
স্পেনের একটি জনবহুল সৈকতের আকাশে প্রদর্শনী চলাকালে পাখির ঝাঁককে এড়াতে গিয়ে অল্পের জন্য বিধ্বস্ত হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে একটি স্প্যানিশ এফ-১৮ হর্নেট যুদ্ধবিমান। ঘটনা ঘটেছে দেশের উত্তরের আস্তুরিয়ায় অনুষ্ঠিত ‘হিখোন এয়ার ফেস্টিভাল’-এ।
আকাশ প্রদর্শনী চলাকালে নিচু উচ্চতায় মঞ্চস্থ হচ্ছিল যুদ্ধবিমানটির এক বিপজ্জনক কসরত। ঠিক সেই মুহূর্তে হঠাৎ সামনে চলে আসে পাখির একটি দল। স্প্যানিশ বিমানবাহিনী জানায়, তৎক্ষণাৎ পাইলট একটি এড়ানো কৌশল নেন এবং বিমানটি ঝুঁকি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়।
ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিমানটি হঠাৎ উল্টে যায়, কালো ধোঁয়ার রেখা টেনে দ্রুতগতিতে সমুদ্রের দিকে ধেয়ে যায়, তারপর একেবারে শেষ মুহূর্তে নিচু থেকে উপরের দিকে সরে গিয়ে সম্ভাব্য বিপর্যয় এড়িয়ে যায়।
ঘটনার সময় সান লোরেঞ্জো সমুদ্রসৈকতে হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অনেকে মুঠোফোনে মুহূর্তটি ধারণ করেন। বিমানের আচমকা গতিপথ বদলের দৃশ্য দেখে উপস্থিত জনতা বিস্ময়ে চিৎকার করে ওঠেন।
সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ এক পোস্টে স্প্যানিশ বিমানবাহিনী জানায়, “পাখির ঝাঁক শনাক্ত করার পর বিমানটি একটি এড়ানোর কৌশল নেয়। এটি আমাদের স্ট্যান্ডার্ড নিরাপত্তা প্রোটোকলের অংশ, যা পাইলট এবং সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার জন্য গৃহীত হয়। আমাদের পাইলটরা মাইলিসেকেন্ডের মধ্যে যেকোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য প্রশিক্ষিত।”
স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, এবারের হিখোন এয়ার ফেস্টিভালে তিন লাখেরও বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন, যা অনুষ্ঠানটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। প্রদর্শনীতে অংশ নেয় স্প্যানিশ এয়ার অ্যান্ড স্পেস ফোর্স, সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ ইউনিট, নৌবাহিনী ও জাতীয় পুলিশ বিভাগ।
এই ধরনের ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। গত মাসেই দক্ষিণ-পূর্ব স্পেনের মুরসিয়ায় ‘এয়ার২৫’ শো চলাকালে একটি স্প্যানিশ ইউরোফাইটার টাইফুন বিমান একটি সীগাল বা সামুদ্রিক গulls পাখির সঙ্গে ধাক্কা খায়। ধাক্কায় বিমানের ক্যানোপি ভেঙে যায় এবং উইন্ডশিল্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে পাইলটকে প্রদর্শনী শেষ না করেই তৎক্ষণাৎ অবতরণ করতে হয়।
আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (আইসিএও) জানায়, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে বন্যপ্রাণী আঘাতের অন্তত ২ লাখ ৭০ হাজার রিপোর্ট নথিভুক্ত হয়েছে, যার অনেকটাই পাখি আঘাতসংক্রান্ত।
এই ধরনের ঘটনা শুধু যুদ্ধবিমান নয়, যাত্রীবাহী বিমানগুলোর জন্যও বড় হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। তাই প্রতিটি বিমানের জন্য পাখির উপস্থিতি শনাক্তের পর দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা এখনো বিমান নিরাপত্তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে আছে।
সূত্র:https://tinyurl.com/mr25zkfn
আফরোজা