
ছবিঃ সংগৃহীত
অনেক নারী মনে করেন, ডিভোর্স হয়ে গেলে আর স্বামীর বিরুদ্ধে কিছুই করার সুযোগ নেই। এটি ভুল ধারণা। যদি ডিভোর্সের আগে বা পরে স্বামী কোনো অন্যায় বা অপরাধ করে থাকেন, তাহলে স্ত্রী আইনানুগভাবে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন।
ডিভোর্সের পর একজন স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে নিম্নলিখিত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা করতে পারেন (যদি অপরাধ প্রমাণিত হয়):
১. যৌতুকের মামলা (দণ্ডবিধির ধারা ৩)
যদি ডিভোর্সের কারণ যৌতুক চাওয়া হয়, কিংবা যৌতুকের কারণে নির্যাতন করা হয়, তাহলে স্ত্রী যৌতুক নিরোধ আইনের আওতায় মামলা করতে পারেন।
২. নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ধারা ১১(গ) এবং ১১(খ))
যদি স্বামী স্ত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন, তাহলে মেডিকেল রিপোর্টসহ প্রমাণসহ এই আইনের আওতায় মামলা করা যায়।
- সাধারণ আঘাত: ১১(গ) ধারা
- গুরুতর আঘাত: ১১(খ) ধারা
৩. হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ (দণ্ডবিধির ধারা ৫০৬)
ডিভোর্সের পর যদি স্বামী স্ত্রীকে হুমকি দেন, ভয় দেখান বা হত্যার চেষ্টা করেন, তাহলে থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করে তদন্তের মাধ্যমে ৫০৬ ধারায় মামলা করা যায়।
৪. ভয়ভীতি বন্ধে ব্যবস্থা (দণ্ডবিধির ধারা ১০৭, ফৌজদারি কার্যবিধি)
যদি স্ত্রীর মনে হয় যে স্বামী তাকে বিপদের মধ্যে ফেলতে পারে বা ভবিষ্যতে ক্ষতি করতে পারে, তাহলে ১০৭ ধারায় মামলা করা যায়। এতে কোর্টে স্বামীকে মুচলেকা দিতে হবে যে তিনি ভবিষ্যতে কোনো হুমকি বা ক্ষতি করবেন না।
৫. দেনমোহর ও ভরণপোষণ মামলা (পারিবারিক আদালত আইন অনুযায়ী)
ডিভোর্সের পর স্ত্রী তার দেনমোহর ও ভরণপোষণের টাকা আদায়ের জন্য পারিবারিক আদালতে মামলা করতে পারেন। যদি পূর্বে ভরণপোষণ না দিয়ে থাকে, সেগুলোর হিসাবসহ সব অর্থ একত্রে দাবি করা যায়।
গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
মামলা করতে হলে অবশ্যই ঘটনার প্রমাণ থাকতে হবে (যেমন: মেডিকেল রিপোর্ট, সাক্ষী, ফোন রেকর্ডিং ইত্যাদি)।
- মিথ্যা অভিযোগ করা আইনগতভাবে শাস্তিযোগ্য।
- কোনো অপরাধ না ঘটলে মামলা করে লাভ হবে না।
ডিভোর্সের পরও একজন স্ত্রী তার আইনি অধিকার রক্ষা করতে পারেন। যদি কোনো স্ত্রী মনে করেন তিনি অন্যায়ের শিকার হয়েছেন, তাহলে উপযুক্ত আইন ও প্রক্রিয়ায় মামলা করে প্রতিকার পেতে পারেন।
মারিয়া