
ছবি : জনকণ্ঠ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টির পানিতে ধসে গেছে দুধকুমার নদীর ডানতীর রক্ষা বাঁধ। বন্যার আগেই বাঁধে ধস দেখা দেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে 'কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন' শিরোনামে ২০২১ সালের ১০ আগস্ট একনেকের বৈঠকে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। যা বিভিন্ন প্যাকেজে বর্তমানে কুড়িগ্রাম পাউবোর তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সেই প্রকল্পের আওতায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের নদীভাঙন রোধে নদীর ডানতীর সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহণ করে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড। ৫০০ মিটার তীররক্ষা বাঁধের ব্যয় ধরা হয় ১০ কোটি ৪২ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩৩ টাকা। ১৪ নম্বর প্যাকেজের এ কাজটি পায় ঢাকার মগবাজারের টি আই-পিভিএল-জেড আই জেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ প্যাকেজের কাজটি ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে শুরু করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে দুই দফা সময় বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পটির।
কাজ শেষ হওয়ার আগেই এবং বন্যার শুরু না হতেই সামান্য বৃষ্টির পানিতে ইসলামপুর সামাদের ঘাট এলাকায় বাঁধের ১২ মিটার অংশ ধসে নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
কাজ শেষ হওয়ার আগেই সামান্য বৃষ্টির পানিতে বাঁধ ধসে যাওয়ায় নদীভাঙনের আতঙ্কে আছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বালু তুলে সেই বালু দিয়েই ব্লক তৈরি করেছে। সেটিও যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিসানো হয়নি। বালু তোলায় বাঁধের নিচে মাটি না থাকায় সামান্য বৃষ্টির পানিতেই বাঁধ ধসে গেছে। এছাড়া মনিটরিং ব্যবস্থাও দুর্বল থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করে কাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর রহমান জানান, নদীভাঙন প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু কাজ শেষ না হতেই সামান্য বৃষ্টির পানিতেই বন্যা আসার আগেই বাঁধ ধসে পড়েছে। দ্রুত তীররক্ষা বাঁধ মেরামত না করলে বন্যায় নদীভাঙন তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
নদী থেকে বালু তোলার বিষয়টি স্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম জানান, তারা তীর থেকে নিয়ম অনুযায়ী ২০০ মিটার দূর থেকে বালু তুলেছেন। তবে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি তীরের নিকট থেকে বালু তোলায় বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। ধসে যাওয়া স্থান মেরামত করা হচ্ছে। তবে কাজের অনিয়মের কথা অস্বীকার করেন তিনি।
কুড়িগ্রাম পাউবোর (পানি উন্নয়ন বোর্ড) উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাফিয়া আখতার জানান, বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় দায় তাদেরই। বাঁধের ধসে যাওয়া অংশ পুনরায় নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সা/ই