ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সুস্থ করবে শরীর, প্রশান্ত থাকবে মন

 এ সময়ের খাদ্যাভ্যাস

প্রকাশিত: ২২:১৬, ২৬ মার্চ ২০২৩

 এ সময়ের খাদ্যাভ্যাস

.

রমজান মাস আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। এই মাসে ইবাদতের পাশাপাশি সঠিক খাবার খেলে ধর্মীয় সংযমও রক্ষা হবে আবার শরীরও সুস্থ থাকবে। রমজান মাসে নিয়ম মেনে খাবার খেলে শরীর যেমন সুস্থ এবং শান্ত হবে তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যেও আসবে প্রশান্তি। সুস্থতা নিশ্চিত করতে সঠিক খাদ্যাভ্যাসের একটি নমুনা চিত্র তুলে ধরেছেন কনসালটেন্ট অ্যান্ড ট্রেইনার অব ন্যাচারোপ্যাথি অ্যান্ড ইয়োগা- ঐন্দ্রিলা আক্তার

রমজানে ইফতার মেন্যু-

- শরীর পরিষ্কার করার প্রথম ধাপ হলো, একগ্লাস লেবু পানি আর খেঁজুর দিয়ে ইফতার শুরু করা।

(যাদের লেবু পানি খেলে এসিডিটির সমস্যা হয় তারা স্বাভাবিক পানি আর খেঁজুর খাবেন)

- ইফতারে ডাবের পানি খুবই পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর একটি পানীয়। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য পটাসিয়াম সমৃদ্ধ ডাবের পানি ভীষণ উপকারী।

- এরপর ফলাহার বিশেষ করে তরমুজ, বাঙ্গি, ডালিম, আনারস, আপেল, নাসপাতি, পেয়ারা, পেঁপে ইত্যাদি ফল খাওয়া। এসব ফল বিভিন্নভাবে খাওয়া যেতে পারে, যেমন- টুকরো করে কেটে বা সালাদ বানিয়ে, অথবা ফলের জুস বানিয়েও খাওয়া যেতে পারে। একেক দিন একেক রকম করে ফল খেলে রুচিতে এবং স্বাদে বৈচিত্র্য আসবে।

- সারাদিন রোজা রাখার পর হজম শক্তিকে চাঙ্গা করতে এবং এসিডিটি দূর করতে দই, চিড়া, কলা মাখা খুবই উপকারী।

- এর সঙ্গে যোগ করতে পারেন ছোলা আর মুড়ি মাখা। শসা, টমেটো, পেঁয়াজ, ধনেপাতা আর সরিষার তেল দিয়ে ছোলা আর মুড়ি মাখা খুবই স্বাদের আর স্বাস্থ্যকর ইফতার আইটেম।

রমজানে রাতের খাবার মেন্যু-

রমজানে নামাজ পড়ে আমরা সাধারণত রাতের খাবার খাই। রাতের খাবার বুঝে খেলে সেহরিতে আর ভারি খাবার খাওয়ার দরকার পড়ে না। ফলে সারাদিন বদহজম, পেটফাঁপা, এসিডিটি ইত্যাদি হজমের -গোল থেকে বেঁচে থাকা যায়। রাতের মেন্যু হতে পারে-

- ভাত, এক টেবিল চামচ শাক, করলা বা ঢেঁড়শ জাতীয় ভাজি, মাছ বা মাংসের তরকারি, ডাল।

- সময় অল্প তেলে রান্না করা মুরগির বিরিয়ানিও কোনো কোনোদিন খাওয়া যেতে পারে। সঙ্গে টক দইয়ের ঘোল আর সালাদ থাকবে অবশ্যই।

- খাবারে একঘেয়েমি কাটাতে তন্দুর রুটি, কাবাব, নেহারি সঙ্গে সালাদ আর ঘরে তৈরি বোরহানি থাকতে পারে কোনো কোনোদিন।

- অনেকে ইফতারে হালিম খেয়ে থাকেন, সারাদিন রোজা রেখে রোজা ভেঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে তৈলাক্ত খাবার না খেয়ে কিছুটা সময় পার করে রাতের খাবারে হালিম খাওয়া ভালো। সঙ্গে রুটি, সালাদ।

- রাতের খাবারে খিচুড়ি, মাংস, সালাদ, ঘোল খাওয়া যেতে পারে।

রমজানে সেহরি মেন্যু-

রাতের খাবার ভারি হলে সেহরি হালকা এবং স্বাস্থ্যসম্মত রাখা যায় সহজেই।

- বিভিন্ন রকমের বাদাম, ফল,

- একগ্লাস দুধ হতে পারে স্বাস্থ্যকর সেহরি।

- চিড়া, দই, কলা বা চিড়া দুধ কলাও উত্তম সেহরি মেন্যু।

- ঘরে তৈরি সেমাই, মুড়ি, একগ্লাস দুধ হতে পারে সেহরি মেন্যু।

- কোনো কোনোদিন ডিম আর সালাদ সঙ্গে চিকেন স্যুপ।

- কোনোদিন আবার একটি মাঝারি আকারের মাছ বেক বা স্টিম করে সেহরিতে খাওয়া যায়। সঙ্গে একগ্লাস ঘোল খেলে ভালো হজম হবে।

- কখনো আবার সেহরিতে এক কাপ ভাত, মাছ বা মুরগির তরকারি, ডাল আর সালাদ খাওয়া যেতে পারে।

- দুধ ভাত উপাদেয় সেহরি মেন্যু।

ইফতার এবং সেহরির মধ্যবর্তী পানীয়-

রমজান মাসে সারাদিন পানি না খেয়ে থাকার ফলে শরীর পানিশূন্য হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই ইফতার এবং সেহরির মাঝের সময়টাতে বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্যকর পানীয় খেলে শরীরে পানির চাহিদাও পূরণ হয় আবার রক্ত পরিষ্কার হয়ে শরীর বিষমুক্ত হয়।

যেমন- বিটের জুস, গাজরের জুস, টমেটোর জুস, সবুজ শাক-সবজির জুস, বেলের শরবত ইত্যাদি। উপরের খাবার মেন্যুগুলো সব বয়সী রোজাদার ব্যক্তি খেতে পারবে। খাবারের তালিকায় থাকা বিভিন্ন ফল, বাদাম, সবজি রোজায় আঁশের চাহিদা পূরণ করবে, ফলে কোষ্ঠবদ্ধতা আর পাইলসের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে, পাশাপাশি বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেলস্রে চাহিদাও পূরণ হবে। পরিমিত ভাত, পোলাও, কোনো কোনো ফল শরীরে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখবে। আর মাছ, দুধ, ডিম, পরিমিত মাংস পূরণ করবে প্রয়োজনীয় প্রোটিন আর ফ্যাটের চাহিদা।

×