ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

মার্কিন গোয়েন্দাদের দাবি

হরমুজ প্রণালি বন্ধের প্রস্তুতি নিয়েছে ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:২১, ২ জুলাই ২০২৫

হরমুজ প্রণালি বন্ধের প্রস্তুতি নিয়েছে ইরান

হরমুজ প্রণালি দিয়ে একটি তেলবাহী জাহাজ যাচ্ছে

হরমুজ প্রণালি আটকে দিতে ইরান প্রস্তুত হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। তাদের দাবি, গত মাসে পারস্য উপসাগরে নিজেদের জলযানে সামুদ্রিক মাইন তুলেছে ইরানি বাহিনী। রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, গত ১৩ জুন ইরানের উপর ইসরাইলের তরফ থেকে প্রথম দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কিছুদিনের মধ্যেই এই সম্ভাব্য প্রস্তুতিমূলক ঘটনা ঘটে। খবর সিএনএনের।
মাইনগুলো এখনো হরমুজ প্রণালিতে মোতায়েন না করায় যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে ইরান হয়তো বিশ্ববাণিজ্যের অন্যতম ব্যস্ত এই সামুদ্রিক পথ বন্ধ করার হুমকি কার্যকর করতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন একটি পদক্ষেপ সংঘাতকে ভয়াবহ রূপ দিতে পারত এবং বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহে বড় ধাক্কা দিতে পারত। বিশ্বের মোট জ্বালানি তেলের এক-পঞ্চমাংশ এই প্রণালি দিয়ে পরিবাহিত হয়। ফলে এটি বন্ধ হয়ে গেলে বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্য হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকত।

তবে এখনো তা ঘটেনি, বরং ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর তেলের দাম ১০ শতাংশের বেশি কমেছে, যা আঞ্চলিক উত্তেজনা সত্ত্বেও জ্বালানি সরবরাহে বড় ধরনের বিঘœ না ঘটার ইঙ্গিত দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ২২ জুন ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানার পর ইরানের পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালি বন্ধের পক্ষে একটি প্রস্তাব পাস করে। যদিও এই সিদ্ধান্ত বাধ্যতামূলক নয় এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের হাতে। এর আগেও ইরান বহুবার প্রণালি বন্ধের হুমকি দিলেও কখনো তা বাস্তবায়ন করেনি।

মাইনগুলো ঠিক কবে ও কোথায় লোড করা হয়েছিল এবং মোতায়েন করা হয়েছে কিনা, এ বিষয়ে রয়টার্স স্বাধীনভাবে কিছু যাচাই করতে পারেনি। এ ছাড়া মার্কিন কর্মকর্তারা জানাননি কীভাবে এই তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এ ধরনের তথ্য সাধারণত স্যাটেলাইট নজরদারি বা গোপন গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। এ বিষয়ে পেন্টাগনের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। জাতিসংঘে ইরানের মিশনও বিষয়টি নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে প্রণালি বন্ধের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ওপর ছিল।

ইরানের প্রেস টিভি সেই সময়ে এমন তথ্য জানায়। ইরান বছরের পর বছর ধরে প্রণালিটি বন্ধ করার হুমকি দিয়ে আসছে কিন্তু কখনো সেটি বন্ধ করেনি। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইল-ইরান সংঘাতের সময় তেহরান কখন মাইনগুলো লোড করেছিল তা রয়টার্স সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে পারেনি। যদি মোতায়েন করা হতো তা হলে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দিয়ে জাহাজগুলোকে চলাচল করা কার্যকরভাবে বন্ধ করে দিত। এমনকি মাইনগুলো আনলোড করা হয়েছে কি না তাও পরিষ্কার না। এদিকে ইরানি জাহাজে মাইন লোড করার বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সিদ্ধান্তে আসলো তা সূত্রগুলো প্রকাশ করেনি।

×