ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৬ মে ২০২৫, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইলন মাস্কের কন্যা ভিভিয়ানের টি-শার্টে কী বার্তা দিচ্ছেন?

প্রকাশিত: ০৮:১৬, ২৬ মে ২০২৫

ইলন মাস্কের কন্যা ভিভিয়ানের টি-শার্টে কী বার্তা দিচ্ছেন?

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ববিখ্যাত প্রযুক্তিপতী ইলন মাস্কের কন্যা ভিভিয়ান উইলসন এবার আত্মপ্রকাশ করলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন এক ভূমিকায়। প্রাইড মান্থ উপলক্ষে ‘ওয়াইল্ডফ্যাং’ নামক কুইয়ার ও নারী-প্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন ব্র্যান্ডের জন্য প্রথমবারের মতো মডেলিং করেছেন ২১ বছর বয়সী ভিভিয়ান। শুধু তাই নয়, ক্যাম্পেইনের জন্য নিজেই ডিজাইন করেছেন একটি বিশেষ বার্তাবাহী টি-শার্ট, যার দাম ৪৮ ডলার এবং আয় পুরোপুরি দান করা হবে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করা দাতব্য সংস্থা ‘দ্য ট্রেভর প্রজেক্ট’-এ।

টি-শার্টটিতে স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে: “Existing Shouldn’t Be Revolutionary” অর্থাৎ, “অস্তিত্ব থাকা যেন বিপ্লব না হয়”।
ব্র্যান্ডের ভাষ্য মতে, এই বার্তা এক ধরনের প্রতিবাদ—বিশ্বজুড়ে ট্রান্স ও কুইয়ার মানুষদের অস্তিত্ব আজও কেন প্রশ্নের মুখোমুখি, সেটি তুলে ধরতেই এই বার্তা।

ক্যাম্পেইনের একটি ছবিতে ভিভিয়ানকে দেখা যায় মেঝেতে শুয়ে আছেন, তাঁর মাথার চুল বেণির মতো করে গাঁথা, যা দিয়ে লেখা হয়েছে তাঁর নাম “Vivian”। ইনস্টাগ্রামে তিনি লেখেন, @wearewildfang-এর পোশাক পরে থাকতাম, এখন ওদের জন্য মডেলিং করছি। আর হ্যাঁ, এখন আমার কাছে ৪০ ফুট লম্বা কানে-ক্যালন (নকল চুল) আছে, জানি না কী করব ওগুলো দিয়ে।

ওয়াইল্ডফ্যাং-এর প্রধান নির্বাহী এমা ম্যাকিলরয় বলেন, ভিভিয়ান শুধু একজন মডেল নন, তিনি সাহসী, স্বতন্ত্র এবং নিজের আদর্শে অটল। এমন কণ্ঠস্বরই আমাদের সময়ের দরকার।

পারিবারিক টানাপোড়েন ও আত্মপরিচয়ের সংগ্রাম
ভিভিয়ান উইলসন ইলন মাস্কের ১৪ সন্তানের একজন। তিনি যমজ ভাই গ্রিফিনের সঙ্গে ২০০৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ২০২২ সালে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি সুপেরিয়র কোর্টে নিজের নাম ও লিঙ্গ পরিবর্তনের আবেদন করেন। পিটিশনে তিনি স্পষ্ট করে লিখেছিলেন, আমি আর আমার জৈবিক পিতার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখতে চাই না, কোনোভাবে না।

২০২৪ সালে এক সাক্ষাৎকারে ইলন মাস্ক বলেন, তাঁর কন্যা “ওয়োক মাইন্ড ভাইরাস”-এ আক্রান্ত হয়েছেন এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজে তাঁকে “চাতুর্যের মাধ্যমে” সই করানো হয়েছিল।
অন্যদিকে ভিভিয়ান NBC নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই নারীত্ব ও কুইয়ার পরিচয়ের জন্য হেনস্তার শিকার হয়েছি। এমনকি আমার কণ্ঠস্বর বেশি উচ্চ হওয়াতেও আমাকে গালাগাল করা হতো।

তিনি আরও জানান, আমার বাবা জানেন না আমি কেমন ছিলাম, কারণ তিনি প্রায় সময়ই অনুপস্থিত ছিলেন। আর যখন ছিলেন, তখন আমাকে অবিরাম মানসিক চাপের মধ্যে ফেলা হতো।

সাহসী বার্তা ও সামাজিক অবস্থান
ফ্যাশনের মাধ্যমে নিজের পরিচয় ও বার্তা প্রকাশের মাধ্যমে ভিভিয়ান যেন এক সামাজিক আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছেন। তাঁর ডিজাইন করা টি-শার্টটিকে ঘিরে ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অনেকেই বলছেন, এই বার্তা তাঁদের অস্তিত্বের লড়াইয়ে নতুন ভাষা যোগ করেছে।

ওয়াইল্ডফ্যাং-এর ভাষ্য অনুযায়ী,
“এই ক্যাম্পেইনটি শুধুই পোশাক বিক্রির জন্য নয়, এটি একটি অবস্থান—ট্রান্স এবং কুইয়ার ব্যক্তিদের দেখার, স্বীকৃতি দেওয়ার এবং সুরক্ষা দেওয়ার আহ্বান।”

 

এসএফ 

×