ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সাইবার ক্রাইম থেকে কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন, আইনি পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ২৪ মে ২০২৫; আপডেট: ০৭:১৪, ২৪ মে ২০২৫

সাইবার ক্রাইম থেকে কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন, আইনি পরামর্শ

ছবি: প্রতীকী

বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর যুগে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। ই-ব্যাংকিং থেকে শুরু করে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটকের মতো সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে আমাদের জীবনে এসেছে ডিজিটাল বিপ্লব। তবে এই সুযোগের পাশাপাশি বাড়ছে সাইবার অপরাধের ঝুঁকি।

সাইবার নিরাপত্তা ও ডিজিটাল অধিকার নিয়ে একটি ভিডিও বার্তায় ব্যারিস্টার তাসমিয়া আঞ্জুম জানিয়েছেন, ‘অনেকেই বুঝে না বুঝে সাইবার অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছেন কিংবা আক্রান্ত হচ্ছেন অথচ জানেন না, কীভাবে প্রতিকার পাওয়া যায়।’

সাইবার অপরাধ কী?

সাইবার অপরাধ বলতে বোঝায় কম্পিউটার, ইন্টারনেট বা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে বেআইনি কাজ করা। যেমন:

  • কম্পিউটার বা ডেটাবেইসে অনধিকার প্রবেশ
  • জালিয়াতি ও প্রতারণা
  • আইডি চুরি বা ছদ্মবেশ ধারণ
  • অপমানজনক কনটেন্ট প্রকাশ
  • রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা
  • ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত
  • হ্যাকিং ও অবৈধ অর্থ লেনদেন

সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩

ব্যারিস্টার তাসমিয়া জানান, সাইবার অপরাধ দমন ও প্রতিরোধের লক্ষ্যে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ বাতিল করে প্রণয়ন করেছে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩। নতুন আইনে শুধু অপরাধীদের দণ্ডই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ক্ষতিপূরণও পেতে পারেন।

অপরাধের শিকার হলে কী করবেন?

১. ভয় পাবেন না – পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে নিন।

২. প্রমাণ সংরক্ষণ করুন – স্ক্রিনশট, ইউআরএল, পোস্টের সময়, ভিডিও, অডিও, নাম্বার, প্রোফাইল লিংক ইত্যাদি জমা রাখুন।

৩. একাউন্ট ডিলিট নয় – একাউন্ট ডিএক্টিভ বা মুছে ফেলবেন না।

৪. থানায় জিডি বা মামলা করুন, প্রয়োজনে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পারেন।

৫. অভিযোগ জানাতে পারেন:

পুলিশ সাইবার ক্রাইম ইউনিটে

  • ফেবুকের ভেরিফাইড পেজে
  • কল সেন্টারে
  • ই-মেইল বা অ্যাপের মাধ্যমে

বাংলাদেশে বর্তমানে ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনাল রয়েছে: ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও সিলেট।

সাইবার ফরেনসিক কীভাবে সাহায্য করে?

সাইবার ফরেনসিক হলো ডিজিটাল ডেটা বিশ্লেষণের একটি শাখা, যা অপরাধীর অবস্থান, প্রমাণ ও অপরাধ বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি তথ্য পুনরুদ্ধার ও আইনি প্রক্রিয়ায় প্রমাণ উপস্থাপনের কাজ করে।

সচেতনতা ও সুরক্ষা কৌশল

ব্যারিস্টার তাসমিয়া আঞ্জুম সচেতন থাকার জন্য কিছু কৌশল আলোচনা করেছেন:

  • আলাদা আলাদা শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
  • দুই স্তরের নিরাপত্তা (Two-factor authentication) চালু করুন।
  • সফটওয়্যার ও অ্যান্টিভাইরাস আপডেট রাখুন।
  • ব্যক্তিগত তথ্য পাবলিক পোস্টে দেবেন না।
  • পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহারে সতর্ক থাকুন।
  • সন্দেহজনক লিংক বা ইমেইল এড়িয়ে চলুন।

তিনি বলেন, ‘আপনার সাইবার নিরাপত্তা আপনার হাতেই। সচেতন থাকুন, তথ্য সংরক্ষণ করুন, এবং প্রয়োজনে সাহস করে আইনের দ্বারস্থ হন।’

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=aHnmjw5A7A0

রাকিব

×