
ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে ভারতের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ভারত এখনো রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে যাচ্ছে—যা মস্কোর ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের আর্থিক জোগানদাতা বলে হোয়াইট হাউস মনে করছে।
এই নতুন ব্যবস্থা ২১ দিনের মধ্যে কার্যকর হবে এবং এটি সেই পৃথক ২৫ শতাংশ শুল্কের ওপর যুক্ত হবে, যা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। এর ফলে ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট শুল্কের হার দাঁড়াবে ৫০ শতাংশ।
শুল্কের দিক থেকে এখন ভারত ও ব্রাজিল যৌথভাবে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে—উভয়ের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক। এরপর রয়েছে সুইজারল্যান্ড (৩৯%), কানাডা ও ইরাক (৩৫%) এবং চীন (৩০%)।
এই বিষয়ে ভারত সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, “সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানিকে লক্ষ্যবস্তু করছে। এই বিষয়ে আমাদের অবস্থান আগেই পরিষ্কার করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে আমাদের আমদানি বাজারভিত্তিক এবং দেশের ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে করা হয়। সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, বিশেষ করে যখন বহু দেশ নিজেদের স্বার্থে একই রকম কাজ করছে।”
ট্রাম্পের আদেশে আরও ৬৯টি দেশ ও অঞ্চলের ওপর ১০ শতাংশ থেকে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত "পাল্টা শুল্ক" আরোপ করা হয়েছে। এই শুল্ক ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে, ঠিক তার আগেই মেক্সিকোর সঙ্গে একটি শুল্ক চুক্তির সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে মেক্সিকোর জন্য সময়সীমা আরও ৯০ দিন বাড়ানো হয়েছে।
ব্রাজিলের ওপর প্রথমে ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হলেও ১ আগস্ট থেকে আরও ৪০ শতাংশ বাড়ানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের আপত্তির ফলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে ব্রাজিলের মোট শুল্কও দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে। কানাডার ৩৫ শতাংশ শুল্কও ১ আগস্ট থেকেই কার্যকর হবে।
সরকারি আদেশে বলা হয়েছে, এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে একটি "জাতীয় জরুরি অবস্থা"-কে সামনে রেখে। এতে বলা হয়েছে, ভারত "প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাশিয়ার তেল আমদানি করছে", এবং এই অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের মাধ্যমে জরুরি পরিস্থিতি আরও কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা যাবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বরাবরই ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ভারতের নিরপেক্ষ অবস্থান পশ্চিমা দেশগুলোকে হতাশ করেছে, যারা ইতিমধ্যে মস্কোর ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
আবির