ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১

চাকরি খোঁজার নতুন ট্রেন্ড!

প্রকাশিত: ২১:১৯, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

চাকরি খোঁজার নতুন ট্রেন্ড!

চাকরি খোঁজা ও আবেদন প্রক্রিয়া আগের মতো আর নেই। এখন আর হাতে করে রেজুমে জমা দেওয়া বা মেইল করে অপেক্ষা করার দিন শেষ। আজকাল প্রায় সব চাকরি সংক্রান্ত যোগাযোগ ডিজিটাল মাধ্যমে হয়। নিয়োগকর্তা আপনাকে সামনাসামনি দেখার সুযোগ পান না যতক্ষণ না সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়। তাই আবেদনপত্র ও অনুসরণ প্রক্রিয়া সঠিক হওয়া জরুরি।

নিচে ডিজিটাল যুগে চাকরি খোঁজা থেকে শুরু করে সাক্ষাৎকারের পর অনুসরণ করার পদ্ধতি পর্যন্ত সব কিছু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
গত ১০ বছরে নিয়োগ ও কর্মী খোঁজার প্রযুক্তিগত উন্নয়ন কর্মপ্রত্যাশীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

লিংকডইন বা জিপরেক্রুটারের মতো প্ল্যাটফর্মে এক ক্লিকেই চাকরির জন্য আবেদন করার সুবিধার ফলে কোম্পানিগুলোকে এখন হাজারো আবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করতে হয়। এ কারণে, মানব সম্পদ বিভাগ (HR) প্রাথমিক যাচাইয়ের জন্য অ্যাপ্লিকেন্ট ট্র্যাকিং সিস্টেম (ATS) এর উপর নির্ভর করে।

তবে এসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা সম্ভব। নিচে কিছু কৌশল দেওয়া হলো, যা আপনাকে সফলভাবে চাকরি খুঁজতে ও আবেদন করতে সাহায্য করবে।

রেজুমে তৈরি করার সময় যা করবেন
প্রযুক্তির কারণে চাকরির জন্য আবেদন করা আগের চেয়ে সহজ হয়েছে। তবে আবেদন করার আগে সময় নিয়ে সঠিকভাবে রেজুমে তৈরি করা জরুরি।

সঠিক কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন যা চাকরির বিবরণে উল্লেখ করা আছে।
বানান বা ব্যাকরণগত ভুল যেন না থাকে, তা নিশ্চিত করুন। শুধুমাত্র মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের উপর নির্ভর না করে বন্ধুর কাছে বা পেশাদারের কাছে রেজুমে পর্যালোচনা করান।
রেজুমে সহজপাঠ্য ও সুসংগঠিত ফরম্যাটে তৈরি করুন।
ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞ আমান্ডা অগাস্টিনের মতে, একজন নিয়োগকারী রেজুমে দেখতে মাত্র ৬ সেকেন্ড ব্যয় করেন। এই সময়ে তারা মূলত নাম, বর্তমান পদের নাম ও কোম্পানি, পূর্ববর্তী পদের নাম ও কোম্পানি, কাজ শুরুর এবং শেষ তারিখ, এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা চেক করেন।

অগাস্টিন বলেন, “আপনার রেজুমেকে চাকরির বিবরণ অনুযায়ী সাজান এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস (যেমন কাভার লেটার, আনঅফিশিয়াল ট্রান্সক্রিপ্টস, পেশাদার রেফারেন্স) অবশ্যই যুক্ত করুন।"

চাকরি খোঁজা ও আবেদন করা
অনলাইনে চাকরি খোঁজার জন্য অনেক অপশন আছে। সাধারণ প্ল্যাটফর্ম যেমন লিংকডইন, ইনডিড এবং জিপরেক্রুটার ভালো শুরু হতে পারে।

তবে নির্দিষ্ট শিল্প বা পদের জন্য কাস্টমাইজড জব বোর্ড (নিচ জব বোর্ড) অধিক কার্যকর হতে পারে। এ ছাড়া সরাসরি পছন্দের কোম্পানির ওয়েবসাইটে চাকরির বিজ্ঞপ্তি খোঁজার মাধ্যমে সময় সাশ্রয় করা যায়।

যদি সেই কোম্পানিতে পরিচিত কেউ থাকে, তবে রেফারেল অপশন ব্যবহার করতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে, রেফারেলের মাধ্যমে আবেদন করলে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা ১০ গুণ বেড়ে যায়।

ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকার
কোভিড-১৯ মহামারির পর থেকে ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকার জনপ্রিয় হয়েছে। জুম বা ভিডিও কলের মাধ্যমে এখন অনেক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

সাক্ষাৎকারের আগে প্রস্তুতি নিন:

আলো ঠিক করুন যাতে মুখ স্পষ্ট দেখা যায়।
ব্যাকগ্রাউন্ড পরিপাটি রাখুন।
শব্দ কমাতে এবং বিভ্রাট এড়াতে ব্যবস্থা নিন।
নিজেকে আত্মবিশ্বাসী দেখানোর জন্য ক্যামেরার সামনে বারবার অনুশীলন করুন।
আপনার আবেদন প্রক্রিয়া ট্র্যাক করা
সুপরিকল্পিত হওয়া চাকরি খোঁজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একটি ফোল্ডার তৈরি করুন যেখানে আপনি আবেদন করা চাকরির বিবরণ, সংশ্লিষ্ট লিংক এবং আবেদন জমা দেওয়ার তারিখ সংরক্ষণ করবেন।

ফলোআপ করা
অনলাইনে আবেদন করার পর এক সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। যদি নির্দিষ্ট ডেডলাইন না থাকে, তাহলে আবেদন জমা দেওয়ার এক সপ্তাহ পর ফলোআপ করতে পারেন।

সাক্ষাৎকারের পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি ‘থ্যাংক ইউ’ ইমেইল পাঠানো আদর্শ। বড় শহরগুলোতে দ্রুততার দিকে নজর দিন এবং হস্তলিখিত নোটের পরিবর্তে ইমেইল পাঠান।চাকরি খোঁজার সময় সাধারণ ভুল এড়ানো
পর্যাপ্ত গবেষণা না করে আবেদন করা।
একই রকমের রেজুমে সব চাকরির জন্য ব্যবহার করা।
সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল পেশাদারভাবে সাজানো না রাখা।
ডিজিটাল যুগে চাকরি খোঁজার সুবিধা
আজকের যুগে প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাকরি খোঁজা আরও সহজ হয়েছে। নিয়োগকর্তারা এখন প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে দক্ষ কর্মী খুঁজে পান। চাকরিপ্রত্যাশীরাও তাদের প্রোফাইল ও আবেদনপত্র কাস্টমাইজ করে তাদের পছন্দের চাকরি সহজে পেতে পারেন।

নাহিদা

×