
ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি একটি অনলাইন বিজ্ঞাপন ভাইরাল হয়, যেখানে দাবি করা হয়: “সাগরের গভীরে পাওয়া পুরোনো ক্যামেরা থেকে টাইটানিকের ভয়ংকর ছবি উদ্ধার!” তবে এই দাবি পুরোপুরি ভুয়া বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং ওয়েবসাইট Snopes।
Taboola নামক বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্মে চলা এক প্রচারণায় বলা হয়, একটি পুরোনো ক্যামেরা সমুদ্রের গভীর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, যাতে টাইটানিক দুর্ঘটনার ‘ভয়াবহ ছবি’ ছিল। এই বিজ্ঞাপনটি Floor8 নামের একটি ওয়েবসাইটে পাঠিয়ে দেয় ব্যবহারকারীদের, যেখানে আসল লেখার শিরোনাম ছিল: “Here's What the Last Days of the Titanic Were Really Like” অর্থাৎ, বিজ্ঞাপনের সঙ্গে কোনো মিল নেই।
এই কৌশলকে বলা হয় “advertising arbitrage”, যার মাধ্যমে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর শিরোনাম দিয়ে পাঠকদের ক্লিক করানো হয়, এরপর ধাপে ধাপে স্লাইড দেখিয়ে অর্থ আয় করা হয়। না, এমন কোনো ক্যামেরা পাওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ প্রায় ১২,৬০০ ফুট (৩,৮৪০ মিটার) গভীরে অবস্থান করছে। যদি সেখান থেকে শতবর্ষ পুরোনো কোনো ক্যামেরা উদ্ধার হতো, তাতেও ছবি থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই।
একমাত্র প্রামাণ্য ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বার্নিস পামার নামে এক তরুণীর তোলা ছবি। তিনি ছিলেন কানাডার নাগরিক, এবং তার সঙ্গে ছিল Kodak Brownie নামক একটি হ্যান্ডহেল্ড ক্যামেরা। ১৯১২ সালে তিনি ও তার মা Carpathia নামক জাহাজে উঠেছিলেন, যেটি পরে টাইটানিকের দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে প্রায় ৭০০ জনকে উদ্ধার করে। সেই সময় বার্নিস টাইটানিকের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়া বরফখণ্ড এবং কিছু বেঁচে যাওয়া ব্যক্তির ছবি তোলেন।
পরবর্তীতে নিউইয়র্কের একটি এজেন্সি Underwood & Underwood তাঁর ছবি মাত্র ১০ ডলারে কিনে নেয়, যদিও সেই ছবিগুলোর মূল্য ছিল অনেক বেশি। বর্তমানে এসব ঐতিহাসিক ছবি সংরক্ষিত আছে Smithsonian Institution-এর ওয়েবসাইটে।
রেফারেন্স:
Smithsonian Institution, Bernice Palmer’s Titanic Photos
Snopes Fact Check, False Titanic Camera Claim
আঁখি