গরু।
আর কয়েক দিন পরই কোরবানির ঈদ। এরই মধ্যে ঢাকাসহ সারা দেশে পশুর হাট বসে গেছে। সেখানে আসা শুরু করেছে কোরবানির পশু। হাঁটে আসা কোন কোন গরু কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা হয়।
বেশি লাভের আশায় অনেক ব্যবসায়ী স্টেরয়েড ব্যবহার করাসহ নানা উপায় অবলম্বন করে গরু দ্রুত মোটাতাজা করে। সেসব গরুর মাংস মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
স্টেরয়েড মূলত হাঁপানির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এ জাতীয় ওষুধ যেমন- ডেক্সামেথাসন বা ডেকাসন, বেটামেথাসন ও পেরিঅ্যাকটিন অতিরিক্ত মাত্রায় দিলে গরুর কিডনি ও যকৃতের কার্যকারিতা নষ্ট হওয়ায় শরীর থেকে পানি বের হতে পারে না। এ কারণে শোষিত হয়ে পানি সরাসরি গরুর মাংসে চলে যায়। ফলে গরুকে মোটা দেখায়।
কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু চিনবেন যেভাবে:
১. যেসব গরুর চেহারা স্বাভাবিক উষ্কখুষ্ক এবং চামড়ার ওপর দিয়ে হাড় বেরিয়ে থাকে। সেগুলো প্রাকৃতিকভাবে মোটা করা গরুর লক্ষণ।
২. কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরুর গায়ে আঙুল দিয়ে চাপ দিলে ওই স্থানের মাংস দেবে যাবে। এসব গরুর গা ‘পানি নামা’ রোগীর শরীরের মতো ফুলে থাকে। বৈজ্ঞানিক উপায়ে বা স্বাভাবিকভাবে মোটা করা গবাদিপশুর ক্ষেত্রে দ্রুতই মাংস স্বাভাবিক হয়।
৩. কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে। একটু হাঁটলেই হাঁপায়, খুবই ক্লান্ত দেখায়। শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণের সময় যদি শব্দ হয়, তাহলে এ ধরনের গরু না কেনাই ভালো।
৪. এসব গরুর মুখে লালা বা ফেনা থাকে। যেসব গরুর মুখে কম লালা বা ফেনা থাকে, সে গরু কেনার চেষ্টা করুন। এগুলো কৃত্রিম উপায়ে মোটা করা পশু নয়।
৫. সুস্থ গরু একটু চটপটে থাকে। কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরুকে খুব ক্লান্ত ও বিষণ্ন মনে হবে। এসব গরু শরীরে পানি জমার কারণে নড়াচড়া কম করে। এক জায়গায় বসে থাকে।
৬. গরুর মুখের সামনে খাবার ধরলে যদি নিজ থেকে জিহ্বা দিয়ে খাবার টেনে নিয়ে খেতে থাকে, তবে বোঝা যাবে গরুটি সুস্থ। যদি অসুস্থ হয়, তবে সে খাবার খেতে চায় না।
৭. গরুর শরীরে হাত দিয়ে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের (৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) চেয়ে বেশি মনে হলে, বুঝতে হবে গরুটি অসুস্থ।
৮. সুস্থ গরুর নাকের ওপরের অংশ ভেজা বা বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা থাকবে। অন্যদিকে অসুস্থ গরুর নাক থাকবে শুকনা।
৯. কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরুর রানের মাংস স্বাভাবিক গরুর রানের মাংসের চেয়ে অনেক নরম থাকে। সুস্থ গরুর রানের মাংস শক্ত থাকবে।
এসআর