
.
মহামারী করোনাভাইরাস আতঙ্কে রয়েছে পরো বিশ্ববাসী। কোনভাবেই লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হচ্ছে না এ ভাইরাসটির। ফলে সুস্থ মানুষ যেমন ভয়ে কাতর, তেমনি অসুস্থ মানুষও। বিশেষ করে বয়স্করা। তাই সতর্ক থাকা এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরী। কিডনি রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে দিন দিন বাড়ছেই। অথচ মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এটি। কিছু কিছু কিডনি রােগ আছে, যথাসময়ে চিকিৎসা না করালে সেটি তার স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না।
কারণ সমূহ
সমস্যার অন্যতম কারণ হলো অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস। ওষুধ বা অন্য চিকিৎসার পাশাপাশি কিডনি ফেইলিউরে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। মোটামুটি পাঁচটি ধাপে কিডনি বিকলতার দিকে অগ্রসর হয়।
প্রথম চারটি ধাপ চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় বা যে গতিতে কিডনি ক্ষয় হচ্ছে, তা কমিয়ে আনা যায়। কিন্তু পাঁচ নম্বর ধাপ বা শেষ ধাপে চলে গেলে তখন রোগীর জন্য আর কিছুই করার থাকে না।
সাবধানতা
বেঁচে থাকার উপায় হলো ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজন। এসব পদ্ধতি এতই ব্যয়বহুল, দেশের ১০ শতাংশ লোকেরও এ ধরনের চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া কঠিন। তাই এ ঘাতক ব্যাধি থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় হলো কিডনি বিকলতা প্রতিরোধ করা।
কিডনি ভাল রাখার উপায়
যেমনÑ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের নিয়মিত রক্তের শর্করা এবং প্রস্রাবের এ্যালবুমিন পরীক্ষা করা ও রক্তের হিমোগ্লোবিন এওয়ানসি (HbA1C) নিয়ন্ত্রণে রাখা। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা। (১৩০/৮০-এর নিচে যাদের প্রস্রাবে এ্যালবুমিন থাকে, তাদের ১২০/৭০-এর নিচে রাখা)। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীর কিডনির কার্যকারিতা প্রতি ৬ মাস অন্তর পরীক্ষা করা। শিশুর গলাব্যথা, জ্বর ও ত্বকে খোস-পাচড়ার দ্রুত সঠিক চিকিৎসা করা উচিত। কারণ এগুলো থেকে কিডনি প্রদাহ বা নেফ্রাইটিস রোগ দেখা দিতে পারে।
ডায়রিয়া, বমি ও রক্ত আমাশয়ের কারণে রক্ত পড়ে ও লবণশূন্য হয়ে কিডনি বিকল হতে পারে। তাই দ্রুত খাবার স্যালাইন খেতে হবে। প্রয়োজনে শিরায় স্যালাইন দিতে হবে। চর্বি জাতীয় খাবার ও লবণ কম খাওয়া এবং পরিমিত পানি পান করা।
সতর্কতা
চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত এ্যান্টিবায়োটিক ও তীব্র ব্যথানাশক ওষুধ সেবন না করা। প্রস্রাবের ‘ঘন ঘন ইনফেকশনের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেয়া।
পরীক্ষা ও চিকিৎসা
মাত্র দুটি পরীক্ষায় জানা যায় কিডনি রোগ আছে কিনা এবং একটি সহজ সমীকরণের বের করা যায় কিডনি শত ভাগের কত ভাগ কাজ করছে। একটি হলো- প্রস্রাবে এ্যালবুমিন বা মাইক্রো এ্যালবুমিন যায় কিনা এবং অন্যটি রক্তের ক্রিয়েটিনিন। একটু সচেতন হলেই এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ জন্য জীবনযাত্রা প্রণালি বদলে ফেলতে হবে। মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। তবেই কিডনি বিকল হওয়া থেকে আমরা নিজেকে দূরে রাখতে সক্ষম হব। তাই দেরি না করে যথাযথ চিকিৎসকের পরামর্শে থাকা ভাল।
লেখক : কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ইউরোলজি বিভাগ, বিএসএমএমইউ
চেম্বার : সেন্ট্রাল হসপিটাল, বাড়ি-২,
রোড-৫, গ্রিনরোড, ধানমন্ডি, ও আল-রাজি, হাসপাতাল, ফ্রামগেট, ঢাকা
০১৭১১-০৬৩-০৯৩, ০১৯১১-৭৬৫-১৫০