
ছবি: সংগৃহীত।
ডিম—একটি অতি পরিচিত ও জনপ্রিয় খাদ্য উপাদান, যা বিশ্বের প্রায় সব দেশেই প্রতিদিনকার খাদ্যতালিকায় ব্যবহৃত হয়। আমাদের দেশেও ডিম একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির উৎস। তবে বাজারে গেলে অনেকেই একটি দ্বিধায় পড়েন—লাল ডিম কিনবেন, নাকি সাদা? শুধু রঙের তারতম্য, নাকি পুষ্টিগুণেও রয়েছে তফাৎ?
চলুন, জানি এই দুই ধরনের ডিমের বৈশিষ্ট্য ও পুষ্টিগুণ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত।
লাল ও সাদা ডিমের পার্থক্য কী?
ডিমের খোলসের রঙ নির্ভর করে মুরগির জাতের উপর। সাধারণত লাল পালকের মুরগি লাল খোলসের ডিম পাড়ে, আর সাদা পালকের মুরগি পাড়ে সাদা ডিম। এটি শুধুই জেনেটিক বৈচিত্র্য—খোলসের রঙে পুষ্টিগুণের কোনো পার্থক্য হয় না।
পুষ্টিগুণে আদৌ কি কোনো তফাৎ আছে?
বেশিরভাগ পুষ্টিবিদদের মতে, লাল ও সাদা ডিমের পুষ্টিগুণে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। উভয় ডিমেই প্রোটিন, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-বি১২, আয়রন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে প্রায় একই মাত্রায়।
তবে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যেহেতু গ্রামাঞ্চলে পালিত দেশি মুরগির ডিম সাধারণত লাল খোলসের হয় এবং তারা প্রাকৃতিক খাবার খায়, তাই এমন ডিমে কিছুটা বাড়তি পুষ্টিগুণ থাকতে পারে। কিন্তু এটি খোলসের রঙের কারণে নয়, বরং খাওয়ানোর পদ্ধতি ও পরিবেশের কারণে।
স্বাদের দিক দিয়ে পার্থক্য?
অনেকেই বলেন, লাল ডিমের স্বাদ নাকি বেশি ভালো। তবে এই ধারণাটিও মূলত মনস্তাত্ত্বিক। প্রকৃতপক্ষে, ডিমের স্বাদ নির্ভর করে মুরগির খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্য অবস্থার উপর—not খোলসের রঙের উপর।
দাম ও সহজলভ্যতা
বাজারে লাল ডিমের দাম সাধারণত সাদা ডিমের তুলনায় একটু বেশি থাকে। এর একটি কারণ হলো, লাল পালকের মুরগি বড় আকারের হওয়ায় তাদের খাদ্য চাহিদা বেশি এবং উৎপাদন খরচও কিছুটা বেশি।
শেষ কথাঃ কী খাবেন?
পুষ্টিগুণ বিবেচনায় লাল বা সাদা—উভয় ডিমই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে ডিমের গুণমান নির্ভর করে মুরগির খাদ্য, পরিবেশ এবং উৎপাদন পদ্ধতির উপর। তাই রঙের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিন ডিমের উৎস ও সততাকে।
রঙ নয়, গুণে বিচার করুন ডিম। সচেতন পছন্দই পারে আপনার প্রতিদিনের পুষ্টি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে। তাই বাজারে দাঁড়িয়ে আর দ্বিধায় নয়, জেনে বুঝে বেছে নিন আপনার প্রিয় ডিম।
নুসরাত