিশ্বের সবচেয়ে বড় হলেও, প্রায় ৪০% ওষুধ আমদানি করে এবং প্রায় ৫০% অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস (API) বিদেশ থেকে আনা হয়।
অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস সরবরাহকারী শীর্ষ দেশগুলো হলো:
- ভারত – ১৮%
- চীন – ১৩%
- ইউরোপীয় ইউনিয়ন – বাকি অংশ
এছাড়া অস্ট্রেলিয়া ও আয়ারল্যান্ডের মতো দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নির্ভরশীল। অস্ট্রেলিয়ার অর্থমন্ত্রী বলেন, “এই ঘোষণা আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
তামা যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যুৎ উৎপাদন, বৈদ্যুতিক যান, সামরিক সরঞ্জাম সবখানেই এর ব্যবহার আছে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র নিজে শুধু অর্ধেক তামা উৎপাদন করতে পারে, বাকি অংশ আমদানি করে।
আমদানির উৎস দেশ:
- চিলি – ৬৫%
- কানাডা – ১৭%
- পেরু – ৬%
নতুন শুল্কে এই দেশগুলোর রপ্তানি ও যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির ব্যয় বড় ধাক্কা খেতে পারে।
চীনের সঙ্গে তুলনা: কে কতটা শক্তিশালী?
তামা
চীন বিশ্বের বৃহত্তম তামা ব্যবহারকারী দেশ, যার চাহিদা বিশ্বের ৫০%-এর বেশি। চীনে ডজনখানেক তামা স্মেল্টার (গলনাগার) আছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে আছে মাত্র ২টি।
ওষুধ
যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মা উৎপাদনের পরিমাণ বেশি হলেও, ২০২৪ সালে $২১২ বিলিয়ন মূল্যের ওষুধ আমদানি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, API উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে, এবং নতুন কারখানা গড়তে বহু বছর লেগে যাবে।
মুমু ২