ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

যুদ্ধের সময় নিজেকে ও পরিবারকে নিরাপদ রাখতে কি করবেন?

প্রকাশিত: ১৯:০২, ৫ মে ২০২৫; আপডেট: ১৯:১৬, ৫ মে ২০২৫

যুদ্ধের সময় নিজেকে ও পরিবারকে নিরাপদ রাখতে কি করবেন?

ছবি: প্রতীকী

বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যুদ্ধ বা সশস্ত্র সংঘাতের সম্ভাবনা যেকোনো সময় তৈরি হতে পারে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করা এবং কিছু কার্যকর পদক্ষেপ অনুসরণ করলেই নিজেকে ও পরিবারকে অনেকটাই নিরাপদ রাখা সম্ভব। নিচে যুদ্ধ শুরু হলে করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো।

১. শান্ত থাকুন ও তথ্য সংগ্রহ করুন
যুদ্ধ শুরু হলে প্রথমেই আতঙ্কিত না হয়ে নিজের এবং পরিবারের মানসিক স্থিরতা বজায় রাখা জরুরি। রেডিও, টেলিভিশন, ইন্টারনেট ও সরকারি ঘোষণার মাধ্যমে সঠিক তথ্য জানতে চেষ্টা করুন। গুজব বা অসত্য খবর এড়িয়ে চলুন।

২. জরুরি প্রস্তুতি নিন
ঘরে জরুরি প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংরক্ষণ করুন, যেমন: খাবার ও পানীয় (কমপক্ষে ৭ দিনের মজুদ), ওষুধ ও ফার্স্ট এইড কিট, টর্চলাইট, ব্যাটারি, পাওয়ার ব্যাংক, শুকনো কাপড়, কম্বল, কিছু নগদ টাকা ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র (জাতীয় পরিচয়পত্র, জমির দলিল, ব্যাংকের তথ্য ইত্যাদি)।

৩. নিরাপদ আশ্রয়স্থল নির্ধারণ করুন
বাড়ির ভেতরে এমন একটি স্থান নির্ধারণ করুন যা বোমা বা গোলাবর্ষণ থেকে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ (যেমন: ঘরের ভেতরের রুম, যেটিতে জানালা নেই)। এছাড়া, নিকটস্থ সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র কোথায় আছে, তা জেনে রাখুন এবং প্রয়োজনে সেখানে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন।

৪. পরিবারের সকল সদস্যকে প্রশিক্ষিত করুন
পরিবারের সবাইকে জরুরি মুহূর্তে করণীয় সম্পর্কে জানিয়ে দিন। শিশুদের কিভাবে লুকাতে হবে, বয়স্কদের কিভাবে সহায়তা করতে হবে — এসব বিষয় শেখান। একটি নির্দিষ্ট মিলনস্থল ঠিক করে রাখুন যেখানে বিচ্ছিন্ন হলে সবাই একত্রিত হতে পারবে।

৫. যোগাযোগের উপায় নিশ্চিত করুন
মোবাইল চার্জ রাখুন, বিকল্প হিসেবে পাওয়ার ব্যাংক ও চার্জার প্রস্তুত রাখুন। পরিবারের বাইরে বিশ্বস্ত কিছু আত্মীয় বা বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। প্রয়োজনে সরকারের হেল্পলাইন নাম্বার জেনে রাখুন।

৬. জরুরি মুহূর্তে স্থানান্তর (Evacuation)
যদি যুদ্ধ পরিস্থিতি তীব্র হয়ে ওঠে এবং স্থান ত্যাগ করা ছাড়া আর উপায় না থাকে, তাহলে সরকার বা সেনাবাহিনীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্থান পরিবর্তন করুন। নিজের গাড়ি থাকলে আগে থেকে তেল ভরে রাখুন এবং নিরাপদ রুট চিহ্নিত করুন।

৭. সাহস ও মানবিকতা বজায় রাখুন
নিজের পাশাপাশি প্রতিবেশীদেরও সহায়তা করুন। দুর্যোগের সময় মানবিকতা ও সহযোগিতার মনোভাব একে অপরকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে। আতঙ্ক নয়, সহযোগিতা হোক এই সময়ের মূল মন্ত্র।

যুদ্ধ একটি ভয়ঙ্কর বাস্তবতা হলেও সচেতনতা ও প্রস্তুতির মাধ্যমে তার প্রভাব অনেকাংশে মোকাবিলা করা যায়। মনে রাখবেন, ঠান্ডা মাথা ও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এই সময়ে সবচেয়ে বড় অস্ত্র।

এম.কে.

×