
ছবিঃ সংগৃহীত
বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অথচ উপেক্ষিত বিষয় হলো “ব্যাংক গ্যারান্টর” হওয়া। এ বিষয়ে সরাসরি সতর্ক করলেন লিগাল সাপোর্ট বাংলাদেশ চ্যানেলের পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাকির হোসেন। সম্প্রতি তিনি একটি ভিডিও বার্তায় জনগণকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, "অনেক সময় দেখা যায়, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী বা প্রিয় মানুষদের অনুরোধে আমরা ব্যাংক লোনের ক্ষেত্রে ‘সাক্ষী’ হই, যেটাকে সাধারণভাবে গ্যারান্টর বলা হয়। ব্যাংক কর্মকর্তারাও এটিকে খুব সাধারণ একটি ব্যাপার হিসেবে তুলে ধরেন — যেন শুধুই সাক্ষী, কোনো দায়িত্ব নেই। কিন্তু বাস্তবতা একেবারে ভিন্ন।"
অ্যাডভোকেট হোসেন স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ব্যাংকের গ্যারান্টর হওয়ার মানে হলো দায়বদ্ধতা নেওয়া। যদি ঋণগ্রহীতা পরবর্তীতে ব্যাংকের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হন, তাহলে ব্যাংক আইনের আওতায় গ্যারান্টরের বিরুদ্ধেও মামলা করতে পারে। অর্থঋণ আদালতে এমন মামলায় গ্যারান্টরকে আসামি করা হয় এবং ঋণের টাকা আদায়ে তার কাছ থেকেও দাবি করা হয়।
তিনি আরও জানান, "যদি মূল ঋণগ্রহীতাকে আদালতে হাজির করা না যায়, তাহলে গ্যারান্টরের বিরুদ্ধেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হতে পারে। এমনকি জামিন পেতে হলে তাকে ঋণের মোট পরিমাণের ২৫% টাকা আদালতে জমা দিতে হতে পারে।"
উদাহরণস্বরূপ, যদি ঋণের পরিমাণ ১ কোটি টাকা হয়, গ্যারান্টরের জামিন পেতে হলে ২৫ লাখ টাকা জমা দিতে হবে। অনেকেই এ বিষয়ে অজ্ঞাত থাকেন এবং বলেন, ‘আমি তো টাকা নিইনি, শুধু সাক্ষী হয়েছি’। অথচ আইনের চোখে গ্যারান্টর হওয়ার অর্থই হলো সেই ঋণের আইনি দায় বহন করা।
সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তিনি বলেন, “যদি কেউ আপনাকে গ্যারান্টর হতে বলেন, তাহলে আগে পুরো বিষয়টি ভালোভাবে বুঝুন, চুক্তির প্রতিটি শর্ত জেনে নিন এবং সম্ভাব্য ঝুঁকির কথা মাথায় রাখুন। একমাত্র তখনই সিদ্ধান্ত নিন।”
ভিডিওর শেষভাগে তিনি আহ্বান জানান, ব্যাংকিং, অর্থঋণ মামলা বা গ্যারান্টর সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন থাকলে লিগাল সাপোর্ট বাংলাদেশ চ্যানেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। চ্যানেলের পক্ষ থেকে যথাসময়ে উত্তর দেওয়া হবে।
লিগাল টিপস
- গ্যারান্টর হওয়ার আগে: পুরো লোন চুক্তি পড়ুন।
- ঝুঁকি মূল্যায়ন করুন: ঋণগ্রহীতার আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করুন।
- আইনি পরামর্শ নিন: সন্দেহ হলে একজন আইনজীবীর পরামর্শ নিন।
মারিয়া