ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

ফ্যাটি লিভার রুখতে ক্যালোরি কমানো নয়, দরকার সঠিক পুষ্টি: পুষ্টিবিদের পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৬:০১, ৪ জুলাই ২০২৫

ফ্যাটি লিভার রুখতে ক্যালোরি কমানো নয়, দরকার সঠিক পুষ্টি: পুষ্টিবিদের পরামর্শ

ছবিঃ সংগৃহীত

লিভার ও গলব্লাডার সমস্যায় ভোগা অনেকেই নানা রকম খাদ্যবিধির আশ্রয় নেন। কিন্তু পুষ্টিবিদ অলিভিয়া হ্যাস বলছেন, ফ্যাটি লিভার বা গলব্লাডার রক্ষা করতে ক্যালোরি কমানো বা খাদ্যতালিকা সংকুচিত করাই সমাধান নয়। বরং লিভারকে ‘পুষ্টি দিয়ে পুনরুজ্জীবিত’ করতে হবে।

সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে তিনি বলেন, "লিভারকে না খাইয়ে রাখা নয়, বরং খাবার দিয়েই চিকিৎসা শুরু করুন।" তিনি আরও বলেন, "লিভার একটাই কিন্তু ৫০০-র বেশি কাজ করে – হরমোন প্রসেসিং থেকে শুরু করে ডিটক্স, মেটাবলিজম, পিত্ত উৎপাদন, রক্ত ছাঁকনি, রোগ প্রতিরোধ – সব কিছুতেই এর ভূমিকা। এটা আমাদের শরীরের ‘লংজিভিটি অর্গান’। তাই একে সঠিকভাবে পুষ্টি দিতে হবে।"

ফ্যাটি লিভার রোধে পুষ্টিকর খাদ্য তালিকা:
অলিভিয়া হ্যাসের মতে, এই খাবারগুলো সপ্তাহে নিয়মিত খেলে লিভারের স্বাস্থ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে –

দ্রবণীয় ফাইবার (Soluble Fibre)
ফাইবার শরীর থেকে টক্সিন, অতিরিক্ত হরমোন, কোলেস্টেরল ও বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং গাট হেলথ উন্নত করে।
খাবার: গ্লুটেন-মুক্ত ওটস, মসুর ডাল, শিম, অ্যাসেসিয়া ফাইবার

 তিতকুটে খাবার (Bitter Foods)
তিতা খাবার পিত্ত উৎপাদন বাড়িয়ে লিভার ডিটক্সে সাহায্য করে এবং চর্বি হজমে সহায়ক।
খাবার: অরুগুলা, দানডেলিয়ন পাতার সালাদ, মূলা, র‍্যাডিকিও

বি-ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার (B Vitamins)
বি-ভিটামিন লিভারের ফ্যাট মেটাবলিজম ও ডিটক্স প্রক্রিয়া সহজ করে এবং পিত্ত নিঃসরণে সাহায্য করে।
খাবার: দারুণ মানের প্রোটিন যেমন ডিম, ওয়াইল্ড ফিশ, ডার্ক লিফি সবজি

ক্রুসিফেরাস সবজি (Cruciferous Veggies)
ব্রকোলি, বাঁধাকপি ইত্যাদিতে থাকা সালফোরাফেন লিভারের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতা বাড়ায় ও ডিটক্সে সহায়ক।
খাবার: ব্রকোলি স্প্রাউটস, বাঁধাকপি

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের কোষ পুনর্গঠন করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়।
খাবার: লেবুজাতীয় ফল, গ্রীন টি, ব্লুবেরি, পালং শাক ইত্যাদি

আমিনো অ্যাসিড (Amino Acids)
লিভার কোষ গঠন ও পুনরুদ্ধারে এবং গ্লুটাথায়োন উৎপাদনে সাহায্য করে।
খাবার: লিন প্রোটিন, ওয়াইল্ড-ক্যাচ মাছ

পরামর্শ:
এই খাদ্যতালিকা কোনও রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসার বিকল্প নয়। ফ্যাটি লিভার বা লিভার সমস্যায় ভুগলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

শেষ কথা:
লিভারকে ‘উপোসে’ রেখে সুস্থ রাখা সম্ভব নয়। বরং তাকে প্রয়োজন তার কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে সঠিক পুষ্টি ও উপাদানসমৃদ্ধ খাবার। যেমন অলিভিয়া হ্যাস বলেন, “ফুড ইজ মেডিসিন” – খাবারই হতে পারে সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘস্থায়ী ওষুধ।
 

 
 

মারিয়া

×