ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভেষজ চা কখন কিভাবে খাবেন

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ২৪ আগস্ট ২০২০

ভেষজ চা কখন কিভাবে খাবেন

নানা রকম ভেষজ চা বাজারে পাওয়া যায়। তবে সে সবের চেয়ে ঘরোয়া টাটকা উপাদান দিয়ে নিজে বানিয়ে নিলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। সব চা কী সবাই খেতে পারেন? কোন চা কখন খাবেন? কীভাবে পান করা উচিত ভেষজ চা? কয়েকটা উদাহরণ রইল। তুলসী চা এক বাটি পানিতে এক মুঠো তুলসী পাতা ফুটতে দিন। টগবগ করে ফুটলে আঁচ কমিয়ে ১০ মিনিট ফোটান। এরপর এতে মেশান এক চামচ মধু আর দুই চামচ লেবুর রস। মধু দেবে এনার্জি, লেবুর ভিটামিন ‘সি’ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজে লাগবে। আর তুলসীর প্রভাবে জ্বর-সর্দি-কাশির প্রকোপ কম থাকবে। নিয়মিত খেলে প্রদাহের প্রবণতা কমবে, বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এক লিটার জলে দুই চামচ আদা কুচি, চার চামচ ধনে ও এক মুঠো তুলসী পাতা দিয়ে কম আঁচে ভাল করে ফোটান, যতক্ষণ না জল অর্ধেক হয়ে যায়। এবার ছেঁকে নিয়ে মধু ও লেবু মিশিয়ে খান। কয়েকটি বিশেষ ক্ষেত্রে এই চা না খাওয়াই ভাল। যেমন- - গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খাবেন না। কারণ তুলসীতে আছে এস্ট্রাজল যা জরায়ুর সঙ্কোচন বাড়াতে পারে। - ডায়াবেটিসের ওষুধ খেলে বা ইনসুলিন নিলে নিয়মিত খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে নেবেন। কারণ তুলসী রক্তে সুগারের মাত্রা কমায় বলে জানা গেছে। - রক্ত পাতলা রাখার ওষুধ খেলেও সাবধান। কারণ তুলসীও রক্ত পাতলা রাখে। - বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, যাদের নিয়মিত এ্যাসিটামিনোফেন জাতীয় ব্যথার ওষুধ খেতে হয়, তারা তুলসী খাওয়ার আগে দু-বার ভাববেন। কারণ দুইয়ের মিলিত প্রভাবে লিভারের কিছু ক্ষতি হতে পারে। দারুচিনি চা দারুচিনি, গোলমরিচ, লেবুর রস ও মধু দিয়ে বানাতে পারেন ভেষজ চা। এক চামচ দারুচিনির গুঁড়া, সিকি চামচ গোলমরিচ গুঁড়া, এক চামচ লেবুর রস ও এক চামচ মধুর মধ্যে এক কাপ ফুটন্ত জল দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে ছেঁকে নিন। দারুচিনির কুমারিন, গোলমরিচের পিপারিন প্রদাহের প্রবণতা কমাবে, বাড়াবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। লেবুর ভিটামিন সি-এর কাজও তাই। সঙ্গে যুক্ত হবে মধুর এনার্জি। বেশ খানিকক্ষণ চাঙ্গা থাকার অব্যর্থ পানীয়। তবে কুমারিন বেশি খাওয়া ঠিক না। লিভারের ক্ষতি হতে পারে। আবার সুগার কমাতে পারে বলে যার ডায়াবিটিসের ওষুধ চলছে, তিনি বুঝে শুনে খাবেন। অশ্বগন্ধা চা রোজ সকালে বা বিকেলে এক কাপ অশ্বগন্ধার চা খেতে পারেন। এক কাপ ফুটন্ত জলে এক চা-চামচ অশ্বগন্ধা মূলের গুঁড়া দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন মিনিট ১০-১৫। ছেঁকে লেবুর রস ও মধু দিয়ে খান। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি প্রদাহের প্রবণতা কমবে। অশ্বগন্ধার জীবাণুনাশক গুণও আছে। কমবে মানসিক চাপ-অবসাদ ও বয়সজনিত ক্ষয়-ক্ষতির হার। ইন্ডিয়ান জার্নাল অব সাইকলোজিক্যাল মেডিসিনে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই চা খেলে খুব সহজে সতেজ ও ফুরফুরে হওয়া যায়। দুধ চায়ের ভক্ত হলে জলের বদলে ফুটন্ত দুধে অশ্বগন্ধার গুঁড়া মিশিয়েও চা বানাতে পারেন। তাতে এলাচ বা আদা মেশালেও কোন বাধা নেই। তবে চিনির বদলে মধু মেশালে উপকার মিলবে বেশি। আদা চা এক চা-চামচ আদা কুচি, দুটো লবঙ্গ, এক ইঞ্চি দারুচিনি থেঁতো করে দুই কাপ পানি দিয়ে ফোটান। তাতে দিন ৩ ইঞ্চি কমলালেবুর খোসা। কম আঁচে ফোটান ১৫ মিনিট। দেড় চামচ মধু মিশিয়ে খান। জ্বর-সর্দি-গলাব্যথা, সবের আরাম হবে। হলুদ চা আধ চামচ কাঁচা হলুদ বাটা ও সিকি চামচ গোলমরিচের গুঁড়াতে ফুটন্ত জল মেশান। এতে মেশান একটা গোটা লেবুর রস আর দেড় চামচ মধু। সকাল-বিকেল খেলে ইমিউনিটি নিয়ে আর ভাবতে হবে না। যাপিত ডেস্ক
×