ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

আইনের চোখে পরকীয়া: অপরাধ, শাস্তি ও বাস্তবতা

প্রকাশিত: ১৯:২৩, ৩ মে ২০২৫

আইনের চোখে পরকীয়া: অপরাধ, শাস্তি ও বাস্তবতা

ছবিঃ সংগৃহীত

পরকীয়া বা পরকীয়া সম্পর্ক বলতে বিবাহিত কোনো ব্যক্তি যদি স্বামী/স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও অন্য কারো সঙ্গে স্বেচ্ছায় কোনো সম্পর্ক স্থাপন করে, তখন সেটিকে সমাজ ও আইন উভয় দৃষ্টিকোণেই পরকীয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

দণ্ডবিধি, ১৮৬০ (Penal Code, 1860) বাংলাদেশের ফৌজদারি আইন অনুযায়ী, পরকীয়া একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। ধারা ৪৯৭ অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তি, এমন একজন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন যিনি অন্য পুরুষের স্ত্রী, এবং সেই নারী এমন সম্পর্কের জন্য তার স্বামীর সম্মতি ছাড়া সম্মত হন— তবে সেই পুরুষ ব্যক্তি ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, বা জরিমানা, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। তবে এই আইনে স্ত্রী বা সেই নারী ব্যক্তিকে অপরাধী হিসেবে ধরা হয় না, বরং তাকে ভিকটিম ধরা হয়।

আইনটি নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক — এমন মন্তব্য করেছেন অনেক মানবাধিকারকর্মী ও আইনি বিশ্লেষক। কারণ এতে নারীর সম্মতি থাকা সত্ত্বেও তাকে দায়ী করা হয় না, বরং পুরুষকেই কেবল দায়ী করা হয়। বাংলাদেশের হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট বিভিন্ন সময়ে এই ধারা নিয়ে মতামত দিয়েছে, তবে এখনো এটি বিলুপ্ত হয়নি, এবং প্রয়োজনে প্রয়োগযোগ্য।

ভারতে ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট ধারা ৪৯৭ (Abolition of Adultery Law)-কে সংবিধানবিরোধী ঘোষণা করে বাতিল করে দেয়। এখন ভারতে পরকীয়া অপরাধ নয়, বরং এটি পারিবারিক বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়, এবং কেবল বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হতে পারে।

তবে ইসলামে বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক (যিনা) গুরুতর গুনাহ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যদি তা প্রমাণিত হয় তাহলে এর শাস্তি দু’রকম। পাথর ছুঁড়ে মৃত্যুদণ্ড (রজম) ও ১০০ দোররা (বেত্রাঘাত)। তবে ইসলামী শাস্তি কার্যকর করতে চারজন বিশ্বস্ত সাক্ষীর দরকার হয়, যা প্রমাণ করা প্রায় অসম্ভব।

তবে কোনো সম্পর্কে এমন সমস্যা দেখা দিলে সুযোগ থাকলে সেখান থেকে বের হয়ে নতুন জীবন শুরু করাকেই মঙ্গল মনে করেন অনেকে।

সূত্রঃ https://www.facebook.com/reel/1074160104465702

আরশি

×