
ছবি: সংগৃহীত।
প্রতিদিনের অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকসের বদলে পেকান বাদাম খাওয়ার অভ্যাস কোলেস্টেরল কমাতে ও হৃদ্স্বাস্থ্যের উন্নতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে নতুন এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে।
পেন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউট্রিশনাল সায়েন্সেস বিভাগের গবেষকদের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, যাঁরা প্রতিদিন পেকান বাদাম খান, তাঁদের শরীরে হৃদ্রোগের ঝুঁকিপূর্ণ কোলেস্টেরল মাত্রা কমে আসে এবং তাদের খাদ্যাভ্যাসের সামগ্রিক মান উন্নত হয়।
এই গবেষণা American Journal of Clinical Nutrition-এ প্রকাশিত হয়েছে এবং এটি বাদামের স্বাস্থ্যগুণের পক্ষে বাড়তে থাকা প্রমাণভাণ্ডারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
গবেষণায় ২৫ থেকে ৭০ বছর বয়সী মোট ১৩৮ জন অংশগ্রহণকারীকে দুটি দলে ভাগ করা হয়। সকলেই মেটাবলিক সিনড্রোমে আক্রান্ত অথবা ঝুঁকিতে ছিলেন। এই সিনড্রোমের উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে—পেটের স্থূলতা, উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড, কম HDL (ভালো কোলেস্টেরল), উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা।
একটি দল প্রতিদিন ৫৭ গ্রাম পেকান বাদাম খেতে বলা হয়, যাতে তারা আগের মতো অন্য স্ন্যাকস না খায়। অন্য দল আগের মতোই তাদের নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখে।
গবেষণা শেষে দেখা যায়, যারা পেকান বাদাম খেয়েছে তাদের খাদ্যাভ্যাসের মান ছিল ১৭% বেশি উন্নত, এবং তাদের LDL (খারাপ কোলেস্টেরল) কমে এসেছে।
পেকান বাদাম সমৃদ্ধ পলিফেনলে, যা একটি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি (প্রদাহনাশক) যৌগ। গবেষকদের মতে, পলিফেনল রক্তনালীর গঠন ও কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এন্ডোথেলিয়াল ফাংশন উন্নত করতে সাহায্য করে।
যদিও রক্তনালীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের দিক থেকে দুই দলের মধ্যে তেমন পার্থক্য দেখা যায়নি, তবে কোলেস্টেরল ও ডায়েটের গুণগত মানে পেকান স্ন্যাকস গ্রুপ এগিয়ে ছিল।
গবেষণার সহলেখক ও পেন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ক্রিস্টিনা পিটারসন বলেন, “সাধারণ স্ন্যাকস বাদ দিয়ে পেকান বাদাম খাওয়ার অভ্যাস রক্তের কোলেস্টেরলসহ হৃদ্রোগের গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ উপাদানগুলোতে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “পেকান বাদাম খাওয়ার ফলে খাদ্যাভ্যাসে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ফাইবার ও পলিফেনলের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা কোলেস্টেরল কমানোর পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে বলে মনে হচ্ছে।”
প্রতিদিনের স্ন্যাকসের তালিকায় পেকান বাদামকে যুক্ত করলে তা কেবল কোলেস্টেরল কমাতেই সাহায্য করে না, বরং খাদ্যাভ্যাসের গুণগত মানও উন্নত হয়। বিশেষ করে যারা মেটাবলিক সিনড্রোমের ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাদের জন্য এটি হতে পারে একটি কার্যকরী, স্বাস্থ্যকর বিকল্প।
সূত্র: https://short-link.me/16RI1
মিরাজ খান