
ছবি: সংগৃহীত
স্ক্রিনে মোড়া জীবন, চোখে মারাত্মক চাপ: চোখের যত্নে মেনে চলুন এই ৫টি টিপস
আজকাল আমাদের দিন শুরু হয় ঘুম থেকে উঠে মোবাইলের অ্যালার্ম বন্ধ করে, তারপর নোটিফিকেশন চেক করে। এরপর অফিস বা পড়াশোনার জন্য আরও বড় স্ক্রিনে চোখ রাখি। বিরতির সময়টাও কাটে ছোট স্ক্রিনেই। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে টিভির সামনে ডিনার, এরপর রাতের শেষে স্ক্রিনেই শেষ হয় ‘ডুমস্ক্রলিং’। এত স্ক্রিন ব্যবহারের ফলে চোখে পড়ে অতিরিক্ত চাপ, দেখা দেয় ক্লান্তি ও শুষ্কতা।
এই বিষয়েই কথা বলেছেন বেঙ্গালুরুর নেত্রধামা সুপার স্পেশালিটি আই হসপিটালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ডা. সাভিতা অরুণ। তিনি বলেন, “আজকের ডিজিটাল যুগে বেশিরভাগ মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে স্ক্রিনে চোখ রাখছেন—চাকরি, পড়াশোনা বা বিনোদনের জন্য। যদিও এটা এখন জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে, তবুও চোখের ওপর এর প্রভাব মারাত্মক। ক্লান্ত, জ্বালাপোড়া করা চোখ, শুষ্কতা, মাথাব্যথা, ঝাপসা দেখা, ঘাড় বা কাঁধে ব্যথা—এসবই এখন সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার পেছনে রয়েছে ভুল স্ক্রিন ব্যবহার বা ‘স্ক্রিন ইর্গোনমিক্স’। দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিন ব্যবহারে ‘ডিজিটাল আই স্ট্রেইন’ বা ‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম’ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।”
চোখের সুস্থতা বজায় রাখতে ডা. সাভিতা দিয়েছেন পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস:
১. আলো যেন সঠিকভাবে থাকে
যদি আলো খুব বেশি উজ্জ্বল বা খুব কম হয়, তবে চোখের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
-
নরম, পরোক্ষ আলোয় কর্মস্থল রাখুন।
-
স্ক্রিনের পেছনে বা সামনে তীব্র আলো এড়িয়ে চলুন।
-
প্রয়োজনে অ্যান্টি-গ্লেয়ার ফিল্টার ব্যবহার করুন।
২. স্ক্রিনের উচ্চতা ঠিক করুন
স্ক্রিন খুব ওপরে বা নিচে থাকলে চোখ ও ঘাড় অস্বাভাবিক ভঙ্গিমায় থাকে।
-
স্ক্রিন যেন চোখের সরল রেখায় বা একটু নিচে থাকে এবং এক হাত দূরত্বে থাকে।
-
এতে চোখ ও শরীর দুটোতেই চাপ কমবে।
৩. ২০-২০-২০ নিয়ম মেনে চলুন
একটানা স্ক্রিন দেখলে চোখের পেশিতে চাপ পড়ে।
-
প্রতি ২০ মিনিট পর, ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরের কিছু দেখুন।
-
এতে চোখের পেশি আরাম পাবে, মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হবে।
৪. বেশি বেশি পলক ফেলুন
স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে পলক পড়ার হার কমে যায়, ফলে চোখ শুষ্ক হয়ে পড়ে।
-
সচেতনভাবে পলক ফেলুন।
-
প্রয়োজনে প্রিজারভেটিভ-মুক্ত লুব্রিকেটিং আই ড্রপ ব্যবহার করুন।
৫. চোখের জন্য সঠিক খাবার খান
চোখের স্বাস্থ্যে পুষ্টি গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যারা অনেকক্ষণ স্ক্রিনে থাকেন।
-
শরীর হাইড্রেটেড রাখুন।
-
খাদ্য তালিকায় রাখুন:
-
ভিটামিন এ (গাজর, মিষ্টি আলুতে)
-
লুটেইন ও জিয়াজ্যান্থিন (শাকপাতা, ডিম, ভুট্টায়)
-
ওমেগা-৩ (মাছ, আখরোট, ফ্ল্যাক্সসিডে)
-
ভিটামিন সি (লেবু, কমলালেবুতে)
-
জিঙ্ক (বাদামে)
-
দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে লেখা। কোনো ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
এএইচএ