
ছবিঃ সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে ধনী শহরগুলোর মানচিত্রে গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। প্রথাগত আর্থিক কেন্দ্রগুলো এখনও তাদের শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে, তবে নতুন উদীয়মান শহরগুলোও দ্রুত এগিয়ে আসছে। প্রযুক্তি, ব্যবসা নীতি, এবং জীবনযাত্রার মানের উপর ভিত্তি করে ধনী মানুষের প্রবাহের গতিপ্রকৃতি বদলেছে। ২০২৫ সালের জন্য Henley & Partners ও New World Wealth-এর সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিউ ইয়র্ক সিটি ও বে এরিয়া শীর্ষে থাকলেও সিঙ্গাপুর, সিডনি, ও অন্যান্য শহরগুলো দ্রুত তাদের অবস্থান মজবুত করছে। চলুন এক নজরে দেখি, কোন কোন শহরগুলো ২০২৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী হিসেবে স্বীকৃত।
১. নিউ ইয়র্ক সিটি
নিউ ইয়র্ক সিটি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী শহর হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। এখানে প্রায় ৩৮৪,৫০০ জন মিলিয়নিয়ার, ৮১৮ জন ‘সেন্টি-মিলিয়নিয়ার’ (অর্থাৎ $১০০ মিলিয়নের বেশি সম্পদশালী), এবং ৬৬ জন বিলিয়নিয়ার বসবাস করছেন। উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয় এবং নিরাপত্তা সমস্যার পরেও শহরটির শক্তিশালী আর্থিক সেক্টর, বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেট ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব উচ্চ সম্পদের মানুষের আকর্ষণের প্রধান কারণ।
২. বে এরিয়া (সান ফ্রান্সিসকো ও সিলিকন ভ্যালি)
বেশি প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সংস্কৃতির কারণে বে এরিয়ায় গত দশকে সম্পদের পরিমাণ ৯৮% বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে প্রায় ৩০৫,৭০০ মিলিয়নিয়ার বসবাস করছে। প্রযুক্তি খাতের বুমের ফলে এই অঞ্চল দ্রুত সমৃদ্ধ হচ্ছে।
৩. টোকিও
এশিয়ার সবচেয়ে ধনী শহর হিসেবে টোকিওর অবস্থান মজবুত। এখানে প্রায় ২৯৮,৩০০ মিলিয়নিয়ার রয়েছেন। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, শক্তিশালী কর্পোরেট উপস্থিতি এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে টোকিওতে ধনী মানুষের সংখ্যা বজায় রয়েছে।
৪. সিঙ্গাপুর
সিঙ্গাপুর দ্রুত উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তিদের জন্য পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠেছে। এখানে প্রায় ২৪৪,৮০০ মিলিয়নিয়ার এবং ৩০ জন বিলিয়নিয়ার বসবাস করেন। ব্যবসায় সহায়ক নীতিমালা, নিরাপত্তা এবং ক্যাপিটাল গেইনস ট্যাক্স না থাকার কারণে সিঙ্গাপুরে সম্পদের সঞ্চয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৫. লস এঞ্জেলেস
লস এঞ্জেলেসে বিনোদন ও ব্যবসা মিলেমিশে আছে। এখানে প্রায় ২১২,১০০ মিলিয়নিয়ার, ৫১৬ সেন্টি-মিলিয়নিয়ার এবং ৪৩ বিলিয়নিয়ার বসবাস করেন। হলিউডের জনপ্রিয়তার পাশাপাশি প্রযুক্তি, রিয়েল এস্টেট এবং অন্যান্য শিল্পের কেন্দ্র হিসেবে লস এঞ্জেলেসের গুরুত্ব রয়েছে।
৬. লন্ডন
লন্ডনে প্রায় ২২৭,০০০ মিলিয়নিয়ার রয়েছেন, কিন্তু গত দশকে ধনী মানুষের সংখ্যা ১৫% কমেছে। ব্রেক্সিট, কর বৃদ্ধি ও ডোমিসাইল নিয়ম পরিবর্তনের কারণে এই পতন ঘটেছে। তবুও, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক কারণে লন্ডন এখনও সম্পদের ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় শহর।
৭. প্যারিস
মেনল্যান্ড ইউরোপের সবচেয়ে ধনী শহর হিসেবে প্যারিসের অবস্থান বজায় রয়েছে। এখানে ১৬৫,০০০ মিলিয়নিয়ার বাস করেন। সংস্কৃতি, ফ্যাশন ও ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে প্যারিসের গুরুত্ব অপরিবর্তিত।
৮. হংকং
হংকং এখনো প্রধান আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে আছে। যদিও ধনী মানুষের সংখ্যা সামান্য কমেছে, এখানে প্রায় ১৫৪,৯০০ মিলিয়নিয়ার বসবাস করেন। কৌশলগত অবস্থান এবং আর্থিক সেবাখাতের কারণে এটি সম্পদের এক গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য।
৯. সিডনি
সিডনি দ্রুত উঠে আসা ধনী শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। এখানে প্রায় ১৫২,৯০০ উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তি বাস করছেন। শহরের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মান ধনী মানুষের আকর্ষণের প্রধান কারণ।
১০. শিকাগো
শিকাগো প্রায় ১২৭,১০০ মিলিয়নিয়ার নিয়ে শীর্ষ দশে স্থান পেয়েছে। এর বৈচিত্র্যময় অর্থনীতি ও কৌশলগত অবস্থান ধনী মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে।
নোভা