ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৫ আগস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২

ট্রাম্পের শুল্কের ধাক্কা, বিপর্যয়ের মুখে দক্ষিণ কোরিয়ার কে বিউটি পণ্য

প্রকাশিত: ১৮:৩২, ৫ আগস্ট ২০২৫

ট্রাম্পের শুল্কের ধাক্কা, বিপর্যয়ের মুখে দক্ষিণ কোরিয়ার কে বিউটি পণ্য

ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি ও স্মার্টফোন মার্কিন বাজারে দাপট দেখালেও, বিশ্বজুড়ে ভক্ত সৃষ্টি করা আরেকটি রফতানি পণ্য হলো কোরিয়ান বিউটি পণ্য যা ‘K-Beauty’ নামে পরিচিত। উচ্চমান, সাশ্রয়ী মূল্য এবং প্রাকৃতিক উপাদানে সমৃদ্ধ হওয়ায় কোরিয়ান স্কিনকেয়ার ও কসমেটিকসের চাহিদা কয়েক বছর ধরেই আকাশচুম্বী। যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র ২০২৪ সালেই K-Beauty পণ্যে মার্কিনরা ব্যয় করেছে প্রায় ১.৭ বিলিয়ন ডলার যা আগের বছরের তুলনায় ৫০% বেশি।

কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের উপর ১৫% আমদানি শুল্ক আরোপ করায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা ও ভোক্তারা। যুক্তরাষ্ট্রের গ্রাফিক ডিজাইনার পার্ল ম্যাক জানান, “আমি এখন আমার ত্বকের যত্নে ৯৫% কেবিউটি পণ্যই ব্যবহার করি। কারণ এগুলো আমার স্কিনে ভীষণ ভালো কাজ করে, তুলনায় ওয়েস্টার্ন ব্র্যান্ডগুলো অনেক সময় রুক্ষ।”

তাঁর মতো লাখো মার্কিনি এখন কোরিয়ান পণ্যের প্রেমে পড়েছেন। হার্টলিফ, স্নেইল মিউসিন বা চা গাছের নির্যাসের মতো উপাদানযুক্ত এই কসমেটিকসগুলো পশ্চিমা বাজারে এখনও খুব একটা প্রচলিত নয়। সান্তে ব্র্যান্ড নামের এক কেবিউটি রিটেইলার বলেছে, ট্রাম্পের ঘোষণা পর থেকেই তাদের বিক্রি বেড়েছে ৩০%। অন্য ব্র্যান্ড সেনটি সেনটি জানিয়েছে, তারা সরবরাহকারীদের কাছ থেকে আগাম সতর্কতা পাচ্ছে “টারিফ কার্যকর হওয়ার আগেই মজুত করুন।”

তবে এই শুল্ক শেষপর্যন্ত দাম বাড়াবে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। ইউসিডি সান দিয়েগোর অর্থনীতিবিদ মুনসিওব লি বলেন, “ছোট ব্যবসায়ীরা টিকে থাকা কঠিন হবে। বড় ব্র্যান্ডগুলো কিছুটা সহনশীলতা দেখাতে পারলেও, ছোট কোম্পানিগুলো লাভের মার্জিনে ধাক্কা খাবে।” মার্কিন ক্রেতাদের একাংশ এখনও বিশ্বাস করেন, মার্কিন পণ্য কেবিউটির সমমানের নয়। পার্ল ম্যাক বলেন, “আমি খুঁজেছি, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো ইউএস ব্র্যান্ড কেবিউটির মতো কার্যকর নয়। তাই দাম বাড়লেও আমি কিনব।”

ট্রাম্প একই ধরনের ১৫% শুল্ক জাপান ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কসমেটিকসের উপরেও চাপিয়েছেন। অর্থাৎ, শুধু কোরিয়া নয়, বিশ্বের শীর্ষ বিউটি ব্র্যান্ডগুলোই এই শুল্কের আওতায় আসছে। ট্রাম্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আমেরিকায় পণ্য উৎপাদন বাড়ানো। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে মার্কিন গ্রাহক আদৌ দেশীয় পণ্যের দিকে ঝুঁকবেন কিনা, তা এখনও অনিশ্চিত।

আঁখি

×