ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

ট্রাম্পকে প্রশংসায় ভাসিয়ে পুরষ্কার পেল মিয়ানমার!

প্রকাশিত: ২৩:০১, ২৫ জুলাই ২০২৫

ট্রাম্পকে প্রশংসায় ভাসিয়ে পুরষ্কার পেল মিয়ানমার!

ছবি: সংগৃহীত

বহু দশক ধরে সামরিক শাসনের করাল গ্রাসে বন্দি মিয়ানমার। সর্বশেষ ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি জোট, যাদের নেতৃত্বে গঠিত হয় জান্তা সরকার। এবার ওই জান্তা সরকারের ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মার্কিন প্রশাসনের এক বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

২০২৪ সালের ১৮ জুলাই এক ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ জানায়, নিম্নলিখিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে:

  • কেটি সার্ভিসেস অ্যান্ড লজিস্টিকস
  • এর প্রতিষ্ঠাতা জনাথন মিউকিয়াওথাং
  • এমসিএম গ্রুপ ও মালিক আউং হলাইং
  • সানটেক টেকনোলজি এবং মালিক সিতাইং আউং
  • সেনাঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী টিনলাত মিন


এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দুই সপ্তাহ আগেই, অর্থাৎ ১১ জুলাই, মিয়ানমারের জান্তা নেতা মিন অং হোলাইং সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি চিঠি পাঠান।
চিঠিতে তিনি ট্রাম্পকে “প্রকৃত দেশপ্রেমিক” বলে উল্লেখ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন ও অগ্রগতির লক্ষ্যে তার নেতৃত্ব ও পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে মিয়ানমার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো বাণিজ্যিক পণ্যের ওপর আরোপিত ৪০ শতাংশ শুল্ক কমানোর আবেদনও জানান।

এই চিঠি পাঠানোর মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে মার্কিন প্রশাসনের এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে, যদিও এই সিদ্ধান্তের কারণ বা ব্যাখ্যা এখনও হোয়াইট হাউস কিংবা ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি।


ট্রাম্প প্রশাসনের এমন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (HRW)।
তারা বলছে, এর ফলে মিয়ানমারের জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম দুর্বল হবে এবং সেনাশাসকদের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ শিথিল হয়ে যাবে।
এই নিষেধাজ্ঞাগুলো এতদিন জান্তা সরকারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা তৈরি করেছিল। এখন সেসব তুলে দেওয়ায় অস্ত্র ব্যবসা, জনমনে ভীতি এবং দমন-পীড়ন নতুন মাত্রায় পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।


বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ইঙ্গিত হতে পারে। আবার কেউ কেউ বলছেন, চীন ও রাশিয়ার প্রভাব ঠেকাতে মার্কিন প্রশাসন কৌশলে সামরিক ঘনিষ্ঠতাও চাইছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই গুরুত্বপূর্ণ দেশটির সঙ্গে।

শেখ ফরিদ 

×