
ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশের পারিবারিক বাস্তবতায় এমন অসংখ্য ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে, যেখানে ভাইয়েরা বোনদের বাবার সম্পত্তিতে প্রাপ্য অংশ বুঝিয়ে দেন না। যদিও ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী এবং দেশের প্রচলিত উত্তরাধিকার আইনে বোনদের নির্দিষ্ট হারে উত্তরাধিকার স্বীকৃত।
মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে বলা আছে, বাবা-মা মারা যাওয়ার পর ছেলেমেয়ে উভয়েই তাদের সম্পত্তিতে অংশীদার। ছেলের যে অংশ, মেয়ে পায় তার অর্ধেক। তবে বাস্তবতা হলো, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভাইয়েরা সম্পত্তির দলিল নিজেদের নামে করে নেন বা বোনদের অংশ দিতে অস্বীকৃতি জানান।
এই ধরনের অবিচারের শিকার হলে বোনরা ‘বাটোয়ারা মামলা’ করতে পারেন দেওয়ানি আদালতে। এ ধরনের মামলা করতে হলে প্রয়োজন হয়—খতিয়ান, নামজারি, দলিল, উত্তরাধিকার সনদসহ সম্পত্তির মালিকানাসংক্রান্ত সব কাগজপত্র।
মামলায় প্রাথমিক ডিক্রি পাওয়ার পর ভাইয়েরা যদি বন্টন না করে, তাহলে আদালত অ্যাডভোকেট কমিশনার নিয়োগ করে জমির অংশ নির্ধারণ করে দেন এবং চূড়ান্ত ডিক্রি প্রদান করেন। এরপরও দখল না পেলে উচ্ছেদের মামলা বা সত্য দখলের মামলা করা যায়।
তবে কিছু ব্যতিক্রম আছে। যেমন, বোন যদি বাবার ভিটেমাটির অংশ চান, তবে উচ্চ আদালতের মতে এতে পারিবারিক বিরোধ বাড়তে পারে। তাই এই অংশ বাদ দিয়ে অন্য জায়গা থেকে তার অংশ বুঝিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
সম্প্রতি প্রণীত ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ অনুযায়ী, সম্পত্তি দখল বা প্রতারণার মাধ্যমে বঞ্চনার ক্ষেত্রে আলাদাভাবে আইনি প্রতিকার পাওয়া সম্ভব।
আইনজীবীরা মনে করেন, নারীদের সচেতনতা ও আইনজ্ঞান না থাকায় তারা প্রায়শই তাদের সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। তাই প্রতিটি নারীকে তার আইনি ও ধর্মীয় অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আইনের সাহায্য নিতে হবে।
নুসরাত